চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
শেষ
তাই আল্লাহর দরবারে নিজের গুনাহ মাফের জন্যে বেশী বেশী তাওবাহ করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবাহ কর, খাটি তাওবাহ, আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত (সূরা আততাহরিম- ৮)। রাসূল সা. বলেছেন, “হে মানবসকল! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর, আর আমি দিনে তাঁর নিকট একশত বারেরও বেশী তাওবাহ করে থাকি।” (সহীহ মুসলিম) যার কোন গুনাহই নাই তিনি দিনে একশত বারেরও বেশী তাওবাহ করতেন, তাহলে আমরা কি আল্লাহর দরবারে বেশী বেশী তাওবাহ করতে পারিনা? গুনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার অন্যতম আমল হলো তাওবাহ করা। কেননা হাদীসে এসেছে তাওবাহকারী গুনাহ থেকে এমনভাবে ফিরে আসে যে, তাওবাহ করার পর আর কোন গুনাহই তার থাকে না (সুনান ইবনে মাজাহ) ।
বেশী বেশী দান সদাকাহ করা: তাওবাহ যেমন মানুষকে গুনাহ থেকে মুক্ত করে ঠিক তেমনি দান সদাকাও মানুষকে গুনাহ থেকে মুক্ত করে থাকে। যেমন হাদীসে এসেছে সদাকাহ গুনাহগুলোকে এমনভাবে মিটিয়ে দেয় যেমনিভাবে পানি আগুনকে মিটিয়ে দেয় (সহীহ আত-তারগীব ওয়াততাহযীব)। রমাযান মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো বেশী বেশী দান সদাকাহ করা। ইয়াতীম, গরীব, মিসকীন ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ও বেশী বেশী দান খয়রাত করা। হিসাব করে এ মাসে যাকাত দেয়া উত্তম। কেননা নবী কারীম সা. এ মাসে বেশী বেশী দান খয়রাত করতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সা. ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশী দানশীল, আর রমাদানে তাঁর এ দানশীলতা আরো বেড়ে যেত (সহীহ বুখারী)।
বেশী বেশী যিকির করা: রমাদান মাসে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের আরো একটি মাধ্যম হলো বেশী বেশী যিকির করা, আল্লাহকে ডাকা, আল্লাহকে স্মরণ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদেরকে স্মরণ করবো।’ (সূরা বাকারা ১৫২) আবু ওসমান মাহদী বলেছেন, আল্লাহ আমাদেরকে কখন স্মরণ করেন তা আমি জানি। তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, আপনি তা কেমন করে জানেন? তিনি উত্তরে বলেন, কুরআনে আল্লাহর উপরোক্ত ওয়াদা অনুযায়ী জানি যে, যখন আমরা তাকে স্মরণ করবো তখন তিনিও আমাদেরকে স্মরণ করবেন (মা’আরেফুল কুরআন)। আল্লাহ তায়ালা আরো বলেছেন, তোমরা আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করো, সম্ভবতঃ তোমরা সাফল্য লাভ করবে (সূরা জুম‘আ ১০)। রাসূল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকির করে এবং যে ব্যক্তি যিকির করে না, তার উদাহরণ হচ্ছে, জীবিত ও মৃত ব্যক্তির মতো’ (সহীহ বুখারী)। আমরা এই মাসে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে বেশী বেশী তার যিকির করতে পারি। সোবহানাল্লাহর যিকির, আলহামদুলিল্লাহর যিকির, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর যিকির। জাবের রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন - সর্বোত্তম যিকির হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (ইবনে মাজাহ, নাসাঈ)। রহমত, বরকত, মাগফেরাতের মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে ফরয ইবাদতের পাশাপাশি বেশী বেশী নফল ইবাদত বন্দেগী করে তার সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত বান্দাদের মধ্যে আমাদেরকে কবুল করে নিন। আমীন।
লেখকঃ
সভাপতি- বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসির পরিষদ, টাঙ্গাইল জেলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।