পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির সম্প্রসারণকল্পে, সরকার কর্তৃক মন্দির সংলগ্ন ৫৬ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমির মূল্য বাবদ ৩৫ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হবে। সূধী ভক্তবৃন্দ ও শুভাকাক্সিক্ষদের উক্ত কর্মযজ্ঞে আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে সংযুক্ত হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি’। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নামের দুটি সংগঠন উপরিউক্ত কথা লেখাসম্বলিত এই লিফলেট (প্রচার পত্র) বিলি করে ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারণের জন্য প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ কোটি টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঐ এলাকায় বসবাসকারী ও মন্দিরের সম্প্রসারণ কাজের জন্য একোয়ার হওয়া জায়গার মালিকেরা।
ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকার ২৭৭ নং দাগের জমির মালিক মোহাম্মদ আজম আজিম ইনকিলাবকে বলেন, সাবেক সচিব সৈলেন মজুমদার, ভূমি প্রতিমন্ত্রী শামসুজ্জামান জাভেদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে ঢাবেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারণের জন্য উপযুক্ত দাম পাওয়ার শর্তে, আমি জমি দিতে রাজি হয়েছিলাম। সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি উক্ত জায়গার মূল্য পরিশোধ করার জন্য ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সামনে ব্যানর টানিয়ে ও লিফলেট বিলি করে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ কোটি ঢাকা সংগ্রহ করেছে। তিনি বলেন, টাকা সংগ্রহের পর মাঝখানে অনেক সময় পার হয়ে গেলেও মন্দির কমিটি আমার জমির টাকা পরিশোধ করেনি। ডিসি অফিস থেকে তাদেরকে বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা ঢাকা পরিশোধ করছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ডিএন চ্যাটার্জি ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারণের বিষয়টি আমাদের কোন বিষয় নয়। এটি সরকারের বিষয়। আর এ মন্দির সম্প্রসারণের জন্য ৩৫ থেকে ৪০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে এ কথাটিও ঠিক নয়। তিনি বলেন, কোন এক সময় মন্দিরটি সম্প্রসারণের জন্য উক্ত জায়গা একোয়ারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল এবং একোয়ারকৃত জায়গার মূল্য পরিশোধের জন্য আমরা নানাভাবে টাকা সংগ্রহ করার চেষ্টাও করেছিলাম। অনেক চেষ্টা তদবিরের পরে আমরা উক্ত টাকা সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হই। এক সময় কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়।
তিনি আর বলেন, পরবর্তীতে আমাদের আইজিবী ও মন্দির সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি যে এই জায়গাগুলো দেবোত্তর সম্পত্তি আর্থাৎ এগুলো মন্দিরই জায়গা। তাই এ সম্পত্তির একোয়ারের কোন প্রশ্নই উঠেনা। আমরা এখন ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দেবোত্তর ২০ বিঘা সম্পত্তির মধ্যে ১৪ বিঘা বেহাত হওয়া সম্পত্তি পুণরুদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারনের জন্য মূল্য পরিশোধ না করেই জায়গা দখলের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঐ এলাকার স্থানীয় জমির মালিকরা। এসময় তারা বলেন, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দকে ডিসি অফিস থেকে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও তারা জমির মূল্য পরিশোধ করেনি। সার্বজনীন পূজা কমিটির লোকজন স্থানীয় জমির মালিকদের নানা তালবাহানার মাধ্যমে ধোকা দিয়ে সরকার নির্ধারিত একোয়ারের মূল্য পরিশোধ না করেই জমির পজিশন দখলে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারণের জন্য একোয়ার হওয়া ২৭৬ নং দাগের জমির মালিক রাম দাস ঘোষ ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দির কখনোই ২০ বিঘা জমির উপর ছিল না। আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি ভিতরের পুকুরসহ ঢাকেশ্বরী মন্দির ৬ বিঘা জমির উপর অবস্থিত। এ ৬ বিঘা জায়গায় মন্দির এরিয়া বাউন্ডারি করা ছিল বহুকাল আগে থেকেই। তিনি বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পক্ষে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি আমাদের দীর্ঘদিনের পৈতৃক ও ক্রয়কৃত ভিটাবাড়ি নানা তালবাহনায় অবৈধভাবে দখল করতে চায়। তাদের এই হিনবাসনা কখনোই পূরণ হবে না।
মোহাম্মদ আজম আজিম বলেন, মন্দির সম্প্রসারণের জন্য শুধু মাত্র আমার জমিনই একোয়ারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ মনে করেছিল এই একোয়ারের টাকা সরকারের ফান্ড থেকে দেয়া হবে তাই তারা এ সুযোগে আশেপাশের জমিনগুলোও একোয়ারের আওতায় নিয়ে নেয়। পূজা কমিটির লোকজন অতিরিক্ত লোভের কারণে এ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।
ওই এলাকার ভূক্তভোগিদের সাথে কথা বলে যানা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পক্ষে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি আমাদের দীর্ঘদিনের পৈতৃক ও ক্রয়কৃত ভিটাবাড়ি নানা তালবাহনায় অবৈধভাবে দখল করতে চায়। আমরা আমাদের বহুদিনের পৈত্রিক ভিটা বাড়ি ছেড়ে কোথায়ও যাবো না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।