Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিউনিসিয়ার স্থানীয় নির্বাচন দেখাতে পারে গণতন্ত্রের পথ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৮, ৮:০৯ পিএম

গত সাত বছর ধরে তিউনিসিয়ার জনগণ একটি বিশৃঙ্খল জীবন-যাপন করেছে। বেন আলীর শাসনের পতন এবং তিনটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরেও জনগণ তাদের স্থানীয় রাজনীতিবিদদের নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সম্প্রতি লাখ লাখ তিউনিসিয়ান স্থানীয় নির্বাচনে তাদের ভোট দিয়েছেন এবং ৩৫০টি পৌরসভায় ২০৭৪ জন প্রার্থীর মধ্যে থেকে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন।যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতির হার ছিল বেশ কম। ভোটারদের এই অনুপস্থিতির পেছনে একটি বড় গল্পও রয়েছে।তিউনিসিয়ায়প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনীতির শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্থানীয়পর্যায়ের এই নির্বাচনগুলি গত তিন বছরে চারবার স্থগিত করা হয়েছে। তারপরেও ৫৭,০০০ এরও বেশি প্রার্থী তাদের নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে ৪৯ শতাংশই হচ্ছেন নারী এবং তাদের অর্ধেকের বেশি ৩৫ বছরের নিচে, যা প্রকৃত গণতন্ত্রের একটি শুভ সূচনার ইঙ্গিত দেয়।এই নির্বাচনে ৭ হাজার ২০০ জন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা একটি গণতান্ত্রিক মাইলফলক প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটি দেশটিতে এমন একটি নতুন নির্বাচিত সংস্থার জন্ম দিয়েছে, যা কর্তৃত্ববাদী ব্যাকস্লাইডের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সহায়ক হতে পারে। যেমনটি আমরা এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে ঘটতে দেখেছি।এই নির্বাচনে আরো গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হলো, নির্বাচনে দুটি উপায়ে রাজনৈতিক ম্যাপের আমূল পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।এখনো পর্যন্ত তিউনিসীয়দের পার্লামেন্টের ২১৭ জন সদস্য এবং একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার সুযোগ রয়েছে। পার্লামেন্টের এসব সদস্যদের সবাই রাজধানী তিউনিস কেন্দ্রীক তাদের রাজনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে থাকেন। পার্লামেন্টের ১৫টি দলের অধিকাংশই স্থানীয় রাজনীতিতে অনেক দুর্বল রয়ে গেছেন। যে কারণে তাদের অধিকাংশই মোট পৌরসভার এক পঞ্চমাংশের বেশি পৌরসভায় স্থানীয় প্রার্থীদের পরিচালনা করতে পারে না।স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাসমূহ এবং দৈনন্দিন জীবনের বিরাজমান সমস্যা সমাধানে মনোযোগ প্রদানের মাধ্যমে দলগুলি নিজেদের শক্তিকে জোর করতে পারলে এই নির্বাচনে তিউনিসিয়ায় প্রকৃত রাজনৈতিক দলগুলির উত্থান ঘটাতে পারে। এখনো পর্যন্ত বেশিরভাগ দলই নীতিমালা বা সমাধানের পরিবর্তে তারা নিজেদের মতাদর্শের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন।এই মতাদর্শগুলো তিউনিশিয়ার নেতৃস্থানীয় তিনটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করে। এগুলো হলো-ইন্নাহধা পার্টির ইসলামী মতাদর্শ; নাইদা তিউনেস পার্টির জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ এবং ফ্রন্ট পপুলিয়ার এবং মেকরো তিউনেস পার্টির বামপন্থী ধর্মনিরপেক্ষবাদী মতাদর্শ। জনগণের জীবনকে স্পর্শ করে এমন বাস্তব নীতি গ্রহণ না করলে দলগুলো নিজেদের শক্তিকে জোরদার করতে পারবে না।বাস্তব সমস্যার সমাধান প্রদানকারীর দিকে নিজেদের আত্মপরিচয়ের (ইসলামিক, জাতীয়তাবাদী বা ধর্মনিরপেক্ষ) রক্ষক হওয়া থেকে সরে যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো লড়াই করেছে।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে, বামফ্রন্ট পপুলিয়ারে মত বিরোধী দলগুলো প্রতিবাদ গোষ্ঠীগুলির মতো কাজ করে যাচ্ছে। তাদের নিজস্ব কোনো সমাধান ছাড়াই তারা সরকারি প্রতিটি নীতির বিরোধিতা করেছে। মিডল ইস্ট আই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তিউনিসিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ