Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই মেয়ের জন্য বিপুল সম্পত্তি রেখে গেলেন শ্রীদেবী

| প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:৩৩ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর এখন সকলে তার দুই মেয়ের সম্পত্তি পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। বলিউড তারকাদের যেসব ছেলেমেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনসেশন তাদের মধ্যে অন্যতম শ্রীদেবীর দুই মেয়ে জাহ্নবি কাপুর ও খুশি কাপুর। দুবাইয়ে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে শনিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিক মৃত্যু হয় শ্রীদেবীর। হিন্দি ছাড়াও তামিল, তেলেগু, মালয়ালাম, কানাডাসহ অনেক ভাষার ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। নিজের সময়ে একসময় তিনি ছিলেন ‘হায়েস্ট পেড’ অভিনেত্রী। তাকে বলা হতো নায়িকাদের মধ্যে ‘অমিতাভ বচ্চন’।
সুতরাং বলাই যায়, তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ কিন্তু আকাশছোঁয়া! স্বামী বনি কাপুর ও শ্রীদেবীর সম্পত্তির পরিমাণ ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। টাকার হিসেবে যার পরিমাণ ২১০ কোটি টাকা। শ্রীদেবী নিজে যেমন ডাকসাইটে অভিনেত্রী হিসেবে তিন দশক চুটিয়ে রাজত্ব করেছেন, তেমনই বনি কাপুর বলিউডের বিখ্যাত প্রযোজক। দু’জনের সম্পত্তি তাই এমন বিপুল হওয়া আশ্চর্যের কিছু নয়। এত সম্পত্তি স্বাভাবিকভাবেই পাবেন মেয়েরা, কিন্তু সেই সম্পত্তি কোনোদিন মায়ের অভাব পূরণ করতে পারবে না। তবে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে এখনো কোনো কথা বলেননি তার দুই মেয়ে জাহ্নবি ও খুশি কাপুর।
উল্লেখ্য, বলিউডে শ্রীদেবীর অভিষেক হয় ‘সোলা শাওন’-এর মাধ্যমে ১৯৭৯ সালে। ২০১৩ সালে চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী পেয়েছেন তিনি। চাঁদনি, লামহে, মিস্টার ইন্ডিয়া, নাগিনসহ ৯০ দশকের একের পর এক সুপারহিট চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রীদেবী। অভিনয় থকে অবসর নিয়েছিলেন ১৯৯৬ সালে। পরে ২০১২ সালে ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ ছবির মধ্য দিয়ে বলিউডে প্রত্যাবর্তন করেন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মম’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
নায়কেরাই মøান হয়ে যেতেন
বছরটা ১৯৮৯। পরপর ছবি আসছে দু’জনের। ‘চালবাজ’-এর পরে সানি দেওল বলেই দিলেন, শ্রীদেবীর সঙ্গে আর কাজ করবেন না। কারণ ছবিতে শ্রীদেবী থাকলে নায়কের কিছু করার থাকে না। শ্রীদেবী নিজে আবার তখন অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ছবির প্রস্তাব ফেরাচ্ছেন। কারণ, শোভাবর্ধক উপগ্রহ হয়ে থাকায় তার উৎসাহ নেই। আটের দশকের সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞীর তখনও পর্যন্ত একসঙ্গে মাত্র দু’টো ছবি, ‘ইনকিলাব’ আর ‘আখরি রাস্তা’।
দু’টো ঘটনাই বলে দেয়, শ্রীদেবীর বিপ্লবটা ঠিক কোথায়। ছবিপিছু টাকার অঙ্কে অমিতাভর পরেই তিনি। এমনিতে মুখচোরা, ক্যামেরা চালু হলেই বিদ্যুৎলতা! ফ্রেমে থাকলে চোখ ফেরানো অসম্ভব।
‘মিস্টার ইন্ডিয়া’য় ‘কাটে নহী কাটতে ইয়ে দিন ইয়ে রাত’ গানটার শ্যুটিং আজও মনে রেখেছেন কলাকুশলীরা। শ্রীদেবী আসলে বরাবর চ্যালেঞ্জের মুখেই জ্বলে উঠেছেন সবচেয়ে বেশি। হিন্দি ছবি নায়িকা হিসেবে তাঁকে প্রথম পায় ‘সোলওয়া সাওন’-এ (১৯৭৯)। চলেনি সেটা। হিন্দি উচ্চারণ নিয়েও কথা ওঠে। শ্রী কিছু দিন সরে থাকলেন দক্ষিণে। চার বছর পরে যখন ফিরলেন, বলিউড শাসন করে তবে ছাড়লেন।
চার বছর বয়স থেকে ছবি করছেন। ক্যামেরার সামনেই বেশি স্বচ্ছন্দ যেন। প্রথম ছবি, ‘থুনাইভান’ (১৯৬৭) থেকেই ‘বেবি শ্রীদেবী’ হিট। সাতের দশকের মাঝামাঝি অবধি শিশু অভিনেত্রী হিসেবেই পরপর ছবি করে গিয়েছেন। হিন্দি ছবিও তাঁকে প্রথম বালিকা চেহারাতেই দেখে। ১৯৭৫ সালের ‘জুলি’ ছবিতে নায়িকা ল²ীর বোন সেজেছিলেন শ্রী। পরের বছর মাত্র ১৩ বছর বয়সে নায়িকা। বিখ্যাত তামিল পরিচালক কে বালচন্দ্রের ছবি ‘মুন্দ্রæ মুদিচু’ (১৯৭৬)। সঙ্গে কমল হাসন আর রজনীকান্ত। গায়ত্রী, ১৬ ভায়াথিনিলে, সিগাপ্পু রোজাক্কালÍ কখনও কমল, কখনও রজনীর সঙ্গে শুরু হল শ্রী-র পরপর হিটের পালা। দক্ষিণের অধিকাংশ বড় নায়কের সঙ্গেই কাজ করেছেন। শ্রী-র ছবির সংখ্যা হিন্দিতে ৭২, তেলুগুতে ৮২, তামিল ৭২, কন্নড় ৬, মালয়ালমে ২৬টি। বলিউডে প্রথম দিকে তাঁর সবচেয়ে পয়া নায়ক ছিলেন জিতেন্দ্র। পরপর দক্ষিণি ছবির রিমেক হচ্ছিল, জিতেন্দ্র-শ্রী জুটি কাজ করছিলেন চুটিয়ে। হিন্দি সংলাপ ডাব করে নিতেন গোড়ার দিকে, রেখাও মাঝে মাঝে গলায় দিয়েছেন শ্রী-র জন্য। পরে আর সেটা দরকার হয়নি। তবে হিম্মতওয়ালা, জাস্টিস চৌধুরি, মাওয়ালি, তোফা-র দর্শক শ্রী-কে মূলত লাস্যময়ী হিসেবেই চিনতেন। দক্ষিণের সিল্কস্মিতার মতো শ্রীদেবীকে বলিউডের ‘থান্ডার থাই’ বলা শুরু হয়েছিল। কিন্তু শ্রী যে কত বড় অভিনেত্রী, জানার সুযোগ ঘটল ‘সদমা’য় (১৯৮৩)। কমল এ দিনও লিখেছেন, ‘‘সদমা-র ঘুমপাড়ানি গানটা আজও ভুলতে পারি না!’’
১৯৮৬-’৮৭ থেকে শ্রীদেবী পুরোপুরি অভিনয়প্রধান চরিত্রে মন দেওয়া শুরু করলেন। ‘ঘর সংসার’, ‘সুহাগন’, ‘নাগিনা’র পরেই এল ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’। হিন্দি ছবি নৃত্যপটীয়সী অনেক দেখেছে। কিন্তু নাচের সঙ্গে কমেডিকে এ ভাবে মিশতে দেখেনি। শ্রীদেবীর তৈরি করা সেই রাস্তা ধরেই পরে মাধুরী দীক্ষিত হেঁটে যাবেন। চালবাজ, চাঁদনী, লমহে, খুদা গাওয়া শুধু শ্রী-র প্রতিভার দীপ্তি ছড়াবে না, বলিউডে নায়িকাদের কাজের পরিধিই বাড়িয়ে দিয়ে যাবে। মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্পর্কের ঝড়, বনি কাপুরকে বিয়ে নিয়ে টানাপড়েন, জীবনে উথালপাথাল যতই থাক, ‘অ্যাকশন’ শব্দটা শুনলেই শ্রী অন্য মানুষ!
হালফিলে হিন্দি ছবির গড়ন অনেক পাল্টে গিয়েছে। সেখানেও ১৫ বছর পরে আবার চ্যালেঞ্জ নিয়ে জ্বলে ওঠা। ‘ইংলিশ ভিংলিশ’। ‘মম’ও পছন্দ করেছিলেন দর্শক। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘জিরো’-র কাজ শেষ হয়েছিল। লম্বা ইনিংসের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন শ্রী। এক নিমেষে স্তব্ধ হয়ে গেল সব। সূত্র : ওয়েবসাইট



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ