পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে নিজ ক্যাম্পাসে ফিরেই আশার কথা শোনালেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। এসময় হামলায় জড়িতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি নাস্তিক নই, পুরো কোরআন মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ছাত্রীদের সাইকেল বহরের সঙ্গে মুক্তমঞ্চে পৌঁছান তিনি। ঠিক ১১ দিন আগে এ মঞ্চেই তার উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায় ফয়জুর রহমান ওরফে ফয়জুল নামে স্থানীয় এক যুবক। ক্যাম্পাসে ফিরে শাবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে ‘সাধাসিধে কথা জাফর স্যার ও আমরা শীর্ষক’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি।
ড. জাফর ইকবাল বলেন, আমি বেঁচে গিয়েছি। আমার বার বার হুমায়ুন আজাদ, অভিজিৎ, দীপনসহ সকলের কথা মনে পড়েছে। সবার পরিবারের কথা স্মরণ করেছি। জনপ্রিয় এই লেখক বলেন, আমার উপর হামলার পর প্রথম চিন্তা হলো- আমার মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হলো কিনা। আমি স্মৃতি পরীক্ষা করলাম গাড়িতে বসে। হাসপাতালে নেয়ার পর আমার ব্রেন ঠিক আছে নিশ্চিত হলাম। হাসপাতালে দেখি ওটিতে (অপরারেশ থিয়েটার) ডাক্তার আর নার্সদের চেয়ে সাধারণ মানুষ বেশি। পুলিশ সাধারণ মানুষদের বের করার চেষ্টা করার ফাঁকেও ডাক্তাররা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছেন বলে ধন্যবাদ জানাই।
ড. জাফর ইকবাল বলেন, হাসপাতালে প্রথম থেকেই বলেছি- আমাকে ক্যাম্পাসে যেতে হবে। ফিরলাম একটা কারণে। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে শিক্ষকদদের উপর হাত তুলে ছাত্ররা। তারপর আমরা নিজেদের গুটিয়ে নিই। এঘটনার পর টের পেলাম গুটিয়ে নেয়া উচিত হয়নি। এখন থেকে আবারো আমি তোমাদের সাথে আছি। নাটক, গান আবিষ্কারের জন্য ডাকলে আমরা আসব। আর গুটিয়ে থাকব না। হামলাকারী বেহেশতে যাওয়ার জন্য আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। পৃথিবীর কোনো সুখ তার (হামলাকারী) নেই, তাই তার জন্য করুণা হয়।
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমি নাস্তিক নই। আমি পুরো কোরআন শরীফ খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। পবিত্র কোরআনে আছে- একটা মানুষ হত্যা করলে পুরো মানবজাতি হত্যার সমান। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের কেউ থাকলে বাসায় অস্ত্র রেখে আমার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় আসো। আমি জানতে চাই- কোন বিভ্রান্তি তোমাকে ঘিরে রেখেছে?
এর আগে দীর্ঘ ১১ দিন চিকিৎসা শেষে বুধবার বেলা ১২টা ৪৬ মিনিটে বেসরকারি একটি বিমানে করে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ড. জাফর ইকবাল। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে তাকে প্রিয় ক্যাম্পাসে নেয়া হয়।
এদিকে ড. জাফর ইকবালের নিরাপত্তা আগের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, তার অফিস, বাসা এমনকি তিনি যেখানে যাবেন পুলিশ তার সঙ্গে থাকবে।
উল্লেখ গত ৩ মার্চ শাবির মুক্তমঞ্চে হামলার শিকার হন জনপ্রিয় লেখক ড. জাফর ইকবাল। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে রাতেই ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়। এদিকে আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় সুস্থ হয়ে গতকাল সকালে জাফর ইকবাল সিএমএইচ ত্যাগ করেন। তাঁর চিকিৎসার সাথে সম্পৃক্ত সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ সিএমএইচে তাকে বিদায় জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে আগামী ৭ দিনের জন্য সম্পূর্ণ বিশ্রামের উপদেশ প্রদান করেছে। আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, জাফর ইকবাল গত ৩ মার্চ আহত হবার পর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐদিনই তাঁকে ঢাকা সিএমইচ-এ হেলিকপ্টার যোগে স্থানান্তর করা হয়। এখানে আনার পর সংশ্লিষ্ট সকল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করেন। তাৎক্ষণিকভাবে একটি বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয় এবং উক্ত বোর্ড তাঁর চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।