Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আসিফার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

[অভিযুক্তদের পক্ষে র‌্যালি করেছিল দ্য জম্মু বার অ্যাসোসিয়েশন। অভিযোগপত্র দায়েরে বাধাও দিয়েছিল। পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়েছে জম্মু বার অ্যাসোসিয়েশন। এ ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করে ১২ দিনের ধর্মঘটও পালন করছেন আইনজীবীরা।]
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জম্মু ও কাশ্মিরের প্রাদেশিক সরকারকে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ৮ বছর বয়সী শিশু আসিফার পরিবার ও তাদের আইনজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছে। সোমবার আসিফার বাবা নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা জানিয়ে মামলাটি কাশ্মির আদালত থেকে সরিয়ে চন্দ্রিগড় আদালতে স্থানান্তরে আবেদন জানালে আদালত এসব আদেশ দেয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে মামলা স্থানান্তরে প্রাদেশিক সরকারের মতামত চেয়েছে আদালত।
এ বছরের মধ্য জানুয়ারিতে কাশ্মিরের কাঠুয়ার উপত্যকায় ঘোড়া চড়ানোর সময় অপহৃত হয় আসিফা। মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র জনসম্মুখে আনা হলে বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে সারা ভারত। আদালতে দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই শিশুকে অপহরণের জন্য অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও দেবীস্থান মন্দিদের হেফাজতকারী সানজি রাম তার ভাগেড়ব ও একজন পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দেয়। নির্দেশ বাস্তবায়নের পর সাত দিন ধরে মন্দিরে আটকে রেখে একদল হিন্দু পুরুষ ধর্ষণ করে আসিফাকে। পরে মাথায় পাথর মেরে ও গলা টিপে হত্যা করা হয় তাকে। আসিফাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটজনকে অভিযুক্ত করেছে ভারতের আদালত। সোমবার থেকে কাশ্মিরের কাঠুয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এসব অপরাধীর বিচার কাজ শুরু হয়েছে।
একই দিন ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা জানিয়ে মামলা স্থানান্তরের আবেদন জানায় আসিফার বাবা। আগের দিন এই মামলার আইনজীবী দীপিকা এস রাজাওয়াত। রবিবার এনডিটিভির কাছে তিনি অভিযোগ করেন, তাকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলেছেন এই মামলায় আসিফার পরিবারের অপর আইনজীবী তালিব হুসেইনও। সোমবার আসিফার পরিবাবের পাশাপাশি তাদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত এই মামলার অভিযোগ প্রমাণে রাজ্য পুলিশের তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসিফার বাবা। তবে অভিযুক্তদের নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে করা সিবিআইয়ের নারকো পরীক্ষার আবেদনের বিরোধিতা করেন।
উল্লেখ্য, নারকো এনালাইসিসের ক্ষেত্রে সড়বায়ু শিথিলকারী সোডিয়াম পেন্টোথাল অথবা স্কোপোলামাইন ধরনের ওষুধ ব্যবহৃত হয়। অভিযুক্ত অথবা সন্দেহভাজন ব্যক্তির শিরায় সিরিঞ্জের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। এর প্রভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তি আধা সচেতন এবং আধা অচেতন অবস্থায় থাকে; তাকে তখন একের পর এক প্রশড়ব করা হতে থাকে। ঘোরের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রশেড়বর উত্তর দিতে থাকে সে। এগুলোকে তার অবচেতন মনের গোপন কথা বলে ধরে নিয়ে উত্তরগুলোকে সত্য বলে ধারণা করা হয়।
কাঠুয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সঞ্জয় গুপ্তের আদালতে সোমবার সাত আসামিকে হাজির করা হয়। নিজেদের নির্দোষ দাবি করে নারকো পরীক্ষার আবেদন জানালে আদালত ২৮ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। মামলার অপর আসামি অভিযুক্ত কিশোর আলাদাভাবে জামিন চাইলে ২৬ এপ্রিল সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছে আদালত। সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের আদালত থেকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। আসিফাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখার জের ধরে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মাহবুবা মুফতি সরকারের শিল্পমন্ত্রী চন্দ্র প্রকাশ গঙ্গা এবং বনমন্ত্রী লাল সিং। অভিযুক্তদের পক্ষে ১২ দিনের ধর্মঘট পালন করছেন দ্য জম্মু বার অ্যাসোসিয়েশন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ