রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মো. হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) থেকে : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আগাম নির্বাচনী হাওয়া জোরেশোরে বইতে শুরু করেছে। রঙ-বেরঙয়ের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে গোটা উপজেলা। ৯টি ইউনিয়নে নিজ নিজ প্রার্থীর সম্মিলিত ছবিসহ শুভেচ্ছা বিনিময়ের পোস্টার, বিয়ে, খাতনা, ছাত্রছাত্রীদের বিদায় নবীণবরণ, ইসলামী জলসাসহ বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক অনুষ্ঠানে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করছেন চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা সদস্য প্রার্থীরা। ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন সন্নিকটে হলেও এখন পর্যন্ত কোনো দল থেকে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা না করায় ৯টি ইউপির নাগরিকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া ও উত্তেজনা বেশ জোরালো হচ্ছে। দিন দিন নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রার্থী ঘোষণার বিষয়টি চায়ের কাপে ঝড় তুলছে। কে হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী। যেসব প্রভাবশালী নেতা মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রষ্ঠিানের নামে বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখার চাল, গম খাদ্য অফিসে বসে সিন্ডিকেট তৈরি করে বাধ্য করে পানির দামে চাল, গম ক্রয় করেছেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করে দলকে বিতর্কিত করেছেন, সরকারি পুকুর, খাস জমি দখল করেছেন, তাদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী না করার জন্য মাঠ পর্যায়ের ভোটাররা দাবি করেন। বিগত পৌর নির্বাচনের মতো ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের প্রার্থী করলে তৃণমূল পর্যায়ের লোক বেশি খুশি। মনোনায়ন প্রত্যাশীরা বিভিন্ন মহল্লা, পানের দোকান, ফার্মেসি, হোটেল ও দোকানে ঘোরাঘুরি করছেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে চরম ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে সিনিয়র ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে দৌড়াচ্ছে গোদাগাড়ীর ৯টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। এবার প্রথম দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় উভয় দলেই রয়েছে ৩ থেকে ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। তবে শেষ পর্যন্ত কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভিতরে-বাইরে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মাঠে অবস্থান করলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী সংখ্যা বেশি। গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ৯টি ইউনিয়নের ৫টিতে বিএনপি, ৩টিতে আওয়ামী লীগ ও ১টিতে জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তবে এবারের নির্বাচনে ৯টি চেয়ারম্যান পদের সবকটিতে জিততে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর একই ফলাফল প্রত্যশা করছে বিএনপি। কোন দল থেকে কে চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন, কে হলে ভালো করবেন এসব আলোচনা বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। দলীয় বিবেচনার সঙ্গে ব্যক্তি ইমেজও দেখা প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করছেন। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেনÑ গোদাগাড়ীর সদর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মাসিদুল গনি (মাসুদ) (আ.লীগ), সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী গোদাগাড়ী পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মজিবুর রহমান (বিশু) (আ.লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন (বিএনপি), রুহুল আমিন (বিএনপি)। মোহনপুর ইউনিয়নে জয়নাল আবেদীন জনি (আ.লীগ), বর্তমান চেয়ারম্যান বিগত নির্বাচনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে বিশাল ভোটের ব্যবধানে পরাজয়বরণকারী মো. খাইরুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ফাক্কার (আ.লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির মোস্তফা হোসেন (বিএনপি)। গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদে প্রভাষক মজিবুর রহমান (আ.লীগ), সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক আমেরী (আওয়ামী লীগ), সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ বিপ্লব (যুবলীগ), বর্তমান চেয়ারম্যান হযরত আলী (বিএনপি), আবদুর রউফ দিলীপ (বিএনপি), পাকড়ী ইউনিয়নে আবদুর রাকিব (আ.লীগ), আলাউদ্দীন আলী স্বপন (আ.লীগ), জিন্নাত আলী (আ.লীগ), বর্তমান চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম (বিএনপি), লুৎফর রহমান মাস্টার (বিএনপি), জলিলুর রহমান বাবু (বিএনপি), আমিনুল ইসলাম (বিএনপি), জামায়াতের সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন। রিশিকুল ইউনিয়নে মুখলেশুর রহমান মুকুল (আওয়ামী লীগ), শফিকুল সরকার (আ.লীগ), রেজাউর রহমান (আওয়ামী লীগ), শহিদুল ইসলাম টুনু (আওয়ামী লীগ), বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আহম্মেদ সরকার (বিএনপি)। মাটিকাটা ইউপি নির্বাচনে ফিরোজ সরকার (আ.লীগ), মনিরুল ইসলাম (উজ্জ্বল) (আ.লীগ), মাসাউল হক (আ.লীগ), নয়ন সরকার (আ.লীগ), মইদুর রহমান আপেল (আওয়ামী লীগ), শাহিনুজ্জামান শাহিন (আ.লীগ), মাহাবুবুর রহমান টিয়া (আওয়ামী লীগ), আশরাফুল ইসলাম (আ.লীগ), তৌহিদুর রহমান তোহিদ (বিএনপি), তাজমিলুর রহমান শৈলী (বিএনপি), বর্তমান চেয়ারম্যান মাওলানা নুরুল ইসলাম (জামায়াত)। দেওপাড়া ইউনিয়ন বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান (আ.লীগ), অধ্যক্ষ রেজাউল করিম (আ.লীগ), কৃষ্ণ দেবী (মহিলা লীগ), নাসিরুদ্দীন বাবু (বিএনপি), সদর উদ্দীন (বিএনপি), দুলাল উদ্দীন (বিএনপি), রবিউল আওয়াল (বিএনপি)। বাসুদেবপুর ইউনিয়নে একরামুল হক মাস্টার (আ.লীগ), নজরুল ইসলাম (আ.লীগ), বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বেবী (বিএনপি), নুর আকতার আলী (বিএনপি), মাহতাব আলী (জামায়াত)। চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নে আ.লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ (আ.লীগ), মহাম্মদ আলী চান (আ.লীগ), মনিরুল ইসলাম (আ.লীগ), বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস (বিএনপি), সাবেক চেয়ারম্যান পাঞ্জাব আলী (বিএনপি)। সৎ, যোগ্য ও এলাকার উন্নয়ন যে করবেন এমন প্রার্থীকে চেয়ারম্যান হিসেবে বেছে নেবেন ভোটাররা। এদিকে প্রার্থী বাছাইয়ে ক্ষমতাসীন আ.লীগের জেলা-উপজেলা নেতারা তৃণমূল নেতাদের মতামত নেওয়া শুরু করেছেন। উপজেলা সেক্রেটারি আবদুর রশিদ বলেন, এলাকার মানুষ পৌর নির্বাচনের মতো উন্নয়নের মার্কা নৌকায় ভোট দিয়ে সবকটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন। বিএনপি নেতাদের বক্তব্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সবকটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা জয়লাভ করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।