Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্পষ্টতার কারণে বিজিএমইকে মুচলেকা সংশোধন করে দাখিলের নির্দেশ, আদেশ ২ এপ্রিল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৮, ১২:৫৬ পিএম | আপডেট : ৪:২৭ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০১৮

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙতে কর্তৃপক্ষের দেওয়া মুচলেকা সংশোধন করে তা পুনরায় দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী সোমবার দিন, ২ এপ্রিল, ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে শেষ বারের মতো এক বছরের সময় চেয়ে লিখিত মুচলেকা দেন বিজিএমইএর বর্তমান পরিচালনা পরিষদ। লিখিত মুচলেকায় বলা হয়, এরপর আমরা আর সময় চাইব না।

আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মঞ্জিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এ সময় আদালতে আরো উপস্থিত ছিলেন এ মামলায় হাইকোর্টের অ্যামিকাস কিউরি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিজিএমইএর বোর্ড অব ডিরেক্টরদের পক্ষ থেকে একটি মুচলেকা দাখিল করা হয়। সেখানে বলা হয়, বোর্ড অব ডিরেক্টরস আর সময় চাইবে না। তারা যদি চায় তাহলে তারা দায়ী হবে। তখন কোর্ট প্রশ্ন তোলেন যে, বিজিএমইএর বোর্ড অব ডাইরেক্টরস ছয় মাস বা এক বছর পর নাও থাকতে পারে। সে বিষয়ের কোনো ব্যাখ্যা নেই।

পরে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে নতুন করে মুচলেকা দেওয়ার কথা বলেন তাদের আইনজীবী। সেই মুচলেকায় বলা থাকবে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে আর সময় চাওয়া হবে না। সময় শেষ হওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিএমইএ নিজেরাই ভবন ভাঙবে। আদেশ না মানলে বিজিএমইএ দায়ী থাকবে।

এর আগে গতকাল আর সময় চাইবে না এমন মুচলেকা দিতে বিজিএমইএকে আদালত নির্দেশ দিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ বহুতল ভবনটি ভাঙতে আরো এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ৮ এপ্রিল বিজিএমইএর বহুতল ভবনটি ভাঙতে সাত মাস সময় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদেশে আদালত বলেছিলেন, এটাই শেষ সুযোগ। আর সময় দেওয়া হবে না।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভবন ভাঙতে আদালতের দেওয়া নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই সময় চেয়ে আবেদন করেন বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ৫ মার্চ আপিল বিভাগ বিজিএমইএ ভবন অবিলম্বে ভেঙে ফেলতে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে (রিভিউ) করা আবেদন খারিজ করে দেন। তখন ভবন ভাঙতে কত দিন সময় লাগবে, তা জানিয়ে আবেদন করতে বলেন। বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ ভবন সরাতে তিন বছর সময় চেয়ে আবেদন করে। ১২ মার্চ আপিল বিভাগ আবেদন নিষ্পত্তি করে ছয় মাস সময় দেন ভবন সরাতে।

২০১৬ সালের ২ জুন বিজিএমইএর করা লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে যায় আপিল বিভাগে। ওই বছরের ৮ নভেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের পূর্ব পাশে অবস্থিত বিজিএমইএর ১৬ তলা ভবনটি অবিলম্বে সংগঠনের নিজ খরচায় ভেঙে ফেলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে ৮ ডিসেম্বর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ।

এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়। ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে বিজিএমইএ ভবন একটি ক্যানসারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। এই লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘বেগুনবাড়ি খাল’ ও ‘হাতিরঝিল’ জলাভূমিতে অবস্থিত ‘বিজিএমইএ কমপ্লেক্স’ নামের ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ ক্ষেত্রে ভবন ভাঙার খরচ আবেদনকারীর (বিজিএমইএ) কাছ থেকে আদায় করবে তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিজিএমইএ ভবন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ