Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তানোরের কালীগঞ্জ কলেজে এমপিওর টাকা লুটপাট

অপব্যবহারকারীদের খুঁজতে শিক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশ

| প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মমিমনুল ইসলাম মুন,তানোর(রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোর উপজেলায় রাজনৈতিক নেতার ইচ্ছে পূরুণের জন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রতিষ্ঠিত কালীগঞ্জহাট ডিগ্রী কলেজে এমপিও’র টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। সারাদেশে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারের আর্থিক সহায়তা বা এমপিওর প্রায় ২০ ভাগ নানা ভাবে লুটপাট হচ্ছে। অংকের হিসেবে লোপাট হওয়া এসব অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা। এসব তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লি­ষ্ট সুত্রের। বিগত ২০১০ সালে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক বিবেচনায় ও অনিয়ম তান্ত্রিক ভাবে গড়ে ওঠা অপ্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় কালীগঞ্জহাট ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠা ও ১৯৯৯ সালে এমপিওভুক্ত করণ এবং ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে কলেজটি ডিগ্রী কলেজে উন্নীত করা হয়। কিন্তু ডিগ্রী কলেজে উন্নীত করণের পর পরই কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে শুরু করে। সূত্র জানায়, কলেজে সর্বসাকূল্য শতাধিক শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক-কর্মকচারি রয়েছেন ৬২ জন, এছাড়াও তৃতীয় বিষয়ে আরো ১৪ শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কালীগঞ্জহাট ডিগ্রী কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ৫ জন, ডিগ্রীর গণিত বিভাগে কোনো শিক্ষার্থী নাই শিক্ষক সৈকত রেজা, দর্শন বিভাগে শিক্ষার্থী নাই শিক্ষক জোবাইদা, অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষার্থী নাই শিক্ষক রাজিয়া সুলতানা পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষার্থী নাই শিক্ষক হারুন অর রশিদ, এইচএসসি শাখায় পরিসংখ্যান শিক্ষার্থী নাই শিক্ষক ফেরদৌস,আরবি বিভাগে শিক্ষার্থী নাই শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে শিক্ষক খলিলুর রহমান। অথচ শিক্ষার্থী না থাকলেও এসব শিক্ষকগণ বসে বসে বেতন-ভাতা উত্তোলনের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারের অর্থ লোপাট করে চলেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, বিজ্ঞানাগারে প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি না থাকায় হাতে কলমে শেখার কোনো সুযোগ নাই, কম্পিউটার শিক্ষক ও লাইব্রেরিয়ান থাকলেও এসব না থাকায় তারা এসব বিষয়ে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ‘সাময়িক বরখাস্ত’ আনিসুর রহমান বলেন, শিক্ষকেরা যখন এমপিওভুক্ত হয়ে ছিলেন তখন প্রতিটি বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু পরবর্তিতে শিক্ষকদের দলাদলির কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে কমতে অনেক বিষয়ে শূণ্যর কোটায় ঠেকেছে। এব্যাপারে কলেজের ‘ভারপ্রাপ্ত’ অধ্যক্ষ সফিউজ্জামান বলেন, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তকরণের সময় প্রতিটি বিষয়ে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু পরবর্তীতে যদি শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ায় শূণ্যতার সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের করনীয় কিছু নাই। তিনি বলেন, কোনো বিষয়ে শিক্ষার্থী না থাকলে সেই দায় তো তাদের নয়। এব্যাপারে রাজশাহীর অতিঃ জেলা প্রশাসক ‘শিক্ষা’ বলেন, একজন শিক্ষকের এমপিও অনুমোদনের জন্য কমপক্ষে প্রতি শিক্ষকের বিপরীতে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে বলে বিধান রয়েছে। কিন্তু কোনো বিষয়ে পাঁচজন বা তিনজন আবার কোনো বিষয়ে শিক্ষার্থী না থাকার পরেও শিক্ষকরা কী ? ভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন এটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। এব্যাপারে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোজখবর নিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী না থাকার পরেও যেসব শিক্ষক বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন তাদের তাদের এমপিও স্থগিত করার সুপারিশ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লুটপাট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ