পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719792872](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ঈদের পূর্বমুহূর্তে আকস্মিক টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে সিলেট, খাগড়াছড়ি কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ১৭০ সেন্টিমিটার, মৌলভীবাজারের মনুর পানি বিপদসীমার ১৭৫ সেন্টিমিটার, ধলাই ৫২ সেন্টিমিটার, ফেনীতে মুহুরী নদী বিপদসীমার ৩০০ সেন্টিমিটার, ও মাইনী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এসব জেলায় অনেক স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়ে আগ্রাসী রূপ নিচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে বিভিন্ন উপজেলা। তবে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত হলেও রামগড় ও দীঘিনালা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। হুমকির সম্মুখীন বিভিন্ন শহর রক্ষা বাঁধ।
বন্যার কারণে জেলাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের মহাদুর্ভোগে পড়তে হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ মনু সেতুর উত্তর অংশের পাইলিং ভেঙে পড়েছে। খাগড়াছড়ির রামগড়ে তলিয়ে গেছে অস্থায়ী ব্রিজটি। দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের আশঙ্কা। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট হয়ে গেছে। ভেসে গেছে কয়েকশ’ পুকুরের মাছ। গবাদি পশুর মৃত্যুসহ নষ্ট হয়েছে অনেক ফসলজমি ও বাড়িঘর। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে প্লাবিত এলাকার মানুষ। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে রমজান মাসে ভোগান্তির সীমা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ঠেকেছে।
ফেনী জেলা সংবাদদাতা জানান, ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী,কহুয়া,সিলোনীয়া ও অভয়া নদীর ৮ স্থানে ভাঙ্গনের ফলে অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ী ঢলে মুহুরী, কহুয়া, সিলোনীয়া ও অভয়া নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। গতকাল সকালে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে প্রবলবেগে পানি প্রবেশের ফলে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে ফুলগাজী উপজেলার প্রায় ১২ গ্রামের মানুষ। বন্যার পানিতে ফেনী পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ফুলগাজী,পরশুরাম ও বিলোনীয়া স্থলবন্দরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে সিলোনীয়া,কহুয়া ও অভয়া নদীর ভাঙ্গনে পরশুরামের প্রায় ৮ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে। পরশুরামের, বাগমারা. খন্ডলহাই, টেটেশ্বর, মনিপুর, মির্জানগর, মধুগ্রাম, পুর্ব সাহেবনগর প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, জানমালের ক্ষয়ক্ষতিসহ যেকোনও ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে এসব জেলায় প্রশাসনকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম থেকে এই জেলাগুলোসহ দেশের সব জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুম ইন চার্জ (উপ-সচিব) আব্দুল কাদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জ শহর ঘেঁষে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ১৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নদীর পানি বাড়তে থাকে। ফলে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে হবিগঞ্জ শহরসহ আশপাশের গ্রামগুলো। এদিকে খোয়াই নদীর পানি বাড়তে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। শহরের অনেক লোকজন খোয়াই নদীর বাঁধের ওপর রয়েছে। কোনও স্থানে যাতে ফাটল সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর রাখছে স্থানীয়রা।
মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মনু নদী এবং কমলগঞ্জের ধলাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর দুই স্থানে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করছে লোকালয় ও ফসলি জমিতে। কমলগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের ৯টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বুধবার (গতকাল ) মনু নদীর পানি ৯৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৭৫ সেন্টিমিটার এবং ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ মনু সেতুর উত্তর দিকের গাছের পাইলিংও ভেঙে যাচ্ছে।’ সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ধলাইনদীর কমলগঞ্জ উপজেলার ল²ীপুর, সানন্দপুর, কেওয়ালীঘাট, ঘোড়ামারা এবং বাদেওবাহাটা নামক ৫টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৩টি ইউনিয়ন। অপরদিকে কমলগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের ৯টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
রামগড় (খাগড়াছড়ি) উপজেলা সংবাদদাতা জানান,: প্রবল বর্ষণে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে, রামগড় ও দীঘিনালা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। খরস্রোতা ফেনী ও মাইনী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে খাগড়াছড়ি শহরের দুই-তৃতীয়াংশ, রামগড় ও মহালছড়ির বিস্তৃত অঞ্চল এবং দীঘিনালার মেরুং বাজার পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে ফেনী নদীর পানি এখন বিপদ সীমার উপর অতিবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে নবর্নিমাধীন বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সেতু ১ এর মালামাল আনানেয়ার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে তৈরি ব্রিজটি।
লামা (বান্দরবান) উপজেলার সংবাদদাতা জানান, তিন দিনের টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় বান্দরবানের লামা উপজেলার ১টি পৌরসভা, ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ জায়গা পানির নিচে। প্রমত্তা মাতামুহুরী নদী, ফাঁসিয়াখালী খাল, লামাখাল, বমুখাল, ইয়াংছা খাল, বগাইছড়ি খাল ও পোপা খালসহ বিভিন্ন স্থানের পাহাড়ি ঝিরিগুলোতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। অনবরত বৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় ও পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পেতে লামা উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদেরকে নিরাপদে আশ্রয় যাওয়ার জন্য দফায় দফায় তাগিদ দিয়ে মাইকিং করা হয়েছে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।