বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
‘হ্যালো অ্যাডভোকেট ... সাহেব, আমি .. বলছি, ক্যামন আছেন, আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠাবো, আপনাকে শরিক হতে হবে, শিমুলকে (ছদ্মনাম ) পাঠালাম আপনার বাসায়, ওর হাতে ৫ (টাকা) হাজার দিয়ে দিয়েন’। এমন মোবাইল নির্দেশনা বগুড়ায় বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার মানুষের কাছে প্রতিদিনই আসছে। নির্দেশদাতা ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনের কেউ কেউা। প্রশাসন ও সমাজ তাকে এক নামে ক্লিন ইমেজের লোক হিসেবেই চেনে। এই যুবনেতার যিনি লালক-পালক, ক্ষমতাসীন দলেরই আরেক অংশের কাছে তিনি ‘ভন্ড পীর ’ হিসেবেই সমধিক পরিচিত। দুজনেরই ভেতরের রুপ অতি ভয়ংকর। ওই ‘ভন্ড পীর ও তার আত্মীয় পরিজন এবং ডজনাধিক অনুসারীর চাঁদাবাজীতে অতিষ্ট বগুড়াবাসী। বগুড়ার মাদক ও চোরাচালানের বিটের চাঁদা, ১৫ হাজার সবুজ সিএনজি, আরও ১৫ হাজার অটো রিক্সা ও ইজিবাইক থেকে মাসে তোলা ৫ কোটি টাকা চলে যায় ভন্ড পীর সিন্ডিকেটের পকেটে। চিকিৎসা ও ভোগ বিলাসে ব্যয়ের পর বিপুল পরিমাণে উদ্বৃত্ত টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে!
এক অনুসন্ধানে জানা যায়, বগুড়ার এই আলোচিত চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের হোতারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক বাহক ও সুশীল ও প্রগতিশীল বলে জাহির করলেও তাদের সাথে বিএনপি এমনকি জামাতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সন্দেহাতীতভাবে। বিশেষ করে বগুড়ার মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, ভূমি জবর দখল, নকল বইসহ যাবতীয় প্রিন্টিং জালিয়াতির শতভাগ অপকর্ম তারা পরিচালনা করে বিএনপি ও জামায়াতের একাংশের সাথে মিলে মিশে। এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সরকারের বর্তমান মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে এই সিন্ডিকেটের অপকর্ম, অবৈধ আয় বেড়েছে বহুগুনে। সেই সাথে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তাকে ঘিরে বেড়েছে তাদের টাকা পাচার। চাঁদাবাজ চক্রের হোতাদের আত্মীয় পরিজনের ভারত ও মালয়েশীয়ায় সাম্প্রতিক ঘনঘন সফরে ডলার এন্ডর্সমেন্টের পরিমান বেশি হওয়ায় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ’ তা খতিয়ে দেখেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। দলীয় একাধিক সূত্রের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, চাঁদাবাজ চক্রটি দীর্ঘ দেড় যুগ সময় ধরে সবুজ সিএনজি, ইজিবাইক, অটোরিক্সার ১২টি স্ট্যান্ড থেকে মাসে টাকা তুলছে কোটি টাকারও বেশি। এছাড়া দূর পাল্লার কোচের চাঁদাবাজী এত পরিমানে বেড়েছে, মাঝে মাঝেই তা’ পরিবহন সেক্টরে তৈরী করছে অস্থিরতা। বগুড়ার বাইরের কোচ মালিকদের অভিযোগ, কয়েকটি জেলার যানবাহনকে ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের সাথে যোগাযোগ চালু রাখতে তাদের বগুড়ার ওপর দিয়েই যেতে হয়। তাদের এই সুযোগ নেয় চাঁদাবাজরা। ভারতীয় মশলার চোরালান, ফেন্সিডিল ইয়াবার উত্তরাঞ্চলীয় নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে এই চক্রটি। বগুড়ার রাজাবাজরের আড়তে অবৈধ পলিথিন, ভারতীয় মশলার কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চক্রটির পক্ষে দেখোশোনা করে মাড়োয়াড়ী বৈরাগী ও বিহারী লিয়াকত নামের দুজন। বগুড়ার লতিফপুর কলোনীর প্রাক্তন বিএনপি জামাতের ক্যাডারদের দিয়ে সেখানে এরা ‘বিহারী লীগ’ নামের ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও খুনি চক্র। যারা ভন্ড পীর সিন্ডিকেটের বিরোধিতা করে তাদের সাইজ করা হয় বিহারী লীগ সন্ত্রাসীদের দিয়ে।
বগুড়ার প্রিন্টিং জগতের জালিয়াতি এখন সারাদেশের বই ব্যবসায়ীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বগুড়ার ‘বুক পাইরেসী ’ চক্রটিতে এই নেটওয়ার্কের মধ্যে জড়িয়ে আছে দু’জন প্রভাবশালী মিডিয়া মুঘল। যাদের প্রত্যক্ষ শেল্টারে চলছে বগুড়ার প্রিন্টিং জালিয়াতীর ভয়াবহ কর্মকান্ড। বগুড়ার ভুমি দস্যূতাও চলছে এই সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ মদতে। তবে যতই তাদের অবৈধ উপার্জন বাড়ছে, ততই বাড়ছে তাদের চাঁদার লিপ্সা। যার ফলে এখন জনে জনে ব্যক্তি পর্যায়েও চলছে মোবাইল নির্দেশনায় চাঁদাবাজী। ক্ষমতাসীন দলের একটি বিরাট অংশের নেতা কর্মীরা মনে করে এখনই এই চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে ভুগতে হবে দলের সবাইকেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।