পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাকির আহমদ : আসছে বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে এবারের বিশ^কাপ ফুটবলের প্রথম রাউন্ডের লড়াই। উদ্বোধনের তৃতীয় দিন থেকেই শুরু হয়েছে অঘটন। বিশ^কাপের টিকিট পাওয়া ৩২টি দেশ সম্পর্কে ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ^কাপের পর থেকে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। মাঠের লড়াই নিয়ে কথার যুদ্ধ ও যুক্তি কোনো কিছুই গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেখা যায়নি। সব হিসাব নিকাশ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়াতে পাল্টে গেছে অনেক কিছুই।
তিন ফেভারিটের একটি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি মাথা নুইয়ে ফেলবে ম্যাক্সিকো ম্যাজিকে তা জার্মান সমর্থকরা বিশ^াসই করেননি। কিন্তু জার্মানি হোঁচট খাওয়ার আগের দিন আরেক ফেভারিট আর্জেন্টিনা বিশ^কাপে নবাগত আইসল্যান্ডকে টপকাতে ব্যর্থ হয়। আর বিশ^কাপ শুরুর চতুর্থ দিনে আর্জেন্টিনার পথে হেঁটেছে ব্রাজিলও।
এসব কথা পুরনো। তারপরও পিছনে ফিরে তাকাতেই হচ্ছে। বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমিকরা দুই শিবিরে বিভক্ত। বিশ^কাপ ফুটবল মানেই আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। বহুতল ভবন থেকে শুরু করে পথঘাট, হাট-বাজার ও বাড়ির ছাদে উড়ছে আর্জেন্টিনা না হয় ব্রাজিলের পতাকা। কেউ কেউ নিজের সমর্থন ও ভালোবাসা প্রকাশ করতে বাড়ির দেয়াল প্রিয় দলের রঙে রাঙ্গিয়ে দিয়েছেন। আবার কয়েক কিলোমিটার লম্বা পতাকা বানিয়ে দল বেঁধে রাস্তায় শোভাযাত্রাও বের করেছেন।
এতো গভীর ভালোবাসা ও সমর্থন যে দু’টি দেশের ফুটবলের জন্য তারা কিন্তু সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। রীতিমত চোখের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে সমর্থক ও ভক্তদের। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে রাশিয়ার নিজনি নভগোরোদ স্টেডিয়ামে নেমেছিল অন্যতম ফেভারিট লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষ ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়া। আর্জেন্টিনার শুভ কামনায় টেলিভিশনের পর্দার সামনে বসে থাকা সমর্থকরা রেফারি শেষ বাঁশির শব্দ শুনে আর ঘুমাতে পারেননি।
আর্জেন্টিনা বিধ্বস্ত হয়েছে বললে ভুল হবে। ক্রোয়েশিয়া সব হিসাব নিকাশকে তুড়ি মেরে একেবারে খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছে মেসির আর্জেন্টিনাকে। গতকাল শুক্রবার পূর্বাকাশে সূর্য উঁকি দেয়ার পর আকাশের রঙ বদলে গেছে। রাগ-অভিমান-দুঃখ-কষ্ট চেপে রাখতে না পেরে অনেক ভক্ত-সমর্থক নামিয়ে ফেলেছেন অতি প্রিয় দল আর্জেন্টিনার পতাকা। বাতাস থেমে যায়নি। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাতাসের সঙ্গে দোল খাওয়া সেই পতাকাটি থেমে গেছে।
আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়ার খেলা শেষ হওয়ার পর টেলিভিশনের পর্দায় শুরু হয় বিশ্লেষণ। আর গতকাল সকাল থেকেই বিষয়টি ছিল টক অব দ্য কান্ট্রি। আর্জেন্টিনা খাদের কিনারে চলে যাওয়ায় আলোচনায় চলে আসে অপর দুই ফেভারিট জার্মানি ও ব্রাজিল। বিবিসির সাবেক স্পোর্টস রিপোর্টার ও বর্তমানে ধারা ভাষ্যকার মিহির বোসের কথায় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল হলো দুই তারকা নির্ভর। লিওনেল মেসি ও নেইমার ছাড়া যেন কোনো গতি নেই। মেসি নির্ভর হওয়াতে পরিণতি যা হওয়ার তাই হয়েছে। ব্রাজিলও অনেকটা নেইমার নির্ভর। এমন নির্ভরতা মাঠে ইতিবাচক ফল দেবে সে বিশ^াস খুব একটা বাস্তব হয় না। আর সেটি দেখা গেছে আইসল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আর্জেন্টিার খেলায়।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় ব্রাজিল ও কোস্টারিকার মধ্যে গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। তাই ব্রাজিলের দ্বিতীয় ম্যাচ নিয়ে কোনো কিছু বলা ঠিক হবে না। তারপরও গতকাল সর্বত্র আর্জেন্টিনা নিয়ে আলোচনায় স্থান পেয়েছে ব্রাজিল। মিহির বোসের বিশ্লেষণ একেবারেই উড়িয়ে দেয়ার নয়। ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্স শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মেসিকে কড়া পাহারায় রাখার ব্যাপারে শতভাগ সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে।
প্রথমার্ধের ৪৫ মিনিটের পর বিরতির সময় আর্জেন্টিনার কোচ এই একটি বিষয়কে কি কারনে গুরুত্ব দেননি সেটি তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত মাঠে ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্স মেসিকে এক সেকেন্ডের জন্য ছাড় দেয়নি। মাঠে যখন এমন অবস্থা তখন আর্জেন্টিনার কোচ তার কোট খুলে টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় উদভ্রান্তের মতো ছিলেন। তিনি খেলোয়াড় পরিবর্তন করলেও মাঠে লড়াইয়ের কৌশল নিয়ে নিজের মুন্সিয়ানা দেখাতে ব্যর্থ হন।
আর্জেন্টিনার লেফট ও রাইট উইং নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে সামনে আগাতে চাইলেও ক্রোয়েশিয়ার শক্ত ডিফেন্স ভেদ করতে পারেনি। অপরদিকে ক্রোয়েশিয়া লেফট ও রাইট উইং দিয়ে বার বার আক্রমণ শানিয়েছে। দুই উইংকে আর্জেন্টিনার ডিফেন্স চেক দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা মিড ফিল্ড দিয়েও আক্রমণ করেছে।
ক্রোয়েশিয়া তাদের আক্রমণ থেকে তিনবার আর্জেন্টিনার ডিফেন্সকে নাস্তানাবুদ করে জাল স্পর্শ করেছে। তারা যেভাবে খেলেছে তাতে গোলের সংখ্যা হালি ছাড়িয়ে যেতে পারতো। আর্জেন্টিনার শেষ ম্যাচ আগামী মঙ্গলবার সুপার ঈগল নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচ কি শুধুই নিয়ম রক্ষার? সে পর্যন্ত থাকতে হচ্ছে অপেক্ষায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।