মুসলিম উদ্বাস্তু (রোহিঙ্গা) স্বেচ্ছায় মিয়ানমারের রাখাইনে ফিরে গেছেন বলে দাবি করছে সেদেশের সরকার। একই সঙ্গে তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা দেয়ার কথা বলেছে তারা। অনলাইন মিয়ানমার টাইমস এ খবর দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির অধীনে এসব উদ্বাস্তুর পরিচয় যাচাই করা হবে। রোববার এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচির অফিস থেকে। এতে বলা হয়েছে, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে গত বছর সহিংসতার সময় পালিয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়া এসব মুসলিম তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ফিরে গেছেন মিয়ানমারে।
তারা নভেম্বরে দু’দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির বিষয়ে অবহিত নয়। এতে আরো বলা হয়, মিয়ানমারে পৌঁছামাত্রই এসব উদ্বাস্তুকে গ্রেপ্তার করে জেল দেয়া হয় আইন অনুসারে। কিন্তু যথাযথ যাচাই করা যায় যাতে সেজন্য তার পরপরই তাদেরকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, ফেরত আসা ব্যক্তিদের যথাযথভাবে প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে। যাচাই করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নিয়েই গ্রহণ করতে হবে। সে অনুযায়ী ৫৮ জনকে সাধারণ ক্ষমা করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তবে ৬২ জনকেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ৫৮ জন সাধারণ ক্ষমা পেলেও আদালত থেকে অন্য চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর উদ্বাস্তুদের পাঠানো হবে হ্লা ফোয়ে খাউং অন্তর্বর্তী শিবিরে। সেখানে তাদেরকে রাখা হবে অস্থায়ীভিত্তিতে। উল্লেখ্য, রাখাইন থেকে উদ্বাস্তু মানুষদের বিষয়ে ২০১৭ সালের ২৩ শে নভেম্বর ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপ্লেসড পারসনস ফ্রম রাখাইন স্টেট’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে। এতে একটি ধারায় বলা হয়েছে, যদি ফেরত যাওয়া কোনো উদ্বাস্তুকে সন্ত্রাসে জড়িত থাকার প্রমাণ না যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না। গত ২৫ শে আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে গাদাগাদি করে বসবাস করছেন তারা। তাদের অবস্থা সঙীন। এই বর্ষা মৌসুমে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে বলে বলা হচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে।