গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বিমান দুর্ঘটনায় পাইলট আবিদ সুলতানের মৃত্যুশোক সইতে না পেরে স্ট্রোক করেন চলে গেলেন আবিদের স্ত্রী আফসানা খানম। ছয়দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (২৩ মার্চ) তাকে মৃত ঘোষণা করলেন চিকিৎসকরা। আফসানা খানমের জানাজা বাদ আসর রাজধানীর উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরে অনুষ্ঠিত হবে এবং জানাজা শেষে তাকে বনানীর সামরিক কবরস্থানে স্বামীর কবরের পাশেই দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
তার মৃত্যুর পরপর বিহ্বল হয়ে পরেন স্বজনরা। খবরের জন্য ছুটে আসা সাংবাদিকদের কী বলবেন ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। পাইলট আবিদের ভাই ড. খুরশিদ মাহমুদ সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আমাদের একটু একা থাকতে দিন।’
লাশের অপেক্ষায় থাকার সময় সাংবাদিকরা আবিদ-আফসানার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ এই দম্পতির একমাত্র সন্তানকেও খুঁজতে থাকেন। পরিবারের সদস্যরা এ সময় শিশুটিকে লুকিয়ে রাখতেও বাধ্য হন। হাসপাতালে পাইলট আবিদের ভাই প্রফেসর ড. খুরশিদ মাহমুদ এ সময় বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে কিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি তা শুধু আমরাই জানি। উই আর ভেরি মাচ শকড। আমাদের একটু একা থাকতে দিন। বিরক্ত করবেন না। প্লিজ প্লিজ।'
আফসানার ফুফাতো ভাই শাহিনুর ইসলাম স্বপন বলেন, ‘স্ট্রোক করার দিন আফসানার সঙ্গে তার ছেলে ঘুমাচ্ছিল। ওই বাসায় আমাদের এক খালা ছিলেন। ছেলেটি প্রথমে বুঝতে পারেনি। ঘুম থেকে উঠে দেখে তার মা কোনও সাড়া দিচ্ছে না। পরে সে চিৎকার শুরু করে। চিৎকার শুনে অন্যরা এসে সবাইকে খবর দেয়। তাকে (আফসানা) প্রথমে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা ফেরত দিলে আমরা এই হাসপাতালে (নিউরোসায়েন্স) নিয়ে আসি। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার আরও অবনতি শুরু হয়। শরীরে কোনও অর্গান কাজ করছিল না। সকালে চিকিৎসকরা আবার চেক করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত হন পাইলট আবিদ সুলতান। এর ছয়দিন পর ১৮ মার্চ সকালে স্ট্রোক করেন আফসানা। তাকে প্রথমে উত্তরার একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালে। সেখানে একবার অস্ত্রোপচার করা হলেও ওই দিন রাতেই আবার স্ট্রোক করেন আফসানা। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আবার অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। এরপর থেকেই তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তার অবস্থা তখন থেকেই সংকটাপন্ন ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।