বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশের লাইফ লাইন লাইফ হিসেবে খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রামে মহাসড়কের ফেনীর ২০ কিলোমিটার এখন বিষফোড় হিসেবে দাঁড়িয়েছে। মাত্র ২০ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগে ৫-৬ ঘণ্টা। তাইতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বেও শিক্ষার্থী নাজিফা তাসনীন তিশা তার ফেইজবুক ওয়ালে লিখেছেন ‘অতঃপর ঘরে ফেরার কাহিনী, ১৯ এপ্রিল ঢাকা থেকে ফেনীর উদ্দেশ্যে বাস ছাড়ে বিকাল তিনটায়। আমি ফেনী ট্রাংক রোডে পা রাখি যখন, তখন ২০ তারিখ হয়ে গেছে। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২ টা। ঢাকা থেকে একটানে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌঁছে যাই বিকেল সাড়ে পাঁচটার মাঝেই। চৌদ্দগ্রাম থেকে ফেনীর মহীপালে স্বাভাবিক দিনে ২০ মিনিটের রাস্তাটা কাল জ্যামের দিনে আসতে লেগেছে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা’। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ভোগের এমন গল্প শুধু তিশারই নয়-এ পথে যাতায়াত করা প্রতিটি যাত্রীর। ঢাকা থেকে ফেনী ৩/৪ ঘন্টার পথ পাড়ি দিতে এখন সময় লাগে ১০/১১ ঘন্টা।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টা থেকে বিকাল ৪টা পযন্ত সড়কের বিভিন্ন এলাকায় সরে জমিনে গিয়েও দেখা যায় এ চিত্র। যাত্রী এবং গাড়ীর চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায় মহাসড়কে ফেনীর মোহাম্মদ আলী থেকে লালপুল প্রায় ২০ কিলোমিটার এ রাস্তায় প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয় তাদের। এতে নষ্ট হয় কর্মঘন্টা,পোহাতে হয় দুর্ভোগ। যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় এম্বুলেন্সের রোগীদেরও। দ‚রপাল্লার বাস-কাভার্ডব্যানসহ একাদিক পরিবহনের যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহা সড়কের এ অংশের যানজটের মুল কারণ ফতেহপুর এলাকার রেল ক্রসিংয়ের ওভারপাসের নির্মাণ কাজ।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যানজট নিরসনে মহাসড়কের এ অংশে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওভারপাসটির কাজ শুরু হয় ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রায় ১শ’ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় শিপু বিপিএল নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দায়িত্ব পেয়ে তিন বছরের মাথায় কাজের অর্ধেকটাও শেষ করতে না পারায় ৬০ কোটি ৫১ লাখ ১৮ টাকা ব্যায়ে নতুন করে দায়িত্ব পায় আল আমিন কনস্ট্রাকশন নামের আরেকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
গেল বছরের মার্চ মাস থেকে তারা কাজের দায়িত্ব পাওয়ার পর কাজের কিছুটা অগ্রগতি আসলেও যানজট লেগেইে আছে। কারণ নির্মাণ কাজের জন্য ফোর লেনের দুই লেনই ব্যবহার হচ্ছেনা পরিবহন চলাচলের কাজে। দীর্ঘ ৫ বছর অতিক্রম করলেও শেষ হয়নি ওভারপাসটির নিমার্ণ কাজ, যার কারণে মহাসড়কের ফেনী অংশে যানজট এখন নিত্য সঙ্গী।
অপরদিকে, এ পথে যানজটের কারণে ফেনী বিকল্প সড়ক হিসেবে শহরের ট্রাংক রোড় দিয়ে কিছু যান চলাচল করতো। সে সড়কটিতেও এখন মেরামতের কাজ চলাতে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এ পথে চলাচল কারী যাত্রী ও চালকদের দাবি যানজট পুরোপুরি নিরসন করতে না পারলেও তা যেন সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসা যায় তার জন্য উদ্যোগী হবেন কর্তৃপক্ষ। শাহ আলম নামের এক বাস চালক বলেন, ওভারপাসটির এখানে কোন বাইপাস সড়ক তৈরী করা ছাড়াই লাইন বন্ধ করে দিয়ে কাজ করছে, যার কারণে প্রতিদিন তৈরী হচ্ছে যানজট।
আবদুল করিম নামের আরেক কাভার্ডভ্যান চালক দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, চার লেনের গাড়ি যদি দুই লেনে চলে তাহলেতো যানজট হবে। এছাড়া রাস্তার বিভিন্ন অংশে তৈরী হয়েছে খানাখন্দ, সেসব খানাখন্দে গাড়ি বিকল হয়ে পড়ায় মাঝে মাঝে তৈরী হয় যানজট। এদিকে ফেনী মহিপাল হাইওয়ে থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আবদুল আউয়াল জানান, প্রতিদিন মহাসড়কের যানজট নিরসনে পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ সেবা দিতে পারে, কিন্তু রাস্তাতো ঠিক করতে পারেনা। ফতেহপুর রেল ক্রসিং ওভারপাসটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আল আমিন কনস্ট্রাকশনের কাউকে পাওয়া যায়নি বক্তব্য দেয়ার জন্য, নির্মাণ সহযোগী সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের ২০ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের কেউই এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে স¤প্রতি ওভারপাসটি নিমার্ণকাজের অগ্রগতি দেখতে আসেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, চলতি বছরের ১৫মে’র মধ্যে এর কাজ অর্ধেক সম্পন্ন হবে। জুলাইয়ের মধ্যে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গাড়ির চালক ও সাধারণ যাত্রীদের দাবি তাদের যেন অসহনীয় যানজট থেকে রেহায় দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।