Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ব্যয় বাড়ছে ৩২৩২ কোটি টাকা

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা ৪ লেন মহাসড়ক : বিশ্বের সবচে’ ব্যয়বহুল হলেও প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল ভুল

| প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চারলেন মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৫৫ কিলোমিটার। এই মহাসড়কের নির্মাণ প্রস্তাবটি সংশোধন করা হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৬ হাজার ৮৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় দাঁড়ায় ১২৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হিসেবে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মহাসড়ক। প্রকল্পটির প্রাথমিক পরিকল্পনায় ভুল থাকায় এখন নতুন করে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১০ হাজার ৮৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যয় বাড়ছে তিন হাজার ২৩২ কোটি ৩২ লাখ টাকা বা ৪৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ১৮৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যয়বহুল মহাসড়কটি আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পটির প্রাথমিক পরিকল্পনায় ভুল ছিল। এ প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) করা হয়নি। পরিবেশগত পর্যবেক্ষণ পরিকল্পনা (ইএমপি) নেই। ভূগর্ভস্থ পরিষেবা সংযোগ লাইন স্থানান্তরে নেই কোনো মাস্টারপ্ল্যান। এসব কারণে নির্মাণ শুরুর দুই বছরের মাথায় দ্বিতীয় দফায় প্রায় ৫৪ শতাংশ ব্যয় বাড়ছে। এর আগে ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় কম ধরার যুক্তিতে প্রথম দফায় প্রায় ১০ শতাংশ ব্যয় বাড়ানো হয়েছিল প্রকল্পটির।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুরুতে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদনের ৬ মাসের মধ্যেই এ ব্যয় বাড়ানো হয় আরও ৬০০ কোটি টাকা। দুই বছর না যেতেই প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ভুল ধরা পড়ে। এই ভুলের কারনে এখন ব্যয় বেড়ে হচ্ছে ১০ হাজার ৫৪২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ নতুন করে ব্যয় বাড়ছে ৩ হাজার ৬৯০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বা ৫৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবটি এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এতে প্রকল্পটি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি এর প্রথম খসড়া নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এরপর প্রতিবেদনটির বিষয়ে মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে।
পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পের জন্য অতি প্রয়োজনীয় হলেও ইআইএ করা হয়নি ও ইএমপিও নেই। ভূগর্ভস্থ পরিষেবা সংযোগ লাইন স্থানান্তরে কোনো মাস্টারপ্ল্যান না থাকায় কাজে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। এজন্য প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়ছে, এতে করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করতে হচ্ছে। এছাড়া প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমি ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করেছে, যা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ডিপিপি সংশোধনের প্রস্তাবে নতুন কিছু কাজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজউকের নির্মিতব্য শান্তিনগর-ঝিলমিল ফ্লাইওভারের সঙ্গে সংগতি রেখে ২ হাজার ৩৩৩ মিটার তেঘরিয়া-বাবুবাজার ফ্লাইওভার নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। ভাঙ্গা-ফরিদপুর অংশে নির্মিতব্য ইন্টারচেঞ্জ ক্লোভার লিফের র‌্যাম্পের অ্যালাইনমেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করে কুমার ব্রিজ ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। টোল প্লাজার ডিজাইন পরিবর্তনসহ এর সঙ্গে রেস্তোরাঁ, অফিস ও বাসস্থান, পাম্প হাউজ, নির্বাপণ কেন্দ্র, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, পানির ট্যাংক, পুলিশ চেকপোস্ট অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ খাতে ব্যয় বেড়ে গেছে।
এ ছাড়া রেলওয়ে ওভারপাসের উচ্চতা বাড়ানোয় এর দৈর্ঘ্য দুই দশমিক ৮০ কিলোমিটার থেকে চার দশমিক ৪৪৪ কিলোমিটার হয়ে গেছে। মাটির গুণাগুণ খারাপ হওয়ায় ও সড়কের উভয় পাশে অনেক পুকুর, জলাশয় ও নিচু ভূমি থাকায় এবং অতিবৃষ্টিতে বন্যায় সড়কের নতুন এমব্যাংকমেন্ট রক্ষার জন্য সড়কের উভয় পাশে প্রচুর পরিমাণে রক্ষাপদ কাজের পরিকল্পনা নিতে হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান কয়েকটি সেতু ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করতে হচ্ছে। এতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ডাইভারশন রোড নির্মাণ করতে হচ্ছে, যা আগের ডিপিপিতে ছিল না। প্রকল্পের কাজ দ্রæত করতে অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার ইউটিলিটিগুলো পুনঃস্থাপন ব্যয়ও ডিপিপি অন্তর্ভুক্ত করতে হয়েছে।



 

Show all comments
  • ash ২৪ মে, ২০১৮, ৫:৩৯ এএম says : 0
    CHORRRR KOTO POROKAR O KI KI WDHAHORON SHOHOKARE BUJAI A DICHE BAL
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহাসড়ক

২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
২১ ডিসেম্বর, ২০২২
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ