Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে টোল দিতে হবে

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মহাসড়ক : প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ১৮৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঢাকা-মাওয়া চার লেন মহাসড়কে টোল আরোপ করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মতো এ মহাসড়ক ব্যবহার করলে টোল দিতে হবে। স¤প্রতি ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চার লেন প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বিষয়টি উঠে আসে। এতে করে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক হবে দেশের প্রথম টোলযুক্ত সড়ক বা মহাসড়ক। এদিকে, চার লেনের এই মহাসড়ক হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল মহাসড়ক। ২০১৬ সালে সংসদীয় কমিটিতে জমা দেওয়া সওজের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত এলেঙ্গা-রংপুর চার লেন প্রকল্পে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইল হয়ে এলেঙ্গা চার লেনে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হচ্ছে ৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনে কিলোমিটারপ্রতি গড় ব্যয় ১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পে এই ব্যয় ২০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এতে আরও বলা হয়, ইউরোপে চার লেনের নতুন মহাসড়ক নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়ছে ২৮ কোটি টাকা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এ ব্যয় ১০ কোটি টাকা। আর চীনে তা গড়ে ১৩ কোটি টাকা। অথচ ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হবে ১৮৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এ কারনে বলা যায়, ঢাকা-মাওয়া চার লেন মহাসড়কটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মহাসড়ক। ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয় ২০১৬ সালের মে মাসে। সে সময় এর ব্যয় ছিল ৬ হাজার ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যদিও অনুমোদনের ৬ মাসের মধ্যেই তা আরও ৬০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ এ ব্যয় বাড়িয়ে ১০ হাজার ৮৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ১৮৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, আগে যা ছিল ১২৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ মার্চ প্রকল্পটির স্টিয়ারিং কমিটির সভা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) অনুষ্ঠিত হয়। এতে বলা হয়, প্রস্তাবিত মহাসড়কটিতে দুটি টোল প্লাজার সংস্থান রাখা হয়েছে। অন্যদিকে নির্মাণাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতুর টোল প্লাজা রয়েছে। সময় সাশ্রয়ের নিমিত্তে একটি সমন্বিত টোল প্লাজা করা যায় কিনা, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট মতামত নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে থাকা প্রয়োজন। এছাড়া কার্ড পাঞ্চ বা ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সুবিধার মাধ্যমে টোল আদায়ের ব্যবস্থা করা যায় কিনা, সে বিষয়ে মতামত প্রদান করতে হবে। টোল সড়ক হওয়ায় এটির দুই পাশ উম্মুক্ত থাকবে না। তাই বৈঠকে বলা হয়, মহাসড়কটির দুই পাশের জনগণকে একপাশ থেকে অন্য পাশে যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ রাখা দরকার। এছাড়া পূর্ব-পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকার জনগণের সহজে যাতায়াতের জন্য ধোলাইপাড়ের শেষ প্রান্ত ও সড়কের শুরুর অংশে একটি ইন্টারসেকশন রাখা প্রয়োজন। বিষয়গুলো যাচাই-বাছাইপূর্বক মতামত প্রদানের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া বর্ধিত সময়ে কাজ শেষ হবে কিনা, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কাজের গুণগত মান নিশ্চিতের সুপারিশও করা হয়।
এদিকে, প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবে ছয়টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলোÑপ্রকল্পের কর্ম পরিধি বৃদ্ধি, ম্যাটেরিয়ালের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি, ফাউন্ডেশন ও মাটির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অতিরিক্ত অর্থবরাদ্দ, ১৩ শতাংশ আয়কর ও ভ্যাট, জমি অধিগ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং ইউটিলিটি (পরিষেবা সংযোগ লাইন) প্রতিস্থাপন খাতে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তা। এতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটিতে ৬০ দশমিক ৩৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করার কথা ছিল। তবে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০ একর। এর মধ্যে ২১ দশমিক ১১ একর বেসরকারি খাত ও আট দশমিক ৩৬ একর সরকারি অন্যান্য বিভাগ থেকে স্থানান্তর করা হবে। যদিও জমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ ছিল ৭৫০ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়াবে এক হাজার ১৯৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এতে ৪৪৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চার লেন নির্মাণে ২০১৫ সালের অক্টোবরে ব্যয় ধরা হয় পাঁচ হাজার ২৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। তবে অনুমোদনের আগেই দুই দফা বাড়ানো হয় প্রকল্প ব্যয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনকালে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়ায় ৬ হাজার ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। পরে জমি অধিগ্রহণ ব্যয় বৃদ্ধির যুক্তিতে তা বেড়ে হয় ৬ হাজার ৮৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর এবার ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১০ হাজার ৮৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা।



 

Show all comments
  • Khandaker Momin ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ৪:২৩ এএম says : 0
    kajgulo jano thik vabe hoy
    Total Reply(0) Reply
  • Mostofa Razz ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:০৭ পিএম says : 0
    লুটপাট কাকে বলে বুঝেছি,, ভারতে চার লেনে ১০ কোটি, কিমি, চিনে ১৩ কোটি, ইউরোপে গড়ে ২৮ কোটি প্রতি কিমিতে,, আমাদের মাওয়া সড়কে মাত্র ১৮৪ কোটি প্রতি কিমি তে
    Total Reply(0) Reply
  • S M Mizanur Rahman ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:০৭ পিএম says : 0
    It will be diamond made road !!!!!!!!!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Sumon ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:০৮ পিএম says : 0
    রাস্তা কি সোনা দিয়ে বানাইতাছে ..................
    Total Reply(0) Reply
  • Biplob ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:০৮ পিএম says : 0
    যেখা‌নে সেখা‌নেই টোল ব্যবস্থা জনগ‌ণের ক‌ষ্টের কারণ নয় কি?
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan Tarek ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:০৯ পিএম says : 0
    এভাবে এই দেশ টাকে আর ধংস করবেন না।
    Total Reply(0) Reply
  • Al-amin Hossain Jewel ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:১১ পিএম says : 0
    কিছুদিন পর বাংলার মানুষ ........ দিতে টাকা লাগবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Hossen ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:১৪ পিএম says : 0
    Roll model Of Development
    Total Reply(0) Reply
  • Al-amin Raktim ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:১৫ পিএম says : 0
    Emn onek kisui hobe ja keu vabeni nd dekheni age
    Total Reply(0) Reply
  • Habib Mohammed ৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১:১৬ পিএম says : 0
    যদি দূর্নীতি করে এর বিচার এক দিন হবে ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহাসড়ক

২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
২১ ডিসেম্বর, ২০২২
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ