পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : প্রতিবছরই ঈদ করতে গ্রামে যান জাতীয়তাবাদী মৎসজীবী দলের কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুর রহমান তুষার। কিন্তু এবারের ঈদ নিয়ে তার যেন কোন আগ্রহই নেই। ঈদ করতে বাড়ি যাবেন না? জিজ্ঞেস করতেই উত্তর- আমাদের কিসের ঈদ? আমার মা (খালেদা জিয়া) কারাগারে আর আমরা ঈদের আনন্দ করবো! কারো মা কারাবন্দি থাকলে সন্তানরা কি ঈদ উদযাপন করতে পারে? গত ৮ ফেব্রæয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকেই তুষার অবস্থান করছেন নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। একই রকম উত্তর পাওয়া গেল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের কাছে। ঈদের প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি বলেন, এবার ঈদে আমাদের কোন আনন্দ নেই। আমাদের নেত্রী, আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করার পর থেকেই সব আনন্দ ¤øান হয়ে গেছে। মাকে ছাড়া ঈদ করা খুব কষ্টের বিষয়। এবার সকলে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ঈদ উৎসব পালন করবে। তুষার ও বাশারের মতো অধিকাংশ বিএনপি নেতাকর্মীই দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী থাকায় ঈদ উৎসবে আগ্রহ হারিয়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই যাচ্ছেন না গ্রামের বাড়িতে। নিজ নিজ এলাকায় নির্যাতিত, জেল-জুলুম, গুম-খুনের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় ঈদ উপহার পাঠিয়ে এবং নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখছেন ঈদের আনন্দ। ঈদের দিনও নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়েই থাকবেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। থাকছেনা প্রতিবছরের ঈদের আয়োজন পেশাজীবী-কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজনও।
এবারের ঈদ আনন্দ ও উৎফুল্লতা ¤øান দেখা গেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে। দলটির চেয়াপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দি, কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় দিনাতিপাতের কারণেই এই অনাগ্রহ বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়াও ঈদে প্রয়োজনে যেসব আয়োজন এটুকুতেই সকলে সীমাবদ্ধ থাকছেন বলেও জানান একাধিক নেতা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এবার ঈদ আমাদের জন্য কোন উৎসবের নয়। আমাদের নেত্রী জেলখানায় বন্দি, তিনি অসুস্থ কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে না। এই অবস্থায় আমরা কিভাবে আনন্দ করবো, কিভাবে উৎসব পালন করবো। তিনি বলেন, ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্যে যেটুকু প্রয়োজন সেটি ছাড়া বাড়তি কোন আয়োজন, উৎফুল্লতা এবার থাকছে না।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে প্রতিবছরই ঈদের দিনে বিএনপি চেয়ারপারসন পেশাজীবী-কূটনীতিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। তবে এবার তিনি কারাগারে বন্দি থাকায় ওই অনুষ্ঠানটি হচ্ছে না। এছাড়া ঈদের দিনে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা কারাগারে তার সাথে স্বাক্ষাত করতে যাবেন। সুযোগ থাকায় ওইদিন তার স্বজনরা বাসা থেকে রান্না করা খাবারও নিয়ে যাবেন। আর নেতাকর্মীরা ঈদের নামাজ পড়ার পর থেকেই কারাগারের সামনে ভিড় করবেন বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, ঈদের দিনে স্বজনরা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কারাগারে স্বাক্ষাত করতে যাবেন। আমাদের নেত্রী যেহেতু কারাগারে তাই এটি নিয়ে আমাদের মধ্যে কোন উৎসব বা আবেগ কাজ করছে না। তিনি নিজেই নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদ করবেন বলে জানান।
ঈদে শুভেচ্ছা বিনিময়ের কোন আয়োজন থাকছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পেশাজীবী-কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রতিবছর ঈদের দিনে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন। কিন্তু এবারও তো খালেদা জিয়াকেই একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। এমনকি জামিন নিয়েও সরকার নানা ষড়যন্ত্র করছে, কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। তিনি যেহেতু কারাগারে রয়েছেন তাহলে কার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় হবে? প্রশ্ন রাখেন দলের মহাসচিব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।