Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সামরিক বাহিনীর প্রভাব রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বাধা : গুতেরেস

মহাসচিবের টুইটে রোহিঙ্গা সঙ্কটের ভয়াবহ চিত্র

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

 মিয়ানমারের সর্ব-ক্ষমতাধর সামরিক বাহিনীর হাতে রাখাইনের রোহিঙ্গারা এখনও নির্যাতিত হচ্ছে। এই সামরিক বাহিনীই মিয়ানমারের শরণার্থী সঙ্কট সমাধানের সবচেয়ে বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে জাতিসংঘের সাথে মিয়ানমার সরকারের একটা চুক্তি এখনও ঝুলে আছে। এ জন্য সরাসরি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ি করেন অ্যান্টনিও গুতেরেস। “এটা স্পষ্ট যে এখনও সামরিক বাহিনীর হাতেই ক্ষমতা রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের উচিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উপর চাপ দেয়া”। “এখনও ওই এলাকায় ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে এবং বেশ কিছু বৌদ্ধ অভিবাসী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে”। এই বিষয়গুলো শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করতে বলে মন্তব্য করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, “মিয়ানমার সরকার এবং বিশেষ করে সেখানকার সেনাবাহিনীর এটা বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ যে এই মানুষগুলোর মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া এবং সেখানে বৈষম্যহীনভাবে বসবাসের অধিকার রয়েছে”। গুতেরেস স¤প্রতি রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন। ওই এলাকায় প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে, যারা মিয়ানমারের রাখাইনে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছে না। অপর এক খবরে বলা হয়, ‘শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে সহিংসতা, ধর্ষণ, নির্যাতন, বাড়ি পোড়ানোসহ ভয়ানক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা শোনার পর রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর জন্য কষ্ট না পাওয়া অসম্ভব।’ রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তিনিও গুতেরেস। সোমবার ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব টুইট বার্তায় এই কথা বলেন। গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে আশ্রয় নেয় ৬ লাখ ৯২ হাজার রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ অ্যাখ্যা দেয়। মিয়ানমার এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও রাখাইনে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ রাখে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে স¤প্রতি তারা জাতিসংঘকে সেখানে প্রবেশাধিকার দিতে বাধ্য হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলও মিয়ানমার সফর করেছে। এবার রোহিঙ্গাদের দুর্দশার চিত্র দেখতে এসেছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। কক্সবাজার সফরকালে তার সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। টুইট বার্তায় মাধ্যমে নিজের মতামত জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। রোহিঙ্গাদের অভিযোগ ও দাবির কথা তুলে ধরে তিনি লেখেন, ‘এই মাত্র আমি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছ থেকে হত্যা ও ধর্ষণের অকল্পনীয় বর্ণনা শুনলাম। তারা ন্যায়বিচার ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন চায়।’ রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ ও মিয়ানমারে তাদের ওপর নির্যাতনে ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমি যে পরিমাণ সঙ্কট ও ব্যাপক দুর্ভোগ দেখেছি, তার জন্য কোনওভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছ থেকে যেসব মর্মস্পর্শী অভিযোগ শুনেছি তা চিরদিন আমার স্মরণে থাকবে’। রয়টার্স, এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ