Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নবাবগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে উটপাখি পালন

নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলা হয়েছে উটপাখির খামার। উপজেলার গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের মালিপাড়া (নয়াপাড়া) গ্রামে এ খামারটি গড়েছেন নবাবগঞ্জ উপজেলা সদরের আ. জলিলের মেয়ে আরজুমান আরা। খামারের নাম রেখেছেন ইকো-এগ্রো ফার্ম। দেশের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে প্রদর্শনের জন্য বা কোনো প্রতিষ্ঠানে গবেষণার জন্য উটপাখি থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে দেশের কোথাও উটপাখি পালন হয় না। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার মাদার ব্রিডার ফার্ম থেকে ২৪টি উটপাখির বাচ্চা তিন লাখ ৬০ হাজার টাকায় আমদানি করেন এবং উটপাখিগুলো তিনি ইকো-ফার্মে পালন শুরু করেন। এই ফার্মে উটপাখিগুলোর বর্তমান বয়স ছয়মাস এবং ওজন হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ কেজি। আরজুমান আরা বলেন, কিছুদিন আগে একটি উটপাখি জবাই করা হয়েছিল, তাতে প্রায় ৪০ কেজি গোশত হয়েছে।
এ ব্যাপারে আরজুমান আরো জানান, গরু-ছাগলের বিকল্প হিসেবে তিনি উটপাখি পালন করছেন। তার ভাষায় একটি গরু বছরে একটি মাত্র বাছুর দেয়। আর একটি উটপাখি বছরে প্রায় ৫০ থেকে ৭০টি ডিম দিয়ে থাকে, যা থেকে কমপক্ষে ৫০টি বাচ্চা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার মতে কোলেস্টেরল মুক্ত বর্তমানে উটপাখির গোশতের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রতি কেজি ৯০ ডলার। খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু। উটপাখি একটানা ৭০ কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে পারে। সাধারণত এরা আড়াই থেকে তিন বছর বয়সে ডিম দেয়া শুরু করে। এদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সবজি এবং ফিড। উদ্যোক্তা জানান, ‘আমার খামারে নিজস্ব ডিম ফুটানো মেশিন আছে, তাই উটপাখির ডিম আমার খামারের নিজস্ব মেশিনে বাচ্চা ফুটানোর পর এক একটি বাচ্চা ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে বলে আমি মনে করি’।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাসিরুল ইসলাম জানান, উটপাখি পালনে তারা চিকিৎসাসেবাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তার ভাষায়, উটপাখি পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। কেন উটপাখির খামার করলেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে আরজুমান আরা জানান, তিনি মালয়েশিয়া ও নেপাল সফর করেছেন। সেখানে উটপাখি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেন। আর তিনি মনে করেন, অন্যান্য ব্যবসার চেয়ে এ ব্যবসায় বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব এবং এর খাদ্য খুব সহজলভ্য হওয়ায় তিনি উটপাখির খামার করতে আগ্রহী হয়ে উঠেন। উল্লেখ্য, আরজুমান আরা ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস থেকে মাত্র ১০০ টার্কি মুরগি দিয়ে খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে টার্কি মুরগি রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। এই খামারের পাশাপাশি তিনি উটপাখির খামার গড়ে তুলেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে এই আরজুমান আরাকে বিশেষ সম্মাননা সনদ উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদফতর কর্তৃক দেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাণিজ্যিক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ