বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আবু হেনা মুক্তি : সুন্দরবনসহ উপকূলীয়াঞ্চলে চরম বিপর্যয়ে দেশীয় মৎস্যখাত। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মাছের প্রজনন। নদ-নদীতে বাগদা রেণু আহরণের নামে প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে কোটি কোটি মাছের পোনা। খাল বিলে আশানুরূপ হচ্ছেনা দেশীয় মাছের বংশ বিস্তার। ফলে সম্ভাবনা স্বত্তে¡ও দেশীয় মাছের অস্তিত্ব এখন সঙ্কটাপন্ন।
জানা গেছে, সাধারণত বর্ষা মৌসুমের পূর্বে এপ্রিল মাস থেকে খালে বিল নদীতে মাছ ডিম্ব নিঃস্বরণ শুরু করে। কিন্তু কারেন্ট জালের ব্যাপকতায় খাল, বিল নদীতে রেণু ধরা পড়ে। ফলে মাছের প্রজনন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জালে ধরা পড়ে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার রেণু মাছ। পরিবেশ ও মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে খুলনাঞ্চলে মৎস্য প্রজাতি বিলুপ্তির কারণ হচ্ছে, অপরিকল্পিত জলাধারে বাঁধ দেয়া, মাছের স্বাভাবিক চলাচলে বাধা, খাল, বিল, হাওড়, বাওড়গুলো ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া। এসব কারণে মাছের প্রজনন ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত সঙ্কুুচিত হয়ে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে মাছের বংশ বৃদ্ধি। তাছাড়া পানি দুষণ, জলাশয়ের গভীরতা হ্রাস, ফসলি জমিতে কীটনাশক ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়া কারণেও মাছে প্রজাতি ধ্বংস হচ্ছে। মারাত্মক পানি দুষণের কারণে আজ খুলনার ময়ূর নদী মাছের বংশ বৃদ্ধি ও জীবন ধারণের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বাগদা চিংড়ি চাষের জন্য বাঁধ দিয়ে লোনা পানির আধার নির্মাণের কারণে অনেক প্রজাতির মিঠাপানির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
সূত্রমতে, জলবায়ুর পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসচেতনতা, অবাধে লবণ পানি তুলে বাগদা চিংড়ি চাষ, ফসলের ক্ষেতে ক্ষতিকর কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের যথেচ্ছা ব্যবহার এবং মিঠাপানির অভাবে মৎস্যখনি খ্যাত খুলনাঞ্চলে ৫৫ প্রজাতির মিঠাপানির দেশীয় মাছের অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। সুস্বাদু দেশীয় মাছ এখন আর তেমন মিলছে না। শহর বন্দর গ্রামে গঞ্জে সর্বত্রই দেশীয় মাছের চরম সঙ্কট।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, পূর্বে এ অঞ্চলের গ্রামে-গঞ্জের কয়েকশ’ হাওড় বাওড়, বিল, খাল নদী থেকে এসকল মাছ সংগ্রহ করতো জেলে স¤প্রদায়। সারা বছর তারা মৎস শিকার করে নিজ পরিবারের চাহিদাপূরণসহ জীবিকা নির্বাহ করত। শুষ্ক মৌসুমে খাল বিল হাওরের পানি কমে গেলে চলত মাছ ধরার উৎসব। দেশের দূর দূরান্তের বাজার সমূহে খুলনা থেকে বিপুল পরিমান মাছ সরবরাহ করা হত। কিন্তু এখন খুলনাঞ্চলে চট্টগ্রাম কক্সবাজার থেকে মাছ এনে চাহিদা পূরণ করা হয়।
জেলে সম্প্রদায়ের অভিযোগ, বিগত দিনে সরকারের উদাসীনতা, মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবসম্মত সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণের অভাব এবং যে সকল প্রকল্প ও কর্মকান্ড হাতে নেয়া হয়েছিল তার যথাযথ বাস্তবায়ন না করায় এ সেক্টরটি “শিকেয়” উঠেছে। অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যাবশ্যকীয় সম্ভাবনাময় এ খাতটি এখন চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মৎস্য অধিদপ্তর এবং কয়েকটি এনজিও এসব বিষয়ে কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে তাও যৎ সামান্য । তাছাড়া যে সকল প্রচলিত আইন ও ধারা রয়েছে তার বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। জনসচেতনতা তৈরীতে দায়িত্বশীলরা এগিয়ে আসছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।