Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দুই সন্তানসহ মা নিহত আত্মহত্যা নাকি খুন তা নিয়ে রহস্য

| প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর দারুস সালামে দু’সন্তানসহ মা নিহত হওয়ার ঘটনা আত্মহত্যা না খুন তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। হাসিবুল হাসান জাতীয় সংসদের সহকারী লেজিসলেটিভ ড্রাফটসম্যান আর স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩৫) কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের কোষাধ্যক্ষ। দুই মেয়ে হাসিবা তাহসিন হিমি (৮) ও আদিবা তাহসিন হানিকে (৫) নিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। রাজধানীর দারুস সালাম এলাকার পাইকপাড়া সি-টাইপ সরকারি কোয়ার্টারের ১৩৪নং ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই বাসা থেকে হাসিবুলের স্ত্রীসহ দুই সন্তানের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতদের পরিবার ও পুলিশ দাবি করছেন, সে সময় কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করা ছিল। পাশের কক্ষে হাসিবুলের দুই ভাগ্নে ও ভাগ্নি থাকতেন। আরেক কক্ষে জেসমিনের খালাতো বোন রেহেনা পারভীন যুথী থাকেন। তারাও বিষয়টিও টের পায়নি বলে দাবি করেন। পরে হাসিবুল ও জেসমিনের ভাই শাহীনুর মিলে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মা ও দুই মেয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। দুই সন্তানকে হত্যা করে মা গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন-এমন অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। 

দারুসসালাম থানার ওসি সেলিমুজ্জামান জানান, বিষয়টি জটিল তিন জনকেই হত্যা করা হয়েছে-এমন সব বিষয় মাথায় রেখে পুলিশ তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কক্ষের ভিতর বিছানার ওপর দুই সন্তানের রক্তাক্ত লাশ ছিল। মেঝেতে পড়েছিল জেসমিন আক্তারের লাশ। জেসমিনের ডান হাতের দিকে একটি রক্ত মাখা ছুরি পড়েছিল। হলুদ রঙের কাঠের বাট যুক্ত ছুরিটি বাসায় ব্যবহৃত হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে স্বামী হাসিবুল পুলিশের কাছে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। পুলিশ ধারণা করছে, ছুরিটি জেসমিন ঘটনার দিন সকালে কিনেছিলেন।
পরিবার দাবি করছে, জেসমিন আক্তারের মাইগ্রেনের সমস্যা ছিল। ব্যাথা উঠলে চিৎকার করতেন। এরই মধ্যে ঢাকায় দুই জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে তারা দেখিয়েছেন। কয়েকদিন আগে জেসমিন তার দুই সন্তানকে ঘুমের ওষুধও খাইয়েছিলেন। স্বামী হাসিবুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ে এবং জেসমিনের বাড়ি পার্শ্ববতী ঠাকুরগাঁও জেলায়। জেসমিন আক্তারের খালাতো বোন রেহেনা পারভিন জানান, কয়েক বছর আগে হঠাৎ করে স্ত্রী জেসমিনের তীব্র মাথাব্যথা শুরু হলে ডাক্তার দেখানো হয়। জেসমিনের ভাই শাহীনুর মোবাইল ফোনে জানান, তারা তিনজনের লাশ দাফন করতে গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছেন।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সেলিম রেজা জানান, নিহত মা ও তার দুই মেয়ের শরীরে ধারালো অস্ত্রের গুরুতর জখম রয়েছে। ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পুরো রিপোর্ট হাতে আসলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওই চিকিৎসক আরও জানান, নিহত ব্যক্তিদের ভিসেরার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এতে তারা মৃত্যুর আগে কিছু খেয়েছিলেন কি না, তা জানা যাবে। পুলিশের দারুসসালাম জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাসার দরজা ভেতর থেকে লক করা ছিল। দরজা লক করা দেখে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তিনজনের লাশ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এরপরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের ভেতর থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ