Inqilab Logo

শনিবার, ২২ জুন ২০২৪, ০৮ আষাঢ় ১৪৩১, ১৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা সঙ্কটে উত্থান হতে পারে আইএস’র : নাজিব

অস্থায়ী শিবিরে চিরতরের জন্য থাকতে হবে না : মিয়ানমার কর্মকর্তা

| প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাখাইনের অস্থিরতাকে কেবলই অভ্যন্তরীণ সঙ্কট হিসেবে দেখার সুযোগ নেই//
ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইনের অস্থিরতাকে এখন আর কেবলই একটি অভ্যন্তরীণ সঙ্কট হিসেবে দেখার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনে তিনি মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সু চির সঙ্গে একমঞ্চে ছিলেন। সেখানে রাজাক আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সহিংসতার শিকার হওয়া রোহিঙ্গারা ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর মতো বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। আইএস-এর এমন উত্থানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি। বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর পরিচিতি পেয়েছে রোহিঙ্গারা। নিজ দেশে এই সঙ্কটের মধ্যে ১০ দেশের জোট আসিয়ানের সম্মেলনে যোগ দিতে অস্ট্রেলিয়া গেছেন মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচি। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সু চির সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করে শনিবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি এমন এক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে যাতে হাজার হাজার মানুষ আশাহীন হয়ে উঠছে। কোনও ভবিষ্যত দেখছে না তারা। আর এটা মৌলবাদীদের উর্বর ভূমি আইএস বা এর সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। অপর এক খবরে বলা হয়, মিয়ানমারে নতুন করে নির্মিত আশ্রয় শিবিরগুলো প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা হবে না বলে দাবি করেছেন রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইয়ে হটুট। গত শনিবার রাখাইনের উত্তরাঞ্চল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদেরকে ওইসব শিবিরে ‘চিরতরে’ থাকতে হবে না। রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের মূল গ্রাম কিংবা কাছাকাছি এলাকায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন এ কর্মকর্তা। নাজিব বলেন, আমাদের অবশ্যই সতর্ক হয়ে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। কারণ সিরিয়া ও ইরাকের মূল এলাকাগুলোতে আইএসের পতনের পর তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। যেকোনও স্থানে বিশেষ করে সঙ্কটে থাকা এলাকা যেখানে তারা বেড়ে উঠে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ পেতে পারে সেখানেই তাদের পুনরুত্থান ঘটতে পারে। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত হতে যাওয়া একটি পুনর্বাসনের এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে খুব ধীর গতিতে কাজ চলছে। মংডু শহরের প্রশাসক মিন্ত খাইং বলেন, নতুন এলাকায় প্রায় ১০০ পরিবার থাকতে পারবে এবং দুই মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এএফপি’র পক্ষ থেকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ম্রো পুনর্বাসনের এলাকা হিসেবে মূল গ্রাম থেকে ৩০ মিনিটের দূরত্বের কোনও এলাকা কেন বেছে নেওয়া হয়নি। জবাবে তিনি দাবি করেন, যেসব জনগোষ্ঠী পালিয়ে যায়নি তাদেরকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সিডনি সম্মেলনে মানবাধিকার ইস্যুতে জোর দেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। তবে মানবাধিকার ইস্যুটি যদি তোলাও হয় বা আলোচনা হয় তা হবে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। প্রকাশ্যে নয়। ফলে মিয়ানমার ইস্যুতে লজ্জাজনক নীরবতা অবলম্বনের কারণে আসিয়ান নেতাদের অভিযুক্ত করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত অঞ্চলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক জেমস গোমেজ বলেছেন, আঞ্চলিক প্রতিবেশী হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ও আসিয়ানের অবশ্যই মিয়ানমারের প্রতি একটি বার্তা দেয়া উচিত। তা হলো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ গ্রহণযোগ্য নয়। এমন অপরাধ শাস্তি ছাড়া ছেড়ে দেয়া হবে না। সেনা নির্যাতনে রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের ফেলে আসা গ্রাম ও জমিজমায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ঘাঁটি তৈরি এবং প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা প্রশ্নে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ প্রকাশের মধ্যেই এমন দাবি করেন হটুট। এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি।



 

Show all comments
  • ইয়াকুব ১৯ মার্চ, ২০১৮, ১:৩১ এএম says : 1
    এখনও সময় আছে, মিয়ানমারের উচিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া
    Total Reply(0) Reply
  • জামান ১৯ মার্চ, ২০১৮, ৯:৫২ এএম says : 0
    বার্মায় শান্তি আনতে হলে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Zaman ১৯ মার্চ, ২০১৮, ৯:৫৩ এএম says : 0
    শান্তি চাই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ