পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
নিত্যপণ্যের বাজারে সব পণ্যের দামই ওঠানামা করছে। তবে লাগামহীনভাবে বাড়ছে মাছের দাম। সবচেয়ে কম দামে এখন বিক্রি হচ্ছে চাপিলা মাছ। এর কেজিও দেড়শ টাকার নিচে নয়। এছাড়া খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম আবারও দেড়শ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
গতকাল রাজধানীর কাপ্তান বাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারসহ একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট সাইজের রুই মাছের কেজি ৩২০ টাকা। যা গত মাসেও বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। মাছ যত বড় হয়, তার দামও তত বাড়তে থাকে। পাবদা মাছ সর্বনিম্ন সাড়ে ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে আকার ভেদে ৬০০ টাকা কেজি। বেলে মাছ সাড়ে ৭০০ টাকা কেজি। টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। পোয়া মাছ ৬০০-৬৫০ টাকা, রূপচাঁদা ১০০০-১২০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০-১০০০ টাকা ও শিং-মাগুর ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি দরে।
আব্দুস সালাম রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। রাজধানীর কাপ্তান বাজারে তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, দুই মাসে মাছ-গোশত, ডিমের দাম কমে নাই, উল্টা বাড়ছে। আগে শুক্রবার আইলে পোলাপান নিয়া ভালোমন্দ খাইতাম, এখন শুধু সবজি-ভাত খাই। মাছ, গোশত, ডিম খাওয়া ছাইড়্যা দিছি।’ আব্দুস সালামের মতো অবস্থা অনেকেরই। কয়েক মাস আগেও যেখানে ডিমের ডজন ছিল ৯০-১০০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। অন্যদিকে সোনালি মুরগি বিক্রি হতো ২৫০-২৬০ টাকা কেজি দরে, যা দাম বেড়ে হয়েছে ৩২০-৩৪০ টাকা।
কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকায়, টমেটোর দাম ১৪০ টাকা কেজি, বড় সাইজের গোল বেগুন ১২০-১৪০ টাকা, করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, এক হালি কাঁচা কলার দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ছোট এক টুকরো মিষ্টি কুমড়োর দামও ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি, আলু ৩০ টাকা। তবে বেড়েছে ডিমের দাম। ডজন প্রতি পাইকারি ১৪৩ থেকে ১৪৫ ও খুচরা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা মোতালেব হোসেন বলেন, সব জিনিসের দাম বাড়ছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখি, সবচেয়ে কম দাম কোনটার। মাছ পছন্দের হোক বা অপছন্দের। ডিমের দামও এখন সামর্থের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন আরেক ক্রেতা। সালমান নামে একজন বলেন, আগে খরচ বাঁচাতে ডিম আর নিরামিশ খেতাম। এখন সবজি আর ডিম দুইটারই তো অনেক দাম।
উত্তর বাড্ডায় মুরগি ক্রেতা সাফওয়ান বলেন, আগে বাজারে এলে একবারে চারটি মুরগি কিনে নিয়ে যেতাম। এখন একটা কিনি। প্রতি সপ্তাহেই ভাবি, মুরগির দাম কমবে। কিন্তু কমে না। যারা আগে সোনালি মুরগির দাম বেশি ভেবে ব্রয়লার কিনত, তারা এক রকমের গোশত খাওয়াই বাদ দিয়েছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০-১৯০ টাকা। এটা তো কোনো দাম হতে পারে না।
এক বছর ধরেই বাজারে গরু-খাসির দাম ছিল আকাশচুম্বী। এবার মুরগির দাম বাড়ায় আমিষের চাহিদা মেটাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা হিমশিম খাচ্ছে। মধ্যবাড্ডা কাঁচাবাজারে গরুর গোশত বিক্রেতা জামাল উদ্দিন বলেন, এখন অনুষ্ঠান ছাড়া মানুষ খুব এক গরুর গোশত কেনে না। আগে শুক্রবার মানেই ছিল ভালোমন্দ খাওয়া-দাওয়া। দামের কারণে এই রেওয়াজ উঠে গেছে।
এদিকে বাজারে দেখা দিয়েছে চিনির সঙ্কট। সেগুনবাগিচা এলাকার অনেক দোকানে খোলা চিনি বিক্রি বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে দামের তারতম্যের কারণে তারা চিনি আনছেন না। দাম ঠিক হলে আবার চিনি আনবেন। তবে বাজারে ৯৫ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে প্যাকেটজাত চিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।