পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর নিচু জমিন, পুকুর, লেক, ড্রেন, খাল, ঝিলসহ বিভিন্ন জলাশয়গুলো হয়ে উঠেছে কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। এগুলো এখন মশা প্রজননের আতুরঘর। এসমস্ত বদ্ধ জলাশয়গুলোতে জন্মানো মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী। দিন দিন ময়লা আবর্জনা ফেলে আসাধু চক্র সরকারি এ জলাশয়গুলো দখল করে নিচ্ছে। দুই সিটি কর্পোরেশনের হিসাবমত প্রতিবছরই এই জলাশয়গুলোর আয়াতন কমছে। প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস সময়ে রাজধানীর বদ্ধ জলাশয়ের কচুরিপানা পরিষ্কার করে থাকে সিটি কর্পোরেশন। সেই সাথে চালানো হয় বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও সচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি। এবছর ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন থেকে নিয়মিত কর্মসুচির অংশ হিসেবে কেউ-ই কচুরিপানা পরিষ্কার করেনি। ফলে এগুলো এখন মশা উৎপাদনের খামারে পরিণত হয়েছে। খোদ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ ওসমান গণীর বাড়ির পাশেই রয়েছে মশা উৎপাদনের কারখানা। গতকাল সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর মধ্যবাড্ডা চেয়াম্যান বাড়ির পাশের ওসমানের পুকুরে (এলাকাবাসীর কাছে মরহুম ওসমানের পুকুর হিসেবে পরিচিত) ময়লা আবর্জনার বাগাড়। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত এই পুকুরটিতে একদিকে ময়লা আবর্জনা ফেলতে ফেলতে প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। পুকুরের একাংশে এখনো সামান্য পানি রয়েছে। পানিতে কচুরিপানাসহ বিভিন্ন আগাছা ও লতাপাতায় জঙ্গল হয়ে আছে। এটি এখন মশা উৎপাদনের কারখানা বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওসমান গণী গতকাল সোমবার ইনকিলাবকে বলেন, এ পুকুরটিতে ময়লা আবর্জনা ও কচুরিপানা রয়েছে এটা আমার জানা আছে। কিন্তু ওই খানের গাড়ি যাতায়াতের রাস্তা না থাকার কারণে এই ময়লা আবর্জনা সরানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, মশা নিধনে নিয়মিত সকালে লার্ভিসাইডিং ও বিকেলে এডাল্টিসাইডিং করছে সিটি কর্পোরেশনের লোকজন। মশা নিধনে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর মধ্যে মশা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেগেছে বালে তিনি দাবি করেন।
এছাড়াও ডিএনসিসি’র ২১ নং ওয়ার্ডের মেরুল বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা ও মধ্য বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় এধরনের আরও বহু পুকুর, ডোবা, ড্রেন ও জলাশয় রয়েছে। যেখানে প্রতিনিয়ত প্রজনন হচ্ছে মশা। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ওই সমস্ত পুকুর-ডোবার আশেপাশের এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ এ জলাশয় ও পুকুরগুলো এখন মশার খামার। এ পুকুর ডোবাগুলোর কিছু ব্যক্তি মালিকানাধীন আবার কিছুর মালিকনায় রয়েছে নানা সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থার। এছাড়াও কিছুর মালিকানা নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা কিংবা মামলা মোকাদ্দমা। বর্তমানে অনেকটাই অভিভাবকত্বহীন এই পুরুর ডোবাগুলো দীর্ঘদিন অযতœ আর অবহেলায় রয়েছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ পুকুর ডোবাগুলোতে কখনও মশার ওষুধ ছিটানো হয়েছে বলে কেউ বলতে পারেনি। গত ৫ বছর যাবত ওসমানের পুকুরটি পরিষ্কার করা হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এই পুকুরটিকে ‘মশার খামার’ বলে মন্তব্য করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুকুরের পাশে নিজের বাড়িতে দীর্ঘদিন বসবাসকারী ওই এলাকার জনৈক বাসিন্দ বলেন, পুকুরটিতে যে যেমন ময়লা আবর্জনা ফেলে স্তূপ করে রেখেছে। কাদা পানিতে জন্মে আছে কচুরিপানাসহ নানা আগাছা। এ ময়লা আবর্জনা ও কচুরিপানাতে জন্মানো মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ আমরা। তিনি বলেন, এছাড়াও পুকুরের ভরাট হওয়া জায়গায় দিনে রাতে বসে মাদকের আড্ডা। এ আড্ডার কারণে এর আশেপাশের সড়কগুলোতে প্রায় ছিন্তাইয়ের গঠনা ঘটছে। এ এলাকায় বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখান দিয়ে আসা যাওয়ার সময় প্রায় সময় পুকুরের এই স্থানে আড্ডা দেওয়া বখাটে ও মাদকসেবিদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে ছাত্রীদের। এ যেন দেখার কেউ নেই।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের চলতি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বাজেটে ডোবা, নালা ও জলাশয়গুলোর কচুরিপানা, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার ও রক্ষণা বেক্ষণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩০ লাখ আর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। বছর বছর এ বাজেট বাড়তে থাকে। বছর যায় বাজেটের ঢাকা শেষ হয়। ডোবা, নালা ও জলাশয়ের নোংরা অবর্জনা ও কচুরিপানা পরিষ্কার হয় না। এ থেকে জন্মানো মশায় নাজেহাল হচ্ছে নগরবাসী।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ জাকির হাসান গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, রাউজক, গণপুর্ত অধিদপ্তর, সিভিল এভিয়েশন, রেলওয়েসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এ জলাশয়গুলোর মালিক। এছাড়া ব্যক্তি মালিকানয়ও রয়েছে কিছু জলাশয়। এসব জলাশয় পরিষ্কারের জন্য কর্পোরেশনের আলাদা বাজেট নেই, তাছাড়া এগুলো পরিষ্কারের দায়িত্বও সিটি কর্পোরেশনের নয়। তিনি বলেন, এ পুকুর, জলাশয়গুলো পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এ কাজে রয়েছে নানা আইনি জটিলতাও। যে কারণে খুব সহজেই আমরা রাজধানীল জলাশয়গুলো থেকে ময়লা আবর্জনা ও কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজে হাত দিতে পারি না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।