Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপরিসীম রহমত, ফজিলত এবং বরকতের মাস রমজান

আফতাব চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বছরান্তে আবারও মানবতার সুমহান আদর্শ নিয়ে বিশ্ব মুসলিমদের দরবারে হাজির পবিত্র রমজান। শান্তি, স¤প্রীতি, ত্যাগ তিতিক্ষা এবং সংযমের বার্তা নিয়ে প্রতিবছর বিশ্ববাসীর কাছে হাজির হয় কোরআন বিঘোষিত শ্রেষ্ঠ মাস পবিত্র রমজান। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সময়ের পর¤পরাগত নিয়মে এবারও মহিমাময় মাহে রমজান এসেছে তার চিরাচরিত আদর্শের ডালি নিয়ে। অসীম রহমত, ফজিলত এবং বরকতে পরিপূর্ণ এ মাস হিজরি বারো মাসের মধ্যে সর্বোত্তম হওয়ার কারণ স^য়ং সৃষ্টিকর্তা এ মাসকে নিজের মাস হিসেবে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রতিপালকের পছন্দের এ মাসের গুরুত্ব এবং মর্যাদা অপরিসীম হওয়াটা স^াভাবিক। মর্যাদা এবং মাহাত্ম্যের দিক দিয়ে আল্লাহ পবিত্র রমজানকে অভিষিক্ত করেছেন শ্রেষ্ঠত্বের শীর্ষাসনে। পবিত্র কোরআনের নির্দেশানুসারে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পুরোমাস রোজা পালন করেন। পরম করুণাময়ের নৈকট্য সাধনের জন্য বিশ্বমুসলিমদের মাসব্যাপী এ কৃচ্ছ্রসাধন। প্রতিপালকের সন্তুষ্টি বিধানের লক্ষ্যে টানা একমাস কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে রোজা পালন করতে হয় বলে রমজানকে রোজারমাসও বলা হয়ে থাকে। আরবি চান্দ্রমাসের মধ্যে রমজানকে সর্বোত্তম মাস করার পাশাপাশি আল্লাহতালা মানব জাতিকে আত্মশুদ্ধি এবং আত্মোৎসর্গ করার সুযোগ করে দিয়েছেন এ মাসে। এ সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগাতে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মানুষ অধীর আগ্রহে সারা বছর অপেক্ষায় থাকে পবিত্র রমজানের শুভাগমনের। কারণ সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের যথোপযুক্ত সময় হচ্ছে রমজান মাস। এ মাসের মাহাত্ম্য এতই অধিক যে, এক মুহ‚র্ত সময় অযথা অপব্যয় না করতে হয়রত মোহা¤মদ (দ.) নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, সমগ্র মাস তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের এবাদতে রত হও। কেননা পারলৌকিক শান্তির জন্য রমজানের এবাদত অত্যন্ত জরুরি। পার্থিব জীবন পরকালের শস্যক্ষেত্র। আর রমজান হচ্ছে সে শস্য রোপণের উপযুক্ত মরশুম। তাই পশ্চিমাকাশে রমজানের চাঁদ ভেসে উঠতেই সূচনা হয়ে যায় মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার। মাসের প্রথমদিন থেকে শেষদিন পর্যন্ত রোজা পালন করেন রোজাদাররা।
কলিমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব ও জাকাত-এ পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের মধ্যে রোজা ইসলামের অন্যতম প্রধান রোকন বা স্তম্ভ। হজ্ব, জাকাত সমাজের সামর্থ্যশালীদের জন্য বাধ্যতামূলক হলেও রোজা এবং নামাজ আদায় সবার জন্য একই নিয়মে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রমজান মাসের রোজা ধনি-গরিব, উঁচু-নিচু সবার ক্ষেত্রেই অবশ্য পালনীয়। ইসলাম ধর্মাবলম্বী কোনও ব্যক্তি এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাতে পারবেন না।
অনিবার্য কারণ ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক কোনও মুসলমান রোজা পালন থেকে বিরত থাকতে পারবেন না। কারণ ইসলামের অনুসারী হওয়ার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে ফরজ কর্ম আদায় করতে হয়। রমজানের টানা একমাস কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে আবদ্ধ থেকে অবনত চিত্তে সর্বশক্তিমানের এবাদতে মগ্ন থাকে মুসলমানরা। দীর্ঘ একমাস বিরামহীনভাবে সংযমের সঙ্গে রোজা পালন করতে হয় খোদার সন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে।
রমজান মাসে প্রতিদিন সুবেহ সাদেক (সূর্যোদয়ের প্রাক্কাল) থেকে মাগরেব (সূর্যান্ত) পর্যন্ত সময়ে পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। সেই সঙ্গে বেশকিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। যেমন রোজা পালনের পাশাপাশি নামাজ আদায় অতি আবশ্যক। রোজা যেমন ফরজ তদ্রæপ নামাজও। নামাজ না পড়ে সারাদিন রোজা পালন করা মূল্যহীন। এমনটা কার্যত লোক দেখানোর নামান্তর। ফরজ নামাজের সঙ্গে শুধু রমজানের জন্য এ মাসে একটি বিশেষ নামাজ আদায় করতে হয়। সেটাকে তারাবির নামাজ বলা হয়। তারাবির নামাজ ফরজ নয়, সুন্নত। তবে তা সর্বাবস্থায় পালনীয়। কেন না তারাবির নামাজ অনাদায় রেখে রোজা পালন করলে তা পরিপূর্ণভাবে পালন হয় না। তারাবি ব্যতীত রোজা অর্ধসমাপ্ত রয়ে যায় বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই প্রতিদিন এশার নামাজের সঙ্গে কুড়ি রাকাত তারাবি আদায় করতে হয়। একাকীভাবে এ কুড়ি রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা গেলেও মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সর্বোত্তম এবং প্রভ‚ত ফলপ্রদ। রোজাকে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে ফরজ এবং সুন্নত নামাজ যথোপযুক্তভাবে আদায় একান্ত প্রয়োজন। রোজা এবং নামাজ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। নামাজ আদায় ছাড়াও রোজাদারদের আরও বেশ কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। রোজাদাররা রোজা অবস্থায় কোরআন নির্দেশিত হুকুম আহকাম অমান্য করতে পারবেন না।
রমজান মাসে রোজা পালন করে রোজাদাররা নিজেদের সংযমী প্রতীয়মান করতে চান। রোজাবস্থায় যাবতীয় কু-প্রবৃত্তি কঠোরভাবে দমন করতে হয়। রোজা রেখে চুরি করা, মিথ্যা কথা বলা, অত্যাচার, অনাচার, ব্যভিচার, পরনিন্দা করা মহা অন্যায়। আল্লাহর কাছে এসব অপকর্ম ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। রোজা রেখে এ কাজগুলি করলে রোজা বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা থেকে যায় এবং এ জন্য পরকালে জবাবদিহিসহ শাস্তিভোগ করতে হবে। আল্লাহর দৃষ্টিতে এসব অপকর্মকারীরা রমজানের পবিত্রতা বিনষ্টকারী এবং অবমাননাকারী বলে পরিগণিত হয়। সব ধরনের কুকর্ম থেকে রোজা পালনকারীকে শত যোজন দূরে অবস্থান করতে হয়। শরীরে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে অধিক সংযত রাখতে হয়। রোজাবস্থায় কাউকে মানসিক আঘাত দেওয়াও অপরাধ।
মোদ্দাকথা, কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে আবদ্ধ থাকার নামই রোজা। আত্মসংযমের মাধ্যমে পরম করুণাময়ের নৈকট্য লাভের জন্য বিশ্বের প্রতিটি সাবালক মুসলমানকে রমজানের রোজা পালন করতে হয়। এ মাসে সিয়াম সাধনা করে ইসলাম ধর্মবলম্বীরা সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স^ীকার করেন। প্রতিপালকের বশ্যতা স^ীকার করার উপযুক্ত মাধ্যম হলো কৃচ্ছ্রসাধন। রমজানের রোজা সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হলেও বিশেষ কারণ বশত এর উপর কিছুটা শিথিলতা আরোপ করা হয়েছে। পুরুষের ক্ষেত্রে সবকটি রোজা অবশ্য পালনীয় হলেও মহিলাদের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে। মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাব এবং প্রসব পরবর্তী ঋতুস্রাব চলাকালীন রোজা রাখা নিষিদ্ধ। তবে হায়েজ-নেফাছের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রান্তের পরও স্রাব অব্যাহত থাকলে রোজা রাখতে হবে। কারণ তখন এ স্রাব ইন্তেহাজা বা শারীরিক ব্যাধিতে পরিণত হয়। হায়েজ-নেফাছ চলাকালীন অপালনীয় রোজা অবশ্য পরে আদায় করে নিতে হয়। একটার পরিবর্তে একটি রোজা রাখলে রমজানের ফরজ রোজা আদায় হয়ে যায়।
মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে, কোনও প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্তহলে, অশীতিপর অবস্থায় রোজা পালনে অক্ষম থাকলে, রোজা রাখলে কোনও ক্ষতির আশংকা যেমন- রোগবৃদ্ধি বা মৃত্যুর আশংকা থাকলে কেউ রোজা ভঙ্গ করতে পারে। রোজা ভঙ্গকারীর পরিবর্তে মিসকিনকে (দরিদ্র) পেট পুরে খাওয়াতে হবে। উপরোক্ত কারণ ব্যতীত রোজা ত্যাগ করলে জরিমানাস^রূপ ৬০টি রোজা রাখতে হয়। তবুও রমজানের একটি রোজার পরিবর্তে ষাটজন দরিদ্রকে উদরপূর্ণ আহার করালেও এ মাসের একটি রোজার সমতুল্য হয় না। তাই কোরআন-হাদিস স¤মত কারণ ছাড়া অযথা রোজা ভঙ্গ করা চরম অন্যায়।
রোজা রাখলে শুধু যে পূণ্য সঞ্চয় হয় তা নয়, রোজার পিছনে যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও রয়েছে। শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে রোজা বহুলাংশে সাহায্য করে। দেহকে নীরোগ রাখতে পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্নভাবে উপবাস পালনের নিয়ম রয়েছে। মাঝেমধ্যে উপোস করলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রোজা পালন স^াস্থ্যের পক্ষে প্রভ‚ত উপকারী বলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত। তাই কোন অবস্থায় রোজার মাহাত্ম্য এবং বাস্তব উপকারিতা অস^ীকার করা যায় না।
মাহাত্ম্যের দিক দিয়ে রমজান মাসকে তিনভাগে ভাগ করে একেকটি ভাগের স^তন্ত্র বৈশিষ্ট্য কালামেপাকে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন প্রথম দশদিন করুণা বর্ষণের দিন, দ্বিতীয় দশদিন ক্ষমা প্রদর্শনের দিন, এবং শেষ দশদিন দোযখ থেকে মুক্তির দিন। প্রথম ও দ্বিতীয় দশদিন অপেক্ষা শেষ দশদিন সর্বাধিক তাৎপর্যশালী। কেননা শেষ দশদিনের মধ্যে এমন একটি রাত রয়েছে যার মহিমা অন্যান্য সহস্র রাতের চেয়েও অধিক। প্রথম দশদিন কোরআনের অঙ্গীকারের মতো আল্লাহতালা রোজাদারদের উপর রহমত বর্ষণ করেন, দ্বিতীয় দশদিন মানবজাতিকে বিশেষভাবে ক্ষমা করা হয়। লাইলাতুল কদর নিহিত থাকায় শেষ দশদিনে দয়াময় খোদা মুক্তিপ্রদান করেন। ফলে মহিমাময় রমজান মাসে বেশি করে এবাদত বন্দেগী করতে হযরত মোহা¤মদ (স.) স^ীয় অনুগামীদের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র রমজানের মাহাত্ম্য এতই অধিক যে বছরের অন্যান্য সময়ে একটি এবাদত করলে যে সওয়াব পাওয়া যায় রমজান মাসে তা হয় সত্তর গুণ বেশি।
পবিত্র রমজান মাসে কেউ যদি কোনও জাগতিক কাজকর্ম নির্দেশিত বিধানানুসারে করেন তাহলে এটাকেও পূণ্যের কাজ বলে গণ্য করা হয়। বিনিময়ে আমলনামায় সওয়াব লিখে দেওয়া হয়। রমজান মাসে কেউ যদি একজন রোজাদারকে নিদেনপক্ষে একটি খেজুর দিয়ে ইফতার করায় তাহলে ইফতারকারীর গোনাহ মার্জনা করে পরকালে বেহেস্তগমনের পথ সুগম করে দেওয়া হয়। ফজিলতময় রমজান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল (অবশ্যকরণীয় নয় এমন) এবাদত করেন তাঁকে অন্য সময়ের ফরজ এবাদতের সুফল দেওয়া হবে। আর একটি ফরজ আদায় করলে অন্যমাসের ৭০টি ফরজ কর্মের সমতুল্য সওয়াব দেওয়া হবে। পবিত্র রমজান মাসের অপরিসীম মহানতা সম্বন্ধে পবিত্র কোরআনে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে রমজান সর্বাধিক তাৎপর্যশালী হওয়ার কারণ হচ্ছে শবে কদর। কেননা পবিত্র শবে কদরের রজনীর মর্যাদা সহস্র রজনীর চেয়েও বেশি। এ মাসের প্রতিটি ক্ষণ আল্লাহর কাছে অত্যন্তপছন্দনীয়। রমজান এবং লাইলাতুল কদর পেয়ে যারা নিজেদের পাপ খলন করাতে পারল না মানবজাতির মধ্যে তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং ভাগ্যহীন। পবিত্র শবে কদরের রাতের খাতিরে আল্লাহ পাপীতাপী সবাইকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।
রমজানের রোজার বাস্তব ভিত্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাম্য। মানুষের মধ্যে সাম্য প্রতিষ্ঠার্থে রোজা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। মানুষ সংকীর্ণ স^ার্থে সমাজে ভেদাভেদ সৃষ্টি করলেও সৃষ্টিকর্তার কাছে যে সব সমান- এ সত্যকে সামনে রেখে রমজানের রোজা সবার ক্ষেত্রে একই নিয়মে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রোজা রেখে ক্ষুৎপিপাসায় কাতর সামর্থ্যশালীরা আক্ষরিক অর্থে উপলব্ধি করতে পারেন হররোজ যাদের রোজা রাখতে হয় তাঁদের অনাহারক্লিষ্ট পেটের সুতীব্র ক্ষুধা-যন্ত্রণা কতটুকু দুর্বিষহ। তাই প্রভ‚-ভৃত্য, ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু সবার জন্যই রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআন নাজিল হওয়ায় রমজান সর্বাধিক মর্যাদাশালী মাস। এ মাসে চারজন শ্রেষ্ঠ পয়গাম্বরের উপর আল্লাহর কোরআন, জবুর, তৌরাত ও ইঞ্জিল নামক চারটি আসমানি গ্রন্থ নাজিল হয়। সে জন্য রমজানের বৈশিষ্ট্যই আলাদা। ২৭ রমজান কোরআন নাজিলের তারিখ মনে করে এদিনকে শবে কদর হিসেবে পালন করা হয়। তবে ২৭ রমজান যে শবে কদর তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। কোন বেজোড় তারিখে কোরআন নাজিল হয়েছে, তবে তার সুপষ্ট উল্লেখ কোথাও না থাকায় নির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে মতান্তর রয়েছে। তবে ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ এ দিনগুলোর মধ্যে শবে কদর লুক্কায়িত রয়েছে বলে আলেমদের অভিমত। পবিত্র লাইলাতুল কদরের মহিমাময় রাতের সন্ধানে অনুসন্ধিৎসু মুসলমানরা এতেকাফ পালন করেন।
সাংসারিক যাবতীয় কাজকর্ম, পার্থিব চিন্তাধারা পরিত্যাগ করে রমজানের শেষ দশদিন শুধুমাত্র পারলৌকিক চিন্তায় মগ্ন এবং বিশ্ব প্রতিপালকের উপাসনায় বিভোর থাকার নামই এতেকাফ। এতেকাফ অবস্থায় মসজিদের চৌহদ্দির বাইরে বেরুনো নিষেধ। নিভৃতে নিরালায় বসে এবাদত বন্দেগী করতে হয় আল্লাহর করুণা প্রাপ্তির আশায়। এতেকাফকারীর গোনাহ মার্জনা করে দেওয়া হয় এবং এ ব্যক্তিকে সদ্যভূমিষ্ঠ নি®পাপ শিশুর মতো এতেকাফ থেকে বের করা হয়।
হযরত মোহা¤মদ (স.) মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তোমরা রমজান এবং শবে কদরের একটি মুহ‚র্তও অবহেলা করে কাটিও না। কেননা এদিন ও মাসের প্রতিটি সময় অসীম বরকত এবং ফজিলতময়। সিয়াম সাধনার এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর উদিত হয় আরেকটি নতুন চাঁদ। সে ফালিচাঁদ প্রত্যক্ষ হওয়ার পর দীর্ঘ একমাসের কৃচ্ছ্রসাধনের পরিসমাপ্তি ঘটে। পরদিন ঈদগাহ ময়দানে স¤িমলিতভাবে খোদাতালার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দু’রাকাত নামাজ আদায় করে মুসলমানরা এক বছরের জন্য পবিত্র রমজানকে জানায় শুভ বিদায়।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রমজান


আরও
আরও পড়ুন