২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
অ্যাপথা বলতে বোঝায় আলসার বা ঘাঁ। স্টোমাটাইটিস হলো মিউকাস লাইনিং বা আবরণের প্রদাহ। প্রকৃতপক্ষে অ্যাপথাস স্টোমাটাইটিস অ্যাপথাস আলসার নামে সমধিক পরিচিত। এছাড়া অ্যাপথাস আলসারকে ক্যাংকার সোর নামেও চিহ্নিত করা হয়। আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা মুখের যে কোন আলসারের চিকিৎসায় অ্যাপথাস আলসারের প্রদত্ত ওষুধ ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে রোগী যখন ওষুধের দোকানে যেয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করে। তাই অ্যাপথাস আলসারের প্রকৃত স্বরূপ আমাদের জানা প্রয়োজন। অ্যাপথাস আলসার সাধারণত ব্যথাযুক্ত হয়ে থাকে। পুরুষদের চেয়ে মহিলারা বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকে। অ্যাপথাস আলসার যে কোনো বয়সে হতে পারে। কিন্তু টিন এজ ছেলে-মেয়েদের মাঝে বেশি দেখা যায়। শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ রোগীর পারিবারিক ইতিহাস থাকে যারা বার বার অ্যাপথাস আলসারে আক্রান্ত হন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ বৎসর বয়সের মধ্যে অ্যাপথাস আলসার প্রথম কারো মাঝে দেখা যেতে পারে। তবে দুই বছরের শিশুর মাঝেও হঠাৎ করে এ আলসার দেখা যেতে পারে। অ্যাপথাস আলসার কারো কারো ক্ষেত্রে বছরে দুই বার দেখা যেতে পারে, আবার অন্যদের মাঝে অনেক বার দেখা যেতে পারে। অ্যাপথাস আলসার বেশি মাত্রায় হলে লিম্ফনোড বা লসিকা গ্রন্থি বড় হয়ে যেতে পারে এবং শরীরে জ্বর আসতে পারে। অ্যাপথাস আলসার হলে মশলাযুক্ত খাবার খেতে খুবই সমস্যা হয়। অ্যাপথাস আলসার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্বতস্ফূর্তভাবে ভালো হয়ে যায়। এ কারণেই মুখের আলসার সম্পর্কে সাধরণ মানুষ মজা করে বলেন যে, মুখের ঘাঁ ওষুধ খেলে ভালো হতে সময় লাগে ১৪ দিন আর ওষুধ না খেলে সময় লাগে ৭ দিন। বিষয়টি নিয়ে হাস্যরস করা যায় ঠিকই কিন্তু বেশি ব্যথা থাকলে অবশ্যই ওষুধ সেবন করতে হবে। তাছাড়া মুখের আলসারটি অ্যাপথাস আলসার না অন্য খারাপ কিছু সেটি অবশ্যই জানা জরুরী। অ্যাপথাস আলসার না হয়ে মুখের আলসারটি খারাপ কিছু হলে আলসার নিয়ে মুখের হাসি বা হাস্যরস বিলীন হতে সময় লাগবে না।
অ্যাপথাস আলসার কোথায় হয়?
মুখের যে অংশগুলো সাধারণত চলমান বা নড়াচড়া করে সেখানেই অ্যাপথাস আলসার হয়ে থাকে, যেমন-জিহবা, ঠোট ও চিবুকের অভ্যন্তরের আবরণের উপর। এছাড়া মাড়িতে অ্যাপথাস আলসার হতে পারে।
অ্যাপথাস আলসার দেখতে কেমনঃ
অ্যাপথাস আলসার সাদা অথবা হলুদ ডিম্বাকৃতির হয়। চারপাশে প্রদাহযুক্ত লাল বর্ডার লাইন দেখা যায়। লাল বাউন্ডারির মধ্যে ধুসর, সাদা বা হলুদ এলাকা হয় ফিব্রিন গঠনের কারণে। ফিব্রিন একটি প্রোটিন যা রক্ত জমাট বাঁধার সাথে সম্পৃক্ত।
অ্যাপথাস আলসারের কারণ সমূহ: প্রকৃত কারণ এখনো অজানা। সম্ভাব্য কারণ সমূহ যার প্রভাবে অ্যাপথাস আলসার হতে পারে, সেগুলো হলোঃ
ক) আঘাত জনিত কারণে যেমন, টুথব্রাশের খোঁচা। খ) মানসিক চাপ। গ) ঘুমের ব্যাঘাত বা অপর্যাপ্ত ঘুম। ঘ) অতিরিক্ত সাইট্রাস ফল সেবন, যেমন, কমলা অথবা লেবু। ঙ) খাদ্যে এলার্জি জনিত কারণে। চ) রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সমস্যা। ছ) ভিটামিন বি১২, আয়রন এবং ফলিক এসিডের অভাবজনিত কারণে। জ) নিকোরোডিল এবং কিছু কেমোথেরাপির কারণেও অ্যাপথাস আলসার হতে পারে। ঝ) ক্রনস ডিজিজে ও অ্যাপথাস আলসার হতে পারে। ঞ) টুথব্রাশের অ্যাবরেশনের কারণে অ্যাপথাস আলসার হতে পারে। ট) ধারালো বা অ্যাব্রেসিভ খাবার যেমন, টোস্ট, চিপস দ্বারা কোনো ক্ষত। ঠ) দাঁত দ্বারা কামড়ানোর ফলে কোনো ক্ষত। ড) ডেন্টাল ব্রেস মিউকাস মেমব্রেনের ক্ষতিসাধন করে অ্যাপথাস আলসার সৃষ্টি করতে পারে। ঢ) সিলিয়াক ডিজিজের ক্ষেত্রেও অ্যাপথাস আলসার হতে পারে।
পুষ্টি: বার বার অ্যাপথাস আলসারের ক্ষেত্রে জিংকের অভাবের যোগসূত্র থাকতে পারে। এক্ষেত্রে জিংক সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
চিকিৎসা:
*মশলাযুক্ত খাবার গ্রহণ কমাতে হবে।
*কসমেটিক মাউথ ওয়াশ অর্থাৎ হালকা গরম পানি ও লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে।
*ভিটামিন বি১২ দেওয়া যেতে পারে।
*অ্যামলেক্সানকস্ ওরাল পেস্ট অ্যাপথাস আলসার সারাতে সাহায্য করে এবং ব্যথা কমায়।
তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে ভাইরাসের কারণেও মুখে কিছু আলসার দেখা যায় যা দেখতে অ্যাপথাস আলসারের মত দেখা যায়। তাই যে কোন ঘাঁ বা আলসার হলেই তাকে অ্যাপথাস আলসার হিসেবে ধরে নেয়া ঠিক নয়। সঠিক পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করতে হবে। তবেই আলসার এর সঠিক চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব।
-ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল: ০১৮১৭-৫২১৮৯৭
ই-মেইল: [email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।