পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার ও নিষ্পত্তি দুই-ই বেড়েছে। এ সময় আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে এলসি খোলা বেড়েছে প্রায় ৭৫ শতাংশ; আর নিষ্পত্তি বেড়েছে নয় শতাংশ। এ সময় খাদ্যপণ্য, মূলধনী যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল ও জ্বালানি তেলের এলসি খোলা বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি এলসি বেড়েছে খাদ্যপণ্যের। এর পরিমাণ রেকর্ড ২১২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে আকস্মিক বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে চাল আমদানিতে শুল্ক হ্রাস ও শূন্য মার্জিন এলসি সুবিধা প্রদান করায় বেসরকারি পর্যায়ে এ পণ্যটির আমদানি অনেক বেড়েছে। একই সময় গম আমদানিও বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর এ ছয় মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে এলসি খোলা হয়েছে চার হাজার ২৩ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল দুই হাজার ৩০২ কোটি ২৮ লাখ ডলার। ফলে এলসি খোলায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অন্যদিকে এ সময় বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়েছে দুই হাজার ৪৬৬ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল দুই হাজার ২৫৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। ফলে এলসি খোলায় নিষ্পত্তি হয়েছে নয় দশমিক ১৭ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময় খাদ্যপণ্যের মধ্যে চাল ও গমের আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ২৪৪ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল মাত্র ৭৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়েছে ২১২ দশমিক সাত শতাংশ। এ সময় খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি বেড়েছে ১৬৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ এ পণ্যগুলোর এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১৫৩ কোটি ২২ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল মাত্র ৫৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে খাদ্যপণ্যের এলসি খোলা বেড়েছিল মাত্র ২১ দশমিক ২৭ শতাংশ। এছাড়া একই সময় এ পণ্যগুলোর এলসি নিষ্পত্তি কমেছিল প্রায় সাত শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৩২৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল ২৪৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। সে হিসাবে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। তবে এ সময় মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি কমে গেছে প্রায় ১২ শতাংশ। অথচ গেল অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এ পণ্যটির এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছিল রেকর্ড প্রায় ৭০ শতাংশ। প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ সময় পেট্রোলিয়াম তথা জ্বালানি তেল আমদানির ঋণপত্র খোলা ২৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৬১ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল ১২৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। এ সময় পণ্যটির এলসি নিষ্পত্তি ২০ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৩৯ কোটি ১২ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল ১১৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে শিল্পের কাঁচামালের আমদানি ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৯৫। এ সময় শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৯২৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮০৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। আর এ সময় মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৬৮ কোটি ১৭ লাখ ডলার, যা গেল অর্থবছরের একই সময় ছিল ৮০২ কোটি ২৩ লাখ ডলার। এছাড়া এ সময় অন্যান্য পণ্য আমদানির এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছে ১২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ ও পাঁচ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।