Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৫ ঘণ্টা অবরোধ সংঘর্ষ টিয়ারশেল

উচ্ছেদের প্রতিবাদে জঙ্গল সলিমপুরবাসীর বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও সীতাকুণ্ড সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম নগরীর অদূরে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় সরকারের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে অবৈধ বসতি উচ্ছেদে প্রশাসনের অভিযানের প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৫ ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা। পরে তারা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে সন্ধ্যা নাগাদ যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুইদিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারি যানবাহনসহ শত শত গণপরিবহন আটকা পড়ে। তাতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। অবরোধের ফলে অন্তত ১০টি অ্যাম্বুলেন্সে রোগীরা আটকা পড়েন। দুপুরে মহাসড়কের ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন জঙ্গল সলিমপুরের বাসিন্দা কয়েক হাজার নারী-পুরুষ। এতে মহাসড়েক অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়ে যায়।

পাহাড়, বন, জঙ্গলে ঘেরা জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় খাস জমিতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, স্পোর্টস ভিলেজ, ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আইকনিক মসজিদ, নাইট সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনা করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকার বিভিন্ন অংশে টানা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। সরকারি খাস জমি, পাহাড় ও বনভূমি উজাড় করে ভূমিদস্যুরা এসব এলাকায় অবৈধ বসতি গড়ে তোলে। সাধারণ লোকজন ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকায় ওই এলাকায় প্লট কিনে বসতি গড়ে তোলে। অপরাধীদের নিরাপদ অভয়ারণ্য হিসাবে চিহ্নিত হয় পুরো জঙ্গল সলিমপুর এলাকা। সেখানে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে রাস্তায় নামে স্থানীয়রা।

আন্দোলনকারীদের দাবি, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় উচ্ছেদ করা বসতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি যে জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, সেই জমি তাদের সরকারিভাবে বন্দোবস্ত দিতে হবে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। তবে প্রশাসনের তরফে বলা হয়, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। লোডশেডিংয়ের কারণে সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম সাংবাদিকদের জানান, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এমন অভিযোগে রাস্তায় নেমে পড়ে স্থানীয়রা। শুরুতে তারা বায়েজিদ লিংক রোডের এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। পরে তারা ফৌজদারহাট এলাকায় গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। চার লেনের মহাসড়কের দুই পাশই অবরুদ্ধ থাকায় ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, লরি, ব্যক্তিগত যানবাহন আটকা পড়ে।

তিনি জানান, অবরোধ শুরুর পরপরই পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সীতাকুণ্ডের ইউএনও শাহাদাত হোসেন বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন এবং তাদের অবরোধ উঠিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু তারপর আরো দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অবরোধকারীরা না সরায় বিআইটিআইডি মোড়ের কাছে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীদেরও এ সময় পুলিশের সঙ্গে দেখা যায়। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিক্ষোভকারীদের একাংশ বায়েজিদ লিংক রোডের দিকে চলে গেলেও আরেকটি অংশ সংঘর্ষে জড়ায়। তারা পুলিশের দিকে ঢিল ছুঁড়তে শুরু করলে বেশ কিছুক্ষণ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরানোর পর বেলা পৌনে ৫টায় মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

১৯ অক্টোবর, ২০২১
২৩ জুন, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ