Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোজায় কোষ্ঠকাঠিন্য

| প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রমজান মাসে আমাদের মধ্যে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় কষ্ট পান। এই সময় মূলত অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, গোশতজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া হয়। রোজার সময় পানি কম খাওয়া কিংবা আঁশজাতীয় খাবার কম খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। অথচ সামান্য কিছু বিষয় মেনে চললেই রোজার সময় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
রমজানে অন্যতম প্রধান একটি সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। সারা দিন পানিসহ তরলজাতীয় খাবার না খাওয়ায় প্রায় সব রোজাদারেরই কম বেশী কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। এর ফলে দেখা দেয় পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ। বিশেষ করে পাইলস ও এনাল ফিসার রোগ দুটিতে রোজাদাররা বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার কারণে অনেকেই চাপ দিয়ে মলত্যাগ করেন। এই কারণে মলত্যাগের সময় মলদ্বারের রক্তনালি ফুলে গিয়ে ছিঁড়ে যায়। এতে অনেক রক্তপাত হতে পারে। শক্ত মলের কারণে মলদ্বারও ছিঁড়ে যেতে পারে। ফলে অল্প রক্তপাত ও তীব্র ব্যথা শুরু হয়। ব্যথার জন্য রোগী কোনো কাজ ঠিকমত আর করতে পারেন না। মলত্যাগের সময় রক্তপাত হলে রোজা ভেঙে যায়। তীব্র ব্যথার কারণে আবার অনেক সময় রোগীকে রোজা ভেঙে ফেলতে হয়। রোগী চিন্তিত হয়ে পড়েন । এরপর রোজা আর রাখতে পারবেন কিনা এই ধরণের নানা চিন্তা মাথায় আসে। ফলে অনেকেই রমজানে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে যান।
রোজার সময় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বেঁচে থাকতে প্রচুর পানি পান করুন। ইফতারিতে প্রচুর পানি খেতে হবে। ইফতারিতে ফলের জুস পান করলে উপকার হবে। তবে বাজারের প্যাকেটজাত জুস থেকে অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে। এগুলো বেশীরভাগ ক্ষেত্রে উপকারের চেয়ে অপকারই করে বেশি। ফলের জুস ছাড়া তাজা ফল খেলে উপকার বেশী হবে। আঁশযুক্ত খাবার রোজার সময় বেশী করে খেতে হবে। আটা, ছোলা, শাকসবজি, ফলে আঁশ বেশী থাকে ।এসব বেশি করে খেতে হবে। কিছু খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ায় । এসবের মধ্যে আছে চিনি, মিষ্টি , কেক, পেস্ট্রি, এবং চকলেট । এসব খাবার রোজার মাসে কম খেতে হবে। রোজার সময় খেজুর খেতে সবাই পছন্দ করেন। খেজুরে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। রোজা আসলেই ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এসব খাবার মুখরোচক হলেও নানা সমস্যা করে। ভাজা পোড়া যথাসম্ভব কম খেতে হবে। সারা বছর তো বটেই বিশেষ করে রোজার সময় নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস করতে হবে। তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা কমে যাবে। কোষ্ঠকাঠিন্য এর পরেও দূর না হলে পায়খানা নরম করার ওষুধ ল্যাকটুলোজ খাওয়া যেতে পারে। তবে যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্যকে অবহেলা করা যাবেনা। সাধারণত যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন তাদের পরবর্তীতে পাইলস সহ মলদ্বারের নানারকম সমস্যা হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে কোষ্ঠকাঠিন্যতার ভয়ে রোজা ছেড়ে দেওয়া যাবে না। তাই যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হলো সেসব বিষয় মেনে চলতে হবে। তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি আরামদায়ক ভাবে আমরা প্রতিটি রোজা পালন করতে পারব।

-ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোজা


আরও
আরও পড়ুন