২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
বাংলা নাম তুলসি হলেও সংস্কৃত নাম তুলসী চবা সুরমা। ইংরেজরা তুলসীকে চেনেন Basil Plant নামে। আমরা যারা গ্রামে কিংবা শহরে বসবাস করি সকলেই খুব ভালভাবে এই তুলসী গাছ চেনেন। কোন কোন মুসলমান মনে করেন এই গাছ শুধুমাত্র হিন্দুদের উপাসনার বস্তু। তা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। এ গাছ থেকে আমরা অনায়াসে কিছু উপকরণ তৈরি করতে পারি যা কঠিন রোগের ঔষধ। অত্যন্ত সুগন্ধি তুলসি, সাদা পাতার বাবুই, কালো রঙের কৃষ্ণ তুলসি, বড় পাতার রাম তুলসি; এই চার ধরণের তুলসি হয়। তুলসির গাছ তিন থেকে চার ফুট লম্বা হয়। এই গাছের পাতা কিংবা গাছটি কিভাবে উপকারে আসবে তা বনোষধির মধ্যে তুলসি পাতা সর্বোকৃষ্ট বলে স্বীকার করা হয়েছে। মেটেরিয়া মিডিকাতে এ গাছকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়া হয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে তুলসীর প্রয়োগ :
* সর্দি ও দীর্ঘদিনের খুসখুসে কাশিতে কিছু তুলসি পাতা গরম পানিতে জ্বাল দিয়ে নির্যাস বের করে নিয়ে সামান্য আদা ও মধু দিয়ে খেলে সর্দি-কাশি ও জ্বর ভালো হয়। তুলসির এই নির্যাস খেতে হবে পাঁচ থেকে সাত দিন তিন বেলা করে। শিশু সর্দি কাশিতে চার থেকে দশ ফোঁটা তুলসি পাতার রসের সঙ্গে তিন থেকে পাঁঁচ ফোটা মধু মিশিয়ে তিন বেলা খাওয়ালে সর্দি কাশি দুই তিন দিনের মধ্যে ভালো হয়।
* ব্রংকাইটিস ও ডাইরিয়াতে ভালো ফল দেয় তুলসি। গরমে কেউ না ঘামলে ঘাম ঝরাতে ভূমিকা রাখে তুলসি। এসব ক্ষেত্রে তুলসির পাতা প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচটি খেতে হবে কয়েক সপ্তাহ ধরে। তুলসির কাঁচা পাতার রস বা বিচির থেতলানের পর রস কিছুটা গরম করে চুলকানি সহ বিভিন্ন চর্ম রোগে লাগালে ভালো হয়।
* বছরের প্রতিদিন খেলে কোন প্রকারের-রোগ হবে না
* গোসল করার আগে তুলসীর কিছু পাতা পানিতে দিয়ে সেই পানি দ্বারা গোসল করলে কোন প্রকার চর্মরোগ হয় না
* তুলসী পাতা চিবালে দাঁতে পোকা লাগে না। দাঁত মজবুত ও উজ্জ্বল হয় ও দাঁতের আয়ু বৃদ্ধি পায়।
* সাবান, তেল, ক্রিম প্রভৃতির স্থলে তুলসীর রস ব্যবহার করলে নানা প্রকার দৈহিক সুস্থ্যতা লাভ হয়।
* চোখ উঠা একটি সংক্রামক রোগ । ঠান্ডা ও গরমে ঘোরাফেরার ফলে এ রোগ হয়ে থাকে। এ অবস্থায় তুলসী পাতার রস চোখে কাজলের মতো করে লাগালে বা তুলসী পাতার রসের সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে চোখে দিলে চোখ উঠা রোগ বা পানি পড়া রোগের আরোগ্য লাভ হয়। কুষ্ঠ রোগ হলে তুলসী পাতার রস সেবন করলে আরোগ্য লাভ হয়। শ্বেত রোগে কিছু পরিমাণ তুলসী পাতা সকাল, দুপুর ও বিকেলে চিবিয়ে খেলে এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ হয়। তুলসী গাছের মূলের রস দাগের উপর প্রলোপ দিলে দাগ সেরে যায় ।
* গর্ভরক্ষা: গর্ভাশয়ের সমস্যায় গর্ভপাত হলে তুলসীর বীজ ২৫ গ্রাম পেষন করে খেলে উপকার হয়।
* জন্ডিস একটি পরিচিত রোগের নাম। এ রোগে তুলসীর রস ১০ গ্রাম এবং ৫০ গ্রাম তুলসী গাছের মূলের রস একত্রে মিশিয়ে খেলে আরোগ্য লাভ হয়। একমাস পর্যন্ত সেবন করতে হবে। দিনে ৩ বার । এতে দেহে রক্তস্বল্পতা ও হলদে বর্ণ দূর হয়।
* অন্ডকোষ টনটন করলে চার তোলা পরিমান তুলসি পাতার রসের সাথে একই পরিমান মিছরির গুড়ো মিশিয়ে খেলে যন্ত্রণা কমে। ঘনঘন প্রস্রাব হলে আধা ইঞ্চি লম্বা তুলসির শিকড় কেটে পানের সাথে খেলে ক’দিনেই সুফল পাওয়া যায়। শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে কিংবা পোড়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তুলসি পাতার রস দিয়ে লেপে দিলে সাথে সাথে জ্বালা যন্ত্রণা কমে।
-ডাঃ মাওঃ লোকমান হেকিম
চিকিৎসক, কলামিষ্ট
মোবা: ০১৭১৬২৭০১২০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।