Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে অর্ধশতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক : বাড়ছে দুর্ভোগ, দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি

কক্সবাজার থেকে শামসুল হক শারেক | প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক এখন উভয়মুখী যাত্রীদের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কোথাও ডানে মোড়, আঁকা বাঁকা রাস্তা বা সতর্কীকরণ চিহ্ন না থাকায় প্রায়শ এসব এলাকায় দ্রæতগামী যানবাহন ও মালবাহী গাড়ী কোন না কোন ভাবেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। হতাহতের ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিন।
সরেজমিনে টেকনাফ-কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় মহাসড়কে ছোট বড় প্রায় অসংখ্য টেকবাঁক রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক বাঁক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষকরে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের পথে খরুলিয়া, বাংলাবাজার, রামু, পানিরছড়া, জোয়ারিয়ানালা, ঈদগাঁও বাসস্টেশন, ফকিরাবাজার, নাপিতখালী, মেধাকচ্ছপিয়া, ডুলাহাজারা, মালুমঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ টেক রয়েছে। ওদিকে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত চেইন্দা, পানেরছড়া, ধুরুংখালী, পালংখালীর গয়ালমারা, লম্বাবিল ছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে অনেক।
দূর থেকে এসব টেক-বাঁকগুলি দেখা না যাওয়ার কারণে এই সকল টেকবাঁকে যানবাহন চলচলের সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঘটে থাকে। তাছাড়া মহাসড়কে অধিক বাঁকের পাশাপাশি প্রায় ডজনাধিকের মত হাটবাজার থাকায় এটি উভয়মুখী গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, লিংকরোড, খরুলিয়া, পানিরছড়া, কালিরছড়া, ঈদগাঁও, ফকিরা বাজার, নাপিতখালী বটতল, নতুন অফিস, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, মালুমঘাটসহ আরো অনেক। ওদিকে কোর্টবাজার, মরিচ্যাবাজার, উকিয়ার দরোগা বাজার, কুতুপালং, থাইন খালী, পালংখালী ও হোয়াইক্যং বাজারই গড়ে উঠেছে মহাসরক কেন্দ্রীক।
এসব স্টেশন ও বাজারে নানা যানবাহন দাঁড় করানোর কারণে যানজটের কবলে পড়তে হয় দীর্ঘক্ষণ। এতে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রকন্যা ককসবাজারে পর্যটকদেরকে অযথা সময় নষ্ট করত হয় মহাসড়কের উপর। দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হচ্ছে নিদিষ্ট স্থানে পৌঁছতে। দেখা যায়, উল্লিখিত টেক-বাঁকে প্রতিনয়ত প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটছে প্রতিনয়ত। তৎমধ্যে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা টেক বা বাঁকে অতিক্রম করার সময় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। এদিকে চট্টগ্রাম-ককসবাজার-মহাসড়কের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পর্যটন শহর কক্সবাজারে নানা স্থরের মানুষের যাতায়াত বেড়েছে কয়েকগুণ । সা¤প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ইস্যুক কেন্দ্র করে আরো বেড়েছে এই সরকের ব্যস্ততা।
ব্যস্ত মহাসড়ক হিসাবে পরিচিতি পেলেও টেক-বাঁক ও ষ্টেশন ভিত্তিক বাজার এবং ঝুঁকিপূর্ণ অংশের কোনভাবেই কাজ করা হচ্ছেনা এখনো। কয়েকজন যানবাহন চালক জানান, ককসবাজার সদরের ইসলামপুরের নাপিতখালী মোড়ের বাঁকটি অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রæতগতিতে যানবাহন চালিয়ে আসলে সহজে গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়না। ঢাকা ও চট্রগ্রাম থেকে আসা বেশ কজন পর্যটক জানান, চট্রগ্রাম – ককসবাজার মহাসড়কের কোথাও বাঁক-টেকে সতর্কীকরণ চিহৃ দ্বারা সাইনবোর্ড না থাকায় দূর্ঘটনা বেশিভাগই ঘটে চলছে। খুটাখালীর প্রাক্তন ব্রাক শিক্ষা কর্মকতা মীর মোহাম্মদ নোমান জানান, মহাসড়ক কিংবা গ্রামীন সড়কে টেকঁবাকের কারনে সাধারন মানুষজনের রাস্তা পারাপারে দারুন ভাবে ব্যাঘাত করছে। ছোট বড় দূর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলছে। এমনকি সড়কের পাশে গড়ে উঠা বাজারগুলোতে নিদিষ্ট পরিমান জায়গা খালী না রেখে ভ্রাম্যমান দোকানের পসরা বসার কারনে যানবাহন ও সর্বশ্রেনী পেশার লোকজনের ভোগান্তি দ্বিগুন আকারে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তবে এলাকার লোকজনের দাবী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি টেক বাঁকে সতর্কীকরণ চিহ্ন বসায় এবং পার্শ্ববর্তী স্থাপনা বা পাহাড় কেটে প্রতিবন্ধকতা দূর করে তাহলে দূর্ঘটনা থেকে উভয়দিকের লোকজন রক্ষা পাবেন।
সড়ক জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে এই মহাসড়ক অনেক আগের। এসব টেক- বাঁক সোজা করার প্রয়োজন হলেও বাস্তবে তা হচ্ছেনা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্ঘটনা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ