Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমতলী ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রায় ১৮ লাখ টাকার মামলায় আটক আমতলী ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ যেন কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে এলো। ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রয়ারি আমতলী ডিগ্রি কলেজের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী মো: ইউসুফ আলী ১৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা পাওনা দাবি করে কলেজের প্রিন্সিপাল মোঃ মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪০৬/৪২০ ধারা মতে ১টি মামলা দায়ের করেন। মামলায় গত ১৩ মার্চ প্রিন্সিপাল মো: মজিবরকে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট জেল হাজতে প্রেরণ করেন। উল্লেখ্য যে, আমতলী ডিগ্রি কলেজটি বিগত ৭ এপ্রিল ২০১৬ জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণের সকল কাজ সম্পন্নকরণের জন্য মন্ত্রণালয়ে বহু কাজ আছে বলে ধাপ্পা দিয়ে বাদী এবং ৪৮ জন সাক্ষী শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে উক্ত টাকা হাতিয়ে নেন। 

বিভিন্ন সূত্র থেকে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রিন্সিপাল মোঃ মজিবর রহমানের দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে এসেছে। মোঃ মজিবর রহমান প্রথমে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ থেকে ৩১ মে ১৯৯০ পর্যন্ত পটুয়াখালীর দুমকি জনতা কলেজে এবং ১ জুন ১৯৯০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০০ তারিখ পর্যন্ত আমতলী ডিগ্রি কলেজে জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। পরে ১ অক্টোবর ২০০০ থেকে ৪ জুলাই ২০০৮ তারিখ পর্যন্ত পটুয়াখালীর করিম মৃধা কলেজে এবং বিগত ৫ জুলাই ২০০৮ তারিখ আমতলী ডিগ্রি কলেজে প্রিন্সিপাল হিসেবে যোগদান করেন। আমতলী ডিগ্রি কলেজে যোগদানের পর থেকেই তিনি বিভিন্ন দুর্নীতি শুরু করেন। প্রায় ১০ বছর পর কলেজের সহকারী অধ্যাপক গাজী মোঃ আঃ মন্নান কর্তৃক বিগত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখ দুদকের চেয়ারম্যান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবর প্রেরিত পৃথক ২টি অভিযোগপত্রে দেখা যায়, আমতলী ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল মোঃ মজিবর রহমান যোগদানের পর ১০ বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। কলেজের রশিদ বই জালিয়াতি, বিভিন্ন পর্বে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত ৪-৫ হাজার টাকার স্থলে ৫শ-১হাজার টাকা জমা দেয়া, ভর্তি, আন্তঃ কলেজ পরীক্ষা, পাবলিক পরীক্ষা, প্রবেশপত্র, প্রশংসাপত্র, ট্রান্সক্রিপ্ট ইত্যাদি বিতরণ, ছাড়পত্র প্রদান, পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহ, গোপনে প্রশ্নপত্র ফাঁস, নিজের পছন্দের শিক্ষককে পরীক্ষা কক্ষ পরিদর্শক নিয়োগ ইত্যাদির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। কলেজের আয় ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজ হাতে ব্যয় করেন। স্বল্প পরিমাণে টাকা ব্যাংকে জমা দিলেও তা যৌথ স্বাক্ষরের হিসাবে জমা না দিয়ে তার একক স্বাক্ষরে অগ্রনী ব্যাংক সঞ্চয় হিসাবে জমা দিতেন। জাতীয়করণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর আমতলী সরকারী কলেজের অগ্রণী ব্যাংক, আমতলী শাখার সঞ্চয় হিসাব ৪১৮৪ এবং ৮৮৭৫ এবং রূপালী ব্যাংক আমতলী শাখার সঞ্চয় হিসাব নং ১০০০১৭২২৩ নং হিসাব থেকে ১৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৫১ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন জাতের গাছ বিক্রি করেন। তার এ সমস্ত আত্মসাতকৃত অর্থ দিয়ে নিজ নামে ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৬ খন্ড কবলা দলিলের মাধ্যমে ৮৪ লাখ ৪০ হাজার (প্রদেয় অর্থ আরো বেশি) টাকার ৫০৫.৪৬ একর জমি খরিদ করেন। এই টাকা দিয়ে বিপুল অংকের ডোনেশনের মাধ্যমে তার ২ ছেলেকে বেসরকারী মেডিকেল কলেজে ও বেসরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের ব্যবস্থা করেছেন। জানা যায়, তার স্ত্রী ও ছেলেদের নামেও ব্যাংক একাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা এবং কবলাকৃত জমি রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ