Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্কুল কমিটির নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা

আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আশুলিয়ায় একটি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই নিরাপত্তা এবং স্কুলটির চার শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা। সরেজমিনে আশুলিয়ার শিমুলিয়ার ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, আগামী ৩১ মার্চ ওই বিদ্যালয়ের অভিবাবক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষ্যে অভিভাবকদের মধ্য থেকে সদস্য প্রার্থীরা গত ১২ মার্চ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মনোনয়নপত্র কিনে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু শিমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জসিম খানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী তিন সদস্যকে জোরপূর্বক নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর হুমকি ও তাদের জমাকৃত টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোহাইলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান মিলন বলেন, আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হওয়ায় মানুষকে মানুষ মনে করেন না। গত ১২ তারিখে আমাদের নির্বাচনের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিলো। ওই দিন জসিম খান বিদ্যালয়ে এসে শ্রী তুষ্ট সরকার ও রোবায়েত করিম মিলন নামে দুই সদস্য প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেবেনা জানিয়ে তাদের জমাকৃত টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানায়। এসময় প্রার্থী ছাড়া টাকা দেয়া যাবেনা বলে জানালে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। বিদ্যালয়ের কেরানী আতিকুর রহমান জানান, জসিম খান নিজের রাস্তা পরিস্কার করার জন্য জোরপূর্বকভাবে তিন সদস্যকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করিয়ে তাদের ফরমের জন্য জমাকৃত টাকা তুলে নিতে আসে। এসময় প্রধান শিক্ষক প্রার্থী ছাড়া টাকা দিতে না চাইলে তাকে লাঞ্চিত করেন। পরে তিনি আমার কাছে এসে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজে স্বাক্ষর করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এর আগেও সে আরও এক সদস্যের টাকা নিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক জানান, নির্বাচনে নিজের রাস্তা পরিস্কার করার জন্য এই ষড়যন্ত্রমুলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে যাচ্ছে। তার বিপক্ষের প্রার্থীদের জোর করিয়ে সড়িয়ে দেয় জসিম। এরই মধ্যে নিজের রাস্তার পরিস্কার করে খুশিতে মিষ্টি বিতরনও করেছে জসিম। মোঃ জাহাঙ্গির আলম নামে এক শিক্ষক অভিযোগ করেন, ইতিমধ্যে নির্বাচনের জন্য দুটি প্যানেল হয়েছিল। কিন্তু জসিম খান তার প্যানেলকে জয়ি করার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজনকে জোরপূর্বক প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য বাধ্য করেন। তাই আমি এ ধরনের প্রহসনমূলক নির্বাচন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, প্রার্থী ছাড়াই জসিম খান আমার কাছে এসে টাকা দাবি করে।আমি দিতে না চাইলে সে আমাকে গালিগালাজ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। আমি বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। এছাড়া সে আমাকে হুমকি দেয়ায় আমি বিষয়টি জানিয়ে আশুলিয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরিও করেছি। শিমুলিয়া ইউপি’র চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ জানান, জসিম খান নিজে শিক্ষিত নয়। কিন্তু সে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হওয়ার জন্য স্কুলের শিক্ষকদের মাঝে গ্রুপিং করিয়ে নিজের ফায়দা লুটের চেষ্টা করছেন । তার বিরুদ্ধে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে তাদেরকে মারধর ও প্রান নাশের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় নির্বাচন সম্পন্ন করতে গেলে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে নির্বাচন স্থগিতের পক্ষে মত দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংঘর্ষ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ