বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্ত:নদী সংযোগ ঐতিহ্যবাহী বেনাপোাল হাওড় নদীটি এখন প্রভাবশালীদের দখলে। অনেকেই নদী দখল করে বড় বড় বাড়ি নির্মাণ করেছে, অনেকে আবার মাছ চাষের জন্য ঘের তৈরী করেছে। নিরাপদ পানি সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই হাওড় নদীটি সংস্কার করে বেনাপোলে লেগ সিটি নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন বন্দরবাসী।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পার্শ্বেই দুইশ’ গজ অদূরে হাওড় নদীটি পূর্ব পাকিস্থানের সময়ে ছিল ভারতের গঙ্গা, ইছামতি, ফারাক্কা ও কুদলা নদীর সঙ্গে সীমান্ড সংযুক্ত নদী। বাংলাদেশের কপোতাক্ষ রূপসা বেতনা ও কুদলা নদীর মহামিলন ক্ষেত্র। বেনাপোল সীমান্ত সংযুক্ত নদীটি দিয়ে ভরত বাংলাদেশের মধ্যে চলাচল করত লঞ্চ, স্টিমার, জাহাড় ও রং বেরংঙের পাল তোলা নৌকা। দেশের মধ্যে অবাধ বাণিজ্যসহ নদীটি মৎস্য, কৃষি ও ব্যবসায়ীদের জীবন জীবিকার উৎস ছিল। বিশাল পরিসরের নদীটির দু পাড়ে গড়ে ওঠে সবুজ বেস্টনী ঘেরা কৃষি পল্লী। সাদিপুর, ধান্যখোলা, কাগজপুকুর, নাভারন, ঝিকরগাছা অসংখ্য গ্রাম গড়ে ওঠে। কালের বিবর্তে নদীটি সরু খালে পরিণত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীতে নদীকে ঘিরে শুর হয় অপ-দখলের পায়তারা। আজ বিশাল নদীটি মৎস্য ঘেরে পরিণত হয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিক পালাবদলে এলাকারপ্রভাবশালী মহল জবরদখল করে সোতবাহী পানি চ্যানেল বন্ধ করে পুকুর, ঘের ও বড় বড় বাড়ি নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে প্রকৃতির জোয়ার ভাটা। একইভাবে ওপারে ভারতের পেট্রাপোল এলাকায় বেড়ীবাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভূয়া জাল দলিল করে নিজেদের নামে করে মৃতপ্রায় হাওড় নদীটির দুইপাশে গড়ে তোলা হয় বড় বড় অট্টালিকা। মানবসৃষ্ট বেড়ীবাঁধে নদীর গতিপ্রকৃতি হারিয়ে স্রোতপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ এন্টি ড্রাগস সংগঠনের সাবেক সভাপতি লায়ন বেনাপোলের আলীকদর সাগর জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে হাওড় নদী থেকে হাকর নদীতে পরিণত নদীটি দখলমুক্ত করতে সরকার প্রকল্প শুর হলেও পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান মহাজোট সরকারের নৌ পরিবহম মন্ত্রী, স্থানীয় সাংসদ ও মেয়র হাওড় নদীটি দখলমুক্ত করে লেগ সিটি নির্মাণে পরিকল্পনায় কয়েক দফায় পরিদর্শন করেছেন।
স্থলবন্দর বেনাপোলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নদীটি দখলমুক্ত করার বিকল্প নেই। আন্ত:সীমান্ত সংলগড়ব নদী ও খাল ভরাট হয়ে তার নাব্য হারিয়েছে। শুষ্ক মৌশমে পানি শুন্যতা ও বর্ষা মৌশমে বন্যায় রুপ নেওয়াই কৃষি ও অর্থনীতিতে পড়েছে বিরূপ প্রভাব। সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের অভাবে দেশ পড়ছে হুমকির মুখে। জল্পনা কল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে খাল নদী সংষ্কারের কাজ। ভারত বাংলাদেশী সংলগ্ন বেনাপোলে ও যশোরসহ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলেরপ্রায় ২০টি নদী ও খাল, কপোতাক্ষ, বেতনা, কুদলা, ইছামতি, ভৈরব, নালুয়া, অসংখ্য নদতী খাল শুকিয়ে মৃত প্রায়। বেড়ীবাধ দিয়ে অনেক স্থানে হচ্ছে মাছ চাষ। নাব্য হরিয়ে এসব নদী খাল আবাদী জমি ও খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। ভৈরব নদী মেহেরপুর থেকে ১৮৪ কিলোমিটার গিয়ে খুলনার আঠারো বেকী নদীতে মিশেছে। কপোতাক্ষ ভৈরব থেকে ২৬০ কিলোমিটার যেয়ে তালায় মিশেছে। বেতনা যশোরের নাভারন থেকে ১৯৬ কিলোমিটার মরিচাপ নদীতে মিশেছে। সরকারের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নেই দেশ ও পরিবেশ, অর্থনীতি, প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষা করা সম্ভব বলে অভিজ্ঞজনেরা জানান। শার্শা উপজেলা নির্বাহি অফিসার পুলক কুমার মন্ডল জানান, হাওড় নদী কারা কারা দখল করেছে তার তালিকা ইতিমধ্যে সম্পনড়ব করা হযেছে। অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।