মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কাবুল ও কান্দাহারে সাম্প্রতিক ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই হামলার পর দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর অব্যাহত ব্যর্থতার বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।
সমালোচকরা বলছেন, ১৬ বছরের সঙ্ঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্র এখানে তিন দিক থেকে বাধা পড়েছে- তারা যুদ্ধ জিততে পারবে না, থামাতে পারবে না এবং ছেড়ে যেতেও পারবে না।
বেসামরিক মানুষ হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। আমেরিকান ও ন্যাটোর সেনা সমাগম বৃদ্ধিতে পরিস্থিতির কোনো হেরফেরও হচ্ছে না। জটিল নিরাপত্তা পরিস্থিতি জটিলতর হচ্ছে।
সমস্যার একটি দিক হল- ইসলামিক স্টেট এবং তালেবানরা যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে, কারা বড় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিতি পেতে পারে।
সোমবার কাবুলের জোড়া হামলা এবং এর আগে এক ভোটার সেন্টারে হামলার দায় স্বীকার করেছে আইসিস। ভোটার রেজিস্ট্রেশন সেন্টারে হামলায় ৬০ জন নিহত হন।
কিন্তু জানুয়ারিতে যে হামলাগুলো হয়েছে, সেগুলোতে জড়িত ছিল তালেবানরা। একটি ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স ভর্তি করে বোমা নিয়ে সেটার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যেখানে মারা যায় প্রায় ১০০ জন। অন্য ঘটনায় কাবুলের বিলাসবহুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করা হয়।
গত সপ্তাহে তালেবানরা তাদের ২০১৮ সালের বসন্তকালীন হামলা শুরু করেছে। আরও বড় ধ্বংসযজ্ঞের হুমকি দিচ্ছে তারা।
মার্কিন হিসাবমতে, সরকারি বাহিনী আফগানিস্তানের ৬০ শতাংশেরও কম জায়গা নিয়ন্ত্রণ করে। বাকি জায়গাগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছে, অথবা সেগুলো জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে।
আরেকটি সমস্যা হল- সন্ত্রাসীরা এখন বিশেষভাবে আফগানিস্তানের ভঙ্গুর, অপক্ব গণতন্ত্রকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। বারবার তাই এখন সরকারের মন্ত্রী, অক্টোবরের পার্লামেন্টারি ও জেলা নির্বাচনের আয়োজকদের ওপর হামলা হচ্ছে। তা ছাড়া যে সব সাংবাদিক স্থানীয় ও পশ্চিমা মিডিয়ার হয়ে কাজ করছে, হামলা হচ্ছে তাদের ওপরও।
উচ্চপর্যায়ের সরকারি জায়গাগুলোতে নতুন যে কোনো হামলা সেখানকার কর্তৃপক্ষকে আরও দুর্বল করে দেয়। দেশে ও দেশের বাইরে আফগানিস্তানের অন্তরীণ প্রায় প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির ভাবমূর্তিরও ক্ষতি হয় এতে।
ফেব্রুয়ারিতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী শান্তি পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন ঘানি। সেখানে তাৎক্ষণিক অস্ত্রবিরতি এবং শর্তহীন আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। একমাত্র জবাব যেটি তিনি পেয়েছেন, সেটি হল রক্তপাত। এ অসহায় অবস্থায় ঘানি একাই নেই।
গত আগস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আগের অবস্থানের পরিবর্তন করে ‘ফাইট টু উইন’ কৌশল ঘোষণা করেন। অতিরিক্ত তিন হাজার সেনা মোতায়েন করেন ট্রাম্প। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সুযোগ ও স্বাধীনতাও বাড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে ন্যাটোর মিত্রদের আহ্বান জানানো হয় তাদের সহায়তা করতে।
ট্রাম্পের পদক্ষেপ তার সিদ্ধান্তের মতোই অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। গত বছর এপ্রিলের দিকে পূর্ব আফগানিস্তানে আইসিসের কথিত এক গুহায় ‘মাদার অব অল বম্বস’ (প্রাতিষ্ঠানিক নাম এমওএবি) নিক্ষেপ করে মার্কিন বাহিনী। সেই সময় বড় ধরনের বিজয় দাবি করেছিলেন ট্রাম্প।
সহিংসতা কমানো ও শান্তি প্রতিষ্ঠার বদলে ট্রাম্পের নীতির ফলে উল্টো ফল হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে- যেখানে-সেখানে বিচার বিবেচনাহীন হামলার কারণো গত বছর ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার। অতীতে এ ধরনের হতাহতের কারণ ছিল জঙ্গিদের হামলা। তবে সবাই জঙ্গিদের হামলায় মরত না।
সমন্বিত মার্কিন কৌশলের অভাবে আফগানিস্তান আমেরিকান সশস্ত্র বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ ভূমি ও অস্ত্র পরীক্ষার ক্ষেত্র হয়ে উঠতে চলেছে। ট্রাম্প এখন আবার তার আগের নীতিতে ফিরে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।
রিপাবলিকার সিনেটর র্যান্ড পল বলেছেন, ট্রাম্প এ বিষয়ে একমত হয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফাইট টু উইন’ নীতি ভুলে যাওয়া উচিত এবং যুদ্ধ সংক্ষেপ করে সেখান থেকে পালিয়ে আসা উচিত। পল চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান, 'প্রেসিডেন্ট আমাকে বারবার বলেছেন, আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে যাচ্ছি'।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।