Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ৮:৫২ পিএম

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের মুখের আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় ও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখে যাওয়ার পর সোমবার ওয়াশিংটনে পরিষদের এক বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার সঙ্কট নিরসনে সত্যিকার পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে সশস্ত্র হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন, ধর্ষন আর অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানামর কর্তৃপক্ষ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে আসলেও সম্প্রতি সরেজমিনে সফর করে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখে গেছেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, “আমরা সবাই রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের শিকার হওয়ার কথা শুনেছি যা ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবেই বিবেচনা করা যেতে পারে। এবার নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা নিজের চোখে দেছেন কী সঙ্কট তৈরি করা হয়েছে। আর সে কারণেই এখন পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া অন্য উপায় নেই।” নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগের প্রত্যক্ষ বিবরণ শুনেছেন জানিয়ে নিকি হ্যালি বলেন, রাখাইন রাজ্যের সঙ্কট ও রোহিঙ্গাদের প্রত্যক্ষ করা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের জন্য সত্যিই কঠিন ছিল। এই সফরের অন্যতম মূল কারণ ছিল সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমার সরকারের চলমান নিস্পৃহতা। মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া বিচার করে দেখলে দেখা যাবে, এই সঙ্কটে তারা তাদের ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
১৫ সদস্যের পরিষদে দ্রুত এমন একটি প্রস্তাব গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান হ্যালি যাতে বিশালাকার ও বাড়তে থাকা এই মানবিক ও মানবাধিকার সঙ্কট সমাধানে সত্যিকার পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তিনি বলেন, সেটাও একটি চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ পরিষদের কয়েকটি সদস্য দেশ নিজেদের স্বার্থজনিত কারণে এই ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রেখেছে। কেউ কেউ সফরের সময়েই পরিষদের ঐক্যকে অবজ্ঞা করে অপ্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে বিবৃতিকে দুর্বল করেছেন। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি কারেন পিয়ার্স বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা ঘটেছে তার ব্যাপ্তি দেখে পরিষদের সব সদস্যই আঘাত পেয়েছেন। আর পরিষদের সবাই ব্যক্তিগত দুর্ভোগ, বিশেষ করে শিশুদের কথা শুনে তাড়িত হয়েছেন। পিয়ার্স বলেন, যখন আপনারা দেখবেন ১৪ বছরের একটি ছেলের পা উড়ে গেছে তা খুবই দুঃখজনক। যখন আপনারা শুনবেন ১২ বছরের একটি মেয়ের সামনে তার বাবা-মাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, জনগোষ্ঠীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হচ্ছে সেই দুঃখ বাঁধ মানানো যায় না। কারেন পিয়ার্স আরও বলেন, আমি মনেকরি পরিষদের সদস্যরা সঙ্কটের বিপুলতা দেখে হতবিহ্বল হয়েছেন। কারণ আপনি যেখান থেকেই দিগন্তের তাকান বা দাঁড়ান, শুধু শরণার্থীদেরই দেখবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ