Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোগীর স্বজনদের মারধর করে ধর্মঘটে শেবাচিমের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

চিকিৎসা অবহেলায় প্রসুতির মৃত্যু

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় অন্তঃস্বত্বা গৃহবধুর মৃত্যুর ঘটনায় মৃদু প্রতিবাদ করায় স্বামীকে বেদম মারধরের পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট শুরু করেছে। ফলে এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা প্রায় ভেঙে পড়েছে। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে ধর্মঘটের ঘোষণা দিলেও রাত থেকেই তারা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন বন্ধ করে দিয়েছে। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাসপাতালের প্রসূতি অপারেশন থিয়েটার কক্ষে খাদিজা আক্তার (২৩) ও তার গর্ভে থাকা ৯ মাসের সন্তানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনার সুত্রপাত। খাদিজা আক্তার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ কনষ্টবল মো. শাফিকুল ইসলাম স্ত্রী। তাদের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার চরনাবাদ গ্রামে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় হাসপাতালের নিচতলায় প্রধান ফটকের করিডোরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে কনষ্টবল মো. শাকিলকে গ্রেফতার সহ তিনদফা দাবী না মানা পর্যন্ত কাজে যোগদান না করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের অপর দুটি দাবী হচ্ছে হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন ও গুরুত্বপূর্ন ওয়ার্ডগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন। কনস্টবল শফিকুল ইসলাম জানান, তার স্ত্রীর প্রসববেদনা শুরু হলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক এসে চিকিৎসা দিলেও রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে নার্সদের পরামর্শে রোগীকে দ্রুত ওটিতে নিয়ে যাওয়ার পর দেড় ঘন্টায়ও কোন চিকিৎসক সেখানে যাননি। খাদিজার স্বামী ইন্টার্নি চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকে তাদের ওটিতে যাওয়ার অনুরোধ জানালে তারা সিনিয়র চিকিৎসক ছাড়া সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। এসময় শফিকুল ইসলাম এক ইন্টার্নি চিকিৎসকের হাতধরে টানাটানি করলে তাকে আটকে বেদম মারধর করেন অন্যান্য ইন্টার্নি চিকিৎসকরা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ওটিতে প্রসূতি খাদিজা বেগমের মৃত্যু হলে সেখানে অপেক্ষারত স্বজনরা ওটির দরজা-জানালার দুটি গøাস ভাংচুর ও সেখানে থাকা চিকিৎসকদের ওপর চড়াও হন। চিকিৎসকরাও পাল্টা হামলা চালিয়ে স্বজনদের বেদম মারধর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সেবিকা জানান, খাদিজা বেগমের অবস্থা খারাপ থাকায় তাকে ওটিতে নেবার জন্য তারা বিকালেই চিকিৎসকদের অবহিত করেন। ওই সময়ে ওটির দায়িত্বে থাকা প্রসূতি বিভাগের রেজিষ্ট্রার ডা. শারমিন ওটিতে ছিলেন না। তিনি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এসে রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই স্বজনরা ওটিতে ভাংচুর করে। ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোশিয়েসনের সহ সম্পাদক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রসূতি খাদিজা আক্তারের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের বাইরে ছিল। তাকে ওটি টেবিলে নেবার পরই মৃত্যু ঘটে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আব্দুল কাদের মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভাত খাচ্ছেন। পরে কথা বলবেন। এরপরই তিনি সেলফোনটি বন্ধ করে দেন। তবে ঘটনার পর তিনি সবকিছুর খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে সাংবাদিকদের বলেছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্মঘট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ