মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ারমারের রাখাইনে এখনও চলছে নির্যাতন। একটু ভালো থাকার আসায় সেখান থেকে পালাচ্ছে মানুষ। এমনই ৭৯ জন রোহিঙ্গা নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে একটি নৌকায় করে গন্তব্যহীন পথে যাত্রা শুরু করে। একপর্যায়ে তারা পৌঁছায় থাইল্যান্ডের কাছে। কিন্তু সেখানকার নৌবাহিনী তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায় এবং অন্যত্র রওনা যাওয়ার কথা বলে, এতে অনিশ্চয়তা আরও বাড়ে। পরে তারা সিদ্ধান্ত নেয় মালয়েশিয়া যাওয়ার। কিন্তু তার আগেই তারা পৌঁছে যায় ইন্দোনেশিয়ার আচেহপ্রদেশে এবং সেখানেই খুঁজে পায় তাদের পরম সুখের স্থান। আচেহপ্রদেশে চলে শরিয়া শাসন। যদিও মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু স¤প্রদায় রোহিঙ্গাকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বন্ধুহীন একটি স¤প্রদায়। তবে বিশ্বে এটিই একমাত্র এলাকা, যেখানে রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানানো হয়। যেখানে রোহিঙ্গাদের নিজেদের ভাইবোনের মতোই মনে করা হয়। রোহিঙ্গারা যখন এই এলাকায় নামে, তখন তাদের বুক দুরুদুরু করছিল। কারণ তারা জানত না, তাদের সাথে কেমন ব্যবহার করা হবে। কিন্তু নামার পরে যখন স্থানীয়দের সাথে তাদের সাক্ষাৎ হয় তখন তাদের সব ভয় উবে যায়। স্থানীয়দের আচরণে তারা মুগ্ধ হয়। এখানে খাবার, ওষুধ, আশ্রয় সব কিছুই পায়। আইওএম এবং স্থানীয় কিছু সমাজকল্যাণ এজেন্সির আওতায় তাদের আপাতত থাকতে দেয়া হয় একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে। রমজানের পরই তাদের ল্যাঙচা শহরে আরেকটু ভালো ও স্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। সরেজমিন দেখা গেছে, রমজান মাসে ইফতারের জন্য রান্না করা হচ্ছিল ভাত, মাছ, নুডুলস, শসার সালাদ, নারিকেলের দুধে গরুর গোশতের তরকারি, বেগুন ভাজা ইত্যাদি। এগুলো সবই এসেছে অনুদান থেকে। মাগরিবের আজান হতেই পুরুষরা একদিকে এবং নারী ও শিশুরা আরেক দিকে ইফতারি করতে শুরু করে। খেজুর, স্থানীয় মিষ্টান্ন ইত্যাদি দিয়ে ইফতার শুরু করা হয়। ইফতার শেষে পুরুষরা মসজিদে সবাই একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে ছুটে যায়, অন্যদিকে নারীরা তাদের ডরমেটরিতে নামাজ আদায় করে নেয়। সব কিছুর পরও তাদের কারও কারও মনে হাহাকার রয়েই যায়। বিশেষ করে যাদের পরিবার-পরিজন অন্য কোথায় আশ্রয় নিয়েছে, তারা কীভাবে রয়েছে, ভবিষ্যৎ কী- এসব তাদের মনে মাঝেমধ্যেই চিন্তার ঢেউ তোলে। তবে রোহিঙ্গারা এখানে এসে তাদের দুঃখের অনেকটাই ভুলে গেছে। তারা এ জন্য অন্তর থেকে আচেহবাসীদের ধন্যবাদ জানাতে চায়। বর্তমানে আচেহর বিরেউয়েন নামক স্থানে রোহিঙ্গাদের রাখা হয়েছে। সেখানে ঘিয়ে ও গাঢ় সবুজ রঙের ভবন রয়েছে। সেখানে পুরুষ ও নারীদের পৃথক ডরমেটরি রয়েছে। রয়েছে একটি মসজিদও, যেখানে সবাই মিলে নামাজ আদায় করেন। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রাখতে সেখানে রয়েছে একটি সমৃদ্ধ ক্লিনিকও। সেখানকার তরুণ-যুবক আচেহ স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের দায়িত্ব পালনে বেশ তৎপর। কারণ তারা মনে করে, রোহিঙ্গারা আমাদের ভাই, আমাদের মুসলিম ভাই। আর আমি বা আমরা যা করছি তা আমাদের দায়িত্ব। ইউএনএইচসিআরের পক্ষ থেকে যখন এ ক্যাম্প পরিদর্শন করা হয়, তখন তারা বলেন, রোহিঙ্গারা এখানে খুবই ভালো আছেন। রোহিঙ্গারা যখন এ ব্যাপারে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে যায়, তখন কৃতজ্ঞতায় তারা কেঁদে ফেলে। আচেহনিজরা খুবই ধার্মিক, অমায়িক ও সহায়ক। আচেহর ওই ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা জুলফিকার আনন্দের সঙ্গেই বলেন, আচেহর সামুদ্রিক আইন হিসেবে, আমরা কোনো আগমনকারীকে ধর্ম-বর্ণ বা কোনো কিছুই জিজ্ঞাসা করি না। কারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জীবন বাঁচানো, তার জাতীয়তা নয়। দ্য গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।