পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
ঢাকা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এই প্রশ্নপত্রে কৌশলে ইসলামের প্রতি অবজ্ঞা এবং সুচতুরভাবে পীর- মাশায়েখের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়েছে। প্রশ্ন প্রণেতারা ৯২ ভাগ মুসলমানের এ দেশে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অপচেষ্টা করেছে। দ্বীন, ইসলামী রীতিনীতি, ঐতিহ্য, ঈমান ও আমল নিয়ে আজগুবি মিথ্যা গল্পের অজুহাতে ইসলাম ও পীর-মাশায়েখের খারাপ হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। অবমাননা করা হয়েছে দরগাহ, দাড়ি ও টুপিকে। শুধু তাই নয়, চট্টগ্রাম বোর্ডের প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়া হয়েছে। মুসলমানদের সন্ত্রাসী এবং হিন্দুদের মহানুভব হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। দেশের আলেম-ওলামা শিক্ষাবিদরা মনে করেন, পাবলিক পরীক্ষায় এ ধরনের প্রশ্নপত্র প্রণয়ন স্বাভাবিক নয়। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং নাস্তিক্যবাদ উস্কে দিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই একটি মহল এ কাজ করেছে। তারা প্রশ্ন করেছেন, ইসলাম ও পীরদের সাথে ভ-, ল্যাংটা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে। এর ম্যাসেজটা কি? তারা মনে করেন, এসব শব্দের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেন পীর-আউলিয়া সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পায় এবং ইসলাম ধর্মচর্চা থেকে দূরে সরে আসে সেই চেষ্টাই করা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, প্রশ্ন তৈরির কাজ দায়িত্বশীলদের দেয়া হয়। গোপনীয়তার মাধ্যমে প্রশ্ন প্রণয়ন ও বিতরণ করা হয় বলে তা চেক করার সুযোগ থাকে না। তবে কেউ ইচ্ছা করে এ ধরনের কাজ করেছে কিনা তা দেখা হবে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্র দৈনিক ইনকিলাবকে জানিয়েছেন, তিনি এবিষয়ে কিছুই জানেন না। প্রশ্ন প্রণয়ন সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, আটটি সাধারণ বোর্ড পৃথকভাবে প্রশ্ন প্রণয়ন করে এবং মডারেটর হয়ে তা লটারির মাধ্যমে বিভিন্ন বোর্ডে বিতরণ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের মেধা-মনন যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্নপত্রের প্রবর্তন করা হয়েছে তা শুরু থেকেই নানামুখী প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। বলাবাহুল্য, প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রে প্রশ্নকর্তা যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করে থাকেন। তিনি কোন সূত্র ধরে কি ধরনের প্রশ্ন করবেন, মূলত এটি তার এখতিয়ারভুক্ত। বাস্তবে যা ঘটছে তাহলো, দেশের বিভিন্ন নামী-দামী স্কুল-কলেজের বার্ষিক, সাময়িক, প্রিটেস্ট, টেস্ট পরীক্ষায় যেসব প্রশ্নপত্র করা হয় সেগুলো বিভিন্ন ধরনের গাইড বই থেকেই তুলে দেয়া হয়। যদিও প্রশ্ন প্রণয়নের বিধান হিসেবে বলা হয়েছে, বোর্ডের মাধ্যমে বেছে নেয়া সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকরাই প্রশ্ন করে থাকেন। সংগতভাবেই দেখার রয়েছে বিতর্কিত প্রশ্নপত্র যারা করেছে তারা কিভাবে কোন যোগ্যতায় অথবা কার বা কাদের সুপারিশে প্রশ্ন করার সুযোগ পেয়েছেন? তবে এর চেয়েও মূল বিষয় হচ্ছে পাঠক্রম। এসব প্রশ্ন যেহেতু নির্বাচন করা হয় পাঠ্যসূচি অনুযায়ী, তাই এ ধরনের ধর্মীয় অবমাননাকর বিষয় যুক্ত হলো কিভাবে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এটা যে ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ভুল ধারণা দেয়ার এক ধরনের চক্রান্ত, তাতে সন্দেহ নেই। এখানে একথাও উল্লেখ করা দরকার, ইতোপূর্বে পাঠক্রম নিয়ে দেশের বোদ্ধামহল প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, এ ধরনের পাঠক্রম নির্বাচন করা হয়েছে।
যে পদ্ধতি প্রক্রিয়ার কথাই বলা হোক না কেন এটা কোন বিবেচনাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের ৯২ভাগ মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত দিতে পারে এমন কোন পাঠক্রম তৈরি করা এবং তা পড়ানো যৌক্তিক নয়। শিক্ষার উদ্দেশ্য-প্রকৃতি নিয়ে যদি শুরুতেই শিক্ষার্থী বা অভিভাবক মহলে প্রশ্ন দেখা দেয় তাহলে সে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহ সৃষ্টি হবার চেয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবে বেশি। কিছু ইসলাম বিদ্বেষীর গোটা জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস বরদাশত যোগ্য হতে পারে না। সে ক্ষেত্রে মূল দায় পাঠক্রম প্রণেতাদের উপরই বর্তাবে। কে বা কারা আলোচ্য প্রশ্নপত্র বা পাঠক্রম প্রণয়ন করেছেন এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি ও বিশ্বাসে আঘাত হেনেছেন তার সঠিক তদন্ত করে অবশ্যই দোষীদের বিচার করতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি যাতে অক্ষুণœœ থাকে সেদিকেও সকলকেই নজর দিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।