পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রায় দেড় মাস ধরে কারাবাসে। দলীয় প্রধানকে মুক্ত করে আনতে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। আইনি লড়াইয়ে গত ১২ মার্চ হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে খালেদা জিয়ার জামিন হলেও পরবর্তীতে ১৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তা ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করে দিয়েছে। আইনি লড়াইয়ে দৃশ্যমান সাফল্য না এলেও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সফলতা দেখিয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, অনশন, লিফলেট বিতরণ, স্মারকলিপি প্রদান ও গণস্বাক্ষরের মতো ভিন্ন ধারার কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়েছে দলটি। রাজধানীতে কোন সমাবেশের অনুমতি না পেলেও শান্তিপূর্ণ এসব কর্মসূচিতেই বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের উপস্থিতি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতা। একইসাথে খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমাবেশে মানুষের উপস্থিতিও অবাক করেছে তাদের। এজন্য আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে চান দলের নেতারা। একইসাথে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দলকে তৃণমূল পর্যায় সুসংগঠিত করে আন্দোলন ও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়া, সাধারণ মানুষের দাঁড়ে দাঁড়ে পৌঁছানো এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করতে চান তারা।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এই দাবি আদায়ে তৃণমূল পর্যায়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন দলের সিনিয়র নেতারা। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলমান বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে দলটি। প্রথম দিকে দেশের বৃহত্তর ১৯টি জেলা এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সকল জেলা এবং উপজেলায় যাবেন তারা। এসব সফরে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন সফল করতে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে খালেদা জিয়ার বার্তাও পৌঁছে দেওয়া হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তৃণমূলে সমাবেশের পাশাপাশি দলের ভবিষ্যৎ আন্দোলন সফলে নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ নেতাদের বার্তা দিতে আবারো সাংগঠনিক সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা। জেলা-মহানগরের পাশাপাশি এবার তারা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত যেতে চান। এজন্য দলের ভাইস-চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও যুগ্ম মহাসচিবদের সমন্বয়ে ৫০টির মতো টিমও গঠন করা হবে। আগামী মাস থেকে এই সফর শুরু হতে পারে। তবে এখনো দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় দলের যৌথ সভায় এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে। এই যৌথ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম-মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন।
গত ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদÐ দেওয়া হয়। দলীয় প্রধানকে সাজা দেওয়ার পর থেকেই তার মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, মানববন্ধন, গণ অনশন, কালো পতাকা প্রদর্শন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের মত ভিন্ন ধারার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। এর ধারাবাহিকতায় বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপির জনসভাও শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছে দলটি। এই দুটি সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিও দেখিয়েছে দলটির স্থানীয় নেতারা। একই দাবিতে আগামী ২৯ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, ৩১ মার্চ রাজশাহী এবং ৭ এপ্রিল বরিশালে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বাকি বিভাগীয় শহরগুলোতেও পর্যায়ক্রমে সমাবেশ হবে। এরপর ১৯টি বৃহত্তর জেলাসহ পর্যায়ক্রমে সব জেলায় সমাবেশ করবে দলটি। সবশেষ উপজেলা পর্যায়েও সমাবেশ হবে। এসব সমাবেশে গণজোয়ার সৃষ্টি করে সরকারকে চাপে ফেলে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ই বিএনপির লক্ষ্য। দলের নেতারা জানান, তারা এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান- যাতে সাজার রায় বাতিল হয় এবং বেগম জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকার বাধ্য হয়। অন্যদিকে তৃণমূলের (জেলা-উপজেলায়) এসব সমাবেশে বিএনপি নেতারা দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি ছাড়াও নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার দাবিও তুলে ধরবেন। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের সময়ে গুম, খুন, শেয়ার বাজার, ব্যাংক কেলেঙ্কারি, অর্থপাচার, রিজার্ভ চুরি, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, তেল-গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তুলে ধরা হবে। আগামী জুন-জুলাই পর্যন্ত এসব কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যেতে চান দলের নেতারা। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব। এই দুই দাবি আদায়ে আমরা নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আছি। সেটারই অংশ হিসেবে আমরা বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সমাবেশ করব। সেই ব্যাপারে পরিকল্পনা চলছে। তিনি আরো বলেন, বিভাগীয় শহরে সমাবেশ শেষে প্রথমে বৃহত্তর জেলাগুলোতে সমাবেশ করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে সব জেলায় সমাবেশ হবে। সবশেষে উপজেলা পর্যায়েও আমরা সমাবেশ করব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি আদায় করা হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ে সমাবেশের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ আন্দোলন সফলে নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে তৃণমূলে সাংগঠনিক সফরেও যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।