পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রমজানে যেসব ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেগুলো গত নয় মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ আমদানি হয়েছে। পাইপলাইনে আছে ভোগ্যপণ্যবাহী আরও জাহাজ। এর ফলে আসন্ন রমজানে ভোগ্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি কিংবা দাম বাড়ার কোনও সুযোগ নেই বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগীর আহমেদ বলেন, বিশ্ববাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম নিম্নমুখী থাকায় এবার বেশি পরিমাণে আমদানির দিকে ঝুঁকেছেন ব্যবসায়ীরা। গত বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি আমদানি হয়েছে যা চাহিদার চেয়েও বেশি। সময়মতো এসব পণ্য যদি বাজারে যেতে পারে, তাহলে রমজানে কোনও সঙ্কট থাকবে না। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের অর্থাৎ গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সুপার, সয়াবিন এবং পামঅয়েল মিলিয়ে ভোজ্যতেল এসেছে ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৯৪৫ টন।
গত নয় মাসে চিনি আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ পাঁচ হাজার ১৪ টন। খেজুর আমদানি হয়েছে ৪৯ হাজার ৭১৩ টন। ছোলা আমদানি হয়েছে এক লাখ ২২ হাজার ২৫৪ টন। ছোলার পরিবর্তে ব্যবহারযোগ্য মটর ডাল আমদানি হয়েছে দুই লাখ তিন হাজার টন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার ড. একেএম নূরুজ্জামান বলেন, ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেলসহ রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় আইটেমগুলো এবছর রেকর্ড পরিমাণ আমদানি হয়েছে। আমাদের হিসেবে গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি আমদানি হয়েছে। এসব পণ্য যাতে দ্রæততার সাথে খালাস হয় সেজন্য সরকারের বিশেষ নির্দেশনা আছে। পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসা মাত্র যাতে কোনও ধরনের সমস্যা না হয়, শুল্কায়ন নিয়ে যাতে কোনও জটিলতা সৃষ্টি না হয়, পণ্যটা যাতে দ্রæত খালাস করা যায় সেই বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি বলে জানান ওই কাস্টম কর্মকর্তা।
আমদানিকারকদের মতে, রমজানে দৈনিক দেশে ১৪ থেকে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনির চাহিদা আছে। দৈনিক ভোজ্য তেল লাগে আট থেকে নয় হাজার টন। ছোলা প্রয়োজন হয় পুরো রমজান মাসে প্রায় দুই লাখ টন।
কাস্টমস সূত্রমতে, রমজানের চার মাস আগে থেকে সাধারণত ব্যবসায়ীরা ভোগ্যপণ্য আমদানির এলসি খোলা শুরু করেন। এবারও সেই নিয়মে খোলা এলসির বিপরীতে আসা পণ্যবাহী জাহাজ গত মার্চ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করা শুরু করেছে। বন্দরের বহিঃনোঙ্গর এবং জেটি মিলিয়ে আরও প্রায় ১০০টি জাহাজ আছে যার মধ্যে অধিকাংশই ভোগ্যপণ্য বোঝাই।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, জরুরি পণ্য খালাসের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর সবসময় প্রস্তুত থাকে। রমজানের ভোগ্যপণ্য খালাসের ক্ষেত্রে আমরা বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এসব ভোগ্যপণ্য কিছু কনটেইনারে আসে, বেশিরভাগ আসে বাল্ক কার্গোতে (খোলা জাহাজ)। এসব পণ্য বন্দরে খালাস হয় না। অফডকে (প্রাইভেট কনটেইনার ডিপো) খালাস হয়। আমরা জাহাজ থেকে পণ্য দ্রæত খালাস এবং সেগুলো বন্দর থেকে অফডকে যথাসময়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।
তবে রমজানের পণ্য সঠিক সময়ে বাজারে পৌঁছা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা আছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্যবোঝাই ট্রাক দ্রæত অফডকে কিংবা ঘাটে গেলেও সেখানে যদি খালাসে ধীরগতি থাকে তবে সঠিক সময়ে বাজারে ভোগ্যপণ্য না-ও পৌঁছতে পারে। এতে বাজারে সংকট সৃষ্টি হলে দাম বাড়ানোর ধুম পড়ে যাবে। এছাড়া লাইটারেজ জাহাজের সংকটের কথাও বলছেন ব্যবসায়ীরা।
বন্দর সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরে আসা পণ্য খালাসে নিয়োজিত আছে এক হাজার ৪৫০টি লাইটার জাহাজ (অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী ছোট জাহাজ)। পণ্য আমদানির যে গতি, তার সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে দরকার আরও অন্তত ৩০০টি।
বাল্ক কার্গোতে করে বন্দরে যেসব পণ্য আছে সেগুলো ভেড়ার জন্য বন্দরে জেটি আছে মাত্র ছয়টি। অথচ ভোগ্যপণ্য ও সিমেন্ট-স্টিলের পাতজাতীয় ইস্পাত পণ্য খালাসের জন্য বন্দরে নতুন জেটি নির্মাণ করা দরকার। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে একটিও নতুন জেটি নির্মাণ হয়নি।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, প্রচুর পরিমাণে ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। সংকটের কোনও সুযোগ নেই। তবে এটা রেওয়াজ হয়ে গেছে যে, রমজান শুরু হলেই একটা কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা চলে। আমরা প্রশাসনকে এই ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।