পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1722039383](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টানা বৃষ্টিতে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যানবাহন চলাচলে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। দ্রæত সময়ের মধ্যে মহাসড়কে সৃষ্ট হওয়া গর্তগুলো সংস্কার না করা হলে এতে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন মহাসড়কে চলাচলরত চালক ও যাত্রীরা। পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই মহাসড়কে পানিবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
সড়ক ও জনপদ সূত্র জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভারবহন ক্ষমতা ২০২৩ পর্যন্ত ধরা আছে। তবে অত্যধিক ওভারলোডিংয়ের কারণে এখনই ঝুঁকিতে পড়েছে মহাসড়কটি। এছাড়া বৃষ্টিতেও কিছু অংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য নতুন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে বর্ষায় এর পেভমেন্ট কয়েক দফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া মহাসড়কটিতে গড়ে ৩৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে, যার ১০-১৫ হাজারই ট্রাক। এগুলোর অধিকাংশই থাকে অত্যধিক ওভারলোডেড। গত দুই বছরের বর্ষায় সড়কটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। কুমিল্লা অংশের পদুয়ারবাজার, বেলতলী, ঝাগুড়ঝুলি, দুর্গাপুর, আলেখারচর, আমতলী, নিশ্চিন্তপুর, কালাকচুয়া, নিমসার, কোরপাই, চান্দিনা, মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় প্রতিনিয়ত মহাসড়কের উপরের অংশের পাথর ওঠে গেছে। এছাড়াও মহাসড়কের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলো পর্যায়ক্রমে বড় হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বড় দারোগারহাট থেকে ধুমঘাট ব্রিজ পর্যন্ত মহাসড়কের ২৮ কিলোমিটারের বিভিন্ন পয়েন্টে গর্তের সৃষ্টি হয়।
গর্তের কারণে মহাসড়কে দূরপাল্লার গাড়িগুলো চলছে ধীরগতিতে। মহাসড়কে সৃষ্ট গর্তগুলো দ্রæত সময়ের সংস্কার না করা হলে যে কোন মহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওভারলোড গাড়ি চলাচলের কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ উঁচু-নীচু হয়ে যায়। এতে করে মহাসড়কের মাঝখানে পানি জমে যায়। জমে থাকা পানি থেকে মূলত খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সড়ক ও জনপথের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা প্রায় খানাখন্দকগুলোতে পাথর ও বিটুমিনের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেগুলোও দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় কোথাও না কোথাও আবারো খানা-খন্দক সৃষ্টি হচ্ছে নিয়মিত।
এদিকে, মহাসড়ক থেকে বৃষ্টির পানি সরে যেতে পদুয়ারবাজার, কোটবাড়ি, আলেখারচর, আমতলী, নিশ্চিন্তপুর, ময়নামতি সেনানিবাস, নাজিরাবাজার এলাকায় ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। অবৈধভাবে গড়ে উঠা এসব দোকানের উচ্ছিষ্ট খাবারসহ সব বর্জ্য মহাসড়কের ওপর কিংবা ড্রেনে ফেলা হচ্ছে। এতে ড্রেন বন্ধ থাকায় পানি জমে থাকছে মহাসড়কে। বৃষ্টির সময় মহাসড়কে চালকদের অসুবিধা সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহনের গতি কমাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। মহাসড়কে চলাচলরতর যাত্রী ও চালকরা বলছেন, মহাসড়টি আবারও সেই চিরচেনা রূপে ফিরে গেল। কিছুদূর পরপর খানাখন্দক। আর কতটুকু যেতেই পরপর দেবে যাওয়া চিহ্ন। উঁচু আর নিচুতে হেলেদুলে চলছে গাড়ি। একদিকে সংস্কার কাজ শেষ করে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আবারো ওই একই স্থানে খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝেও তীব্র ক্ষোভ। গত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় এই মহাসড়কের বিভিন্ন অংশের নানাস্থানে অসংখ্য খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় প্রায়ই কোথাও না কোথাও বিকল হচ্ছে যানবাহন। ফলে সৃষ্ট হচ্ছে যানজটের। অভিযোগ রয়েছে কাজের বরাদ্দের অধিকাংশ অর্থ লুটেপুটে লোক দেখানো সংস্কার করছে। আর এতে বছরজুড়ে জনদুর্ভোগ ব্যস্ততম মহাসড়কটিতে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহনের অসংখ্য যাত্রীসহ চালকদের।
মহাসড়কে চলাচলরত গ্রীন লাইন পরিবহনের চালক মমতাজ উদ্দিন জানান, মহাসড়কের কুমিল্লা ও ফেনী অংশের বিভিন্ন স্থানে পাথর উঠে গেছে। কোনো কোনো স্থানে ছোট-বড় গর্ত। বৃষ্টির সময় সড়কে পানি জমে থাকায় গাড়ির গতি কমাতে বাধ্য হন তারা। এতে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন না। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, মহাসড়ক সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মেরামতের স্বল্পসময়ের ব্যবধানে ব্যয়বহুল সড়কটির বারবার সংস্কারের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
তবে অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু নজরদারির অভাবে ঠিকাদাররা নামমাত্র কাজ করছে। এতে কাজের স্বল্প সময়ের ব্যবধানে সড়কের চিত্র পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। জনসাধারণ ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ কিছুতেই কমছে না। মাঝে কাজের নামে অনিয়ম হওয়ায় সরকারের বিপুল অঙ্কের টাকা লুটপাটসহ উন্নয়নে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এই যখন অবস্থা তখন মহাসড়কে খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় সাধারন মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, মহাসড়কের ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই মহাসড়কে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আর বড় বড় গর্তেও সৃষ্টি হয়ে প্রায়ই যানবাহন বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে। এছাড়াও সড়ক বিভাগের অধীন মহাসড়কের উপর অগনিত লেগুনা স্ট্যান্ডসহ সড়কের পাশে অসংখ্য ভাসমান দোকান চালু করায় সেনানিবাস এলাকায় প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে, পাশাপাশি পথচারীদের চলাচলেও দুর্ভোগ হচ্ছে।
জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মহাসড়কে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে খানাখন্দের বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে তিনি অবহিত করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, টানা বৃষ্টির ফলে মহাসড়কের কিছু কিছু অংশে এমন খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তা অচিরেই সংস্কার করা হবে। তবে সড়কের পাশে জলাবদ্ধতার বিষয়ে জানান, এটা সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা সওজের সেই জনবল নেই, রাস্তার পাশের ড্রেন পরিষ্কার করে পানি নিষ্কাশন স্বাভাবিক রাখার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।