Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরাম নাকি যন্ত্রণা!

রাজধানীতে গ্রিন ঢাকা বাস সার্ভিস

| প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : এ যেনো নামেই বিলাসবহুল এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) বাস সার্ভিস। এসি থাকলেও ক্লাইমেট কন্ট্রোল নেই। হাতল ছাড়া আসন থেকে ছিটকে পড়েন যাত্রীরা। বাসের ভেতরে এসি থেকে পানি পড়ে। বাহিরে চাকচিক্যময় দেখালেও ভেতরে ডিজাইন একেবারেই রুচিহীন। ভেতরে ইঞ্জিনের বিকট শব্দে কানে কথা শোনা যায় না। ভারতীয় নিম্মমানের গাড়িগুলোর সাসপেনশনও ভালো না। সামান্য উঁচুনিচু পথেই জোরে ঝাঁকুনি লাগে। গ্রিন ঢাকা নামের ‘বিলাসবহুল’ এই বাসের ভাড়া আবার অন্যান্য বাসের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে বাড্ডা হয়ে মতিঝিল রুটের এই বাস সার্ভিস নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই। একজন যাত্রী ব্যঙ্গ করে বলেন, এটা হলো, ওয়ানটাইম সার্ভিস। একবার কেউ উঠলে আর উঠবেন না। উত্তরা থেকে মতিঝিলের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এই দূরত্বে বাস ও মিনিবাসের ভাড়া ৪০ টাকা। এসির দোহাই দিয়ে গ্রিন ঢাকা বাসের ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। বিআরটিসির এসি বাসে একই দূরত্বের ভাড়া ৬০ টাকা। শুধু এসির কারনে গ্রিন ঢাকা নামক বাসে এতো বেশি ভাড়া নেয়াকে যাত্রীরা ‘ডাকাতি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। গ্রিন ঢাকা বাস কোম্পানীর একজন কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদেরকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। যেটা বিআরটিসিকে দিতে হয় না। এ কারনে আমাদের ভাড়া বেশি। জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সচিব মুহাম্মদ শওকত আলী ইনকিলাবকে বলেন, এসি (শীতাতপ) বাসের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের কোনো নীতিমালা নেই। এজন্য এসির দোহাই দিয়ে যাচ্ছেতাই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তারপরেও কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
বাস মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার ভেতরে এসি বাসের স্বল্পতাকে পুঁজি করে ‘অস্বাভাবিক’ চড়া ভাড়ায় বাস নামিয়েছে ‘গ্রিন ঢাকা’ নামে একটি কোম্পানি। গত ৬ এপ্রিল উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে এই বাস চলাচল শুরু করে। প্রথম ধাপে ৫০ সিটের ২০টি বাস নামানো হয়েছে। সবগুলো বাসই ভারতের টাটা কোম্পানীর। বাংলাদেশে যার সরবরাহকারী ঢাকা নিটোল টাটা নামক কোম্পানী। যাত্রীদের অভিযোগ, ভারতের টাটা কোম্পানীর অত্যন্ত নি¤œমানের বাসগুলো যুক্ত করা হয়েছে গ্রিন ঢাকা বাস সার্ভিসের বহরে। বাইরে দেখতে চাকচিক্যময় হলে এর ভেতরটা খুবই নি¤œমানের এবং রুচিহীন ডিজাইনের। সীটগুলোতে হাতল নেই। বরং যাত্রীদের দাঁড়িয়ে যাওয়ার সুবিধা করে দেয়া হয়েছে সীটের হাতলের জায়গা বাঁচিয়ে। একজন যাত্রীর প্রশ্ন, বিলাসবহুল বাসই যদি হবে তবে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী যাবে কেনো?
গ্রিন ঢাকার মতিঝিলের একজন কাউন্টারম্যানের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ৭টা থেকে এ বাস যাতায়াত শুরু করলে পিকআওয়ারেও যাত্রী পায় না। অর্থাৎ তখনও ৫০ সীটের সবগুলো ভরে না। ১৫/২০টি সীট খালিই যায়। অফিস সময় শেষে অনেকটা ফাঁকাই চলাচল করে এই বাস। বিশেষ করে মতিঝিল থেকে উত্তরার দিকে যেতে যাত্রী ওঠে না বললেই চলে।
গতকাল উত্তরা থেকে মতিঝিল এসে গালিব নামে এক যাত্রী বলেন, বিলাসবহুল বাস সার্ভিস একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু এতো দেখছি চিটিং-বাটপারি। বাসের এসির কন্ট্রোল, ভেতরের ডিজাইন, এসি দিয়ে পানি পড়া, সীটের হ্যান্ডরেস্ট না থাকা, সীটের ভাইব্রেশন, সাসপেনসন খারাপ ইত্যাদি অভিযোগ তুলে তিনি প্রশ্ন করেন, এসব কি দেখার কেউ নেই?



 

Show all comments
  • রোমান ১৫ মে, ২০১৮, ৩:৪০ এএম says : 0
    যন্ত্রণা যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা
    Total Reply(0) Reply
  • AI ১৫ মে, ২০১৮, ৯:৫৫ এএম says : 0
    ভারতের গাড়িই ব্যবহার করার অভ্যাস করতে হবে। অন্য উপায় নাই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজধানী

১৩ ডিসেম্বর, ২০২২
১৭ নভেম্বর, ২০২২
১১ অক্টোবর, ২০২২
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ