পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) এর বড় সাহেবজাদা বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাবেক আমীরে শরীয়ত, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর, ইসলামী আন্দোলনের সিপাহসালার মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ (৭৬) গতকাল শুক্রবার সকাল ৭ টা ২৫ মিনিটে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন । মৃত্যূকালে তিনি ২ স্ত্রী, ৯ ছেলে ও ৮ মেয়েসহ অসংখ্য ভক্ত-মুরীদ ও গুণ-গ্রাহী রেখে গেছেন। উল্লেখ্য, পরপর কয়েকবার ব্রেন স্টোক করে এবং ডায়বেটিকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালের মার্চ মাস থেকে গুরুতর অসুস্থ ছিলেন তিনি। গতকাল বাদ আসর কামরাঙ্গীর চরস্থ জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ায় মরহুমের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন তাঁরই ছোট ভাই হাফেজ্জী হুজুরের ছোট সাহেবজাদা বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ। জানাজায় হাজার হাজার মুসল্লি’র ঢল নামে। এক পর্যায়ে তা জনসমূদ্রে রূপ নেয়। জানাযা নামায শেষে জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ার দক্ষিণ পাশর্^স্থ নিজ পিতা কুতুবে আলম হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) ও আপন ছোট ভাই মরহুম মাওলানা হামিদুল্লাহর পাশে তাকে দাফন করা হয়। পিতার লাশ দাফন করেন মাওলানা ওলীউল্লাহ, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ আশরাফ, মাওলানা রহমতুল্লাহ সানীসহ তাঁর পরিজনবৃন্দ। নামাজে জানাজায় দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামগণ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামসহ ঢাকার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-খতিব ও মাদরাসার শিক্ষক-ছাত্রবৃন্দ অংশ নেন।
জানাযার পূর্বে মরহুমের জীবনের উপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মধুপুর পীর ছাহেব মাওলানা আব্দুল হামীদ, খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মাদ ইসহাক ও মহাসচিব আহমাদ আব্দুল কাদের, চরমোনাই পীর ছাহেবের খলিফা ও ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়াল ও ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর সাহেবজাদা মাওলানা আনাস মাদানী, ইসলামী ঐক্যজোট একাংশের চেয়ারম্যান মুফতী ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতী জাফর আহমাদ ঢালকানগর, শাইখুল হাদিস আজিম উদ্দিন, হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)-এর জামাতা মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, উলামা-মাশায়েখ পরিষদের নেতা ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, মুফতী রেজাউল করীম, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী ও ইসলামী ঐক্যজোট একাংশ (এড.রকীব) এর নেতা মাওলানা শওকত আমিন।
মরহুমের নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, নেজামে ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, খেলাফতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী, ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব মোস্তফা তারেকুল হাসমান ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন, খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, খেলাফত আন্দোলনের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক প্রবীন নেতা আলহাজ আব্দুল মালেক চৌধুরী, মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা মাওলানা আবুল কাসেম, বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি আলহাজ জালাল উদ্দিন বকুল, খেলাফত আন্দোলনের সাবেক মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, ইসলামী ঐক্যজোট একাংশের নেতা মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা মাসুদুর রহমান বিক্রমপুরী। পরিচালনা করেন খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা সূলতান মহিউদ্দীন।
মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ ভারত উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গ হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) এর জীর্ণ কুটিরে ১৯৪২ সালে লালবাগ কিল্লার মোড়ে জন্মগ্রহণ করেন । ইসলামী আন্দোলনের দুঃসাহসী এই সিপাহসালার সকল প্রকার জুলুম-নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার, ইসলাম ও দেশবিরোধী যে কোন তৎপরতার বিরুদ্ধে সর্বদা প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিলেন। মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদা রক্ষায়, ভন্ড নবী দাবীদার কাদিয়ানী, দেওয়ানবাগী, নাস্তিক-মুরতাদ, তাসলিমা নাসরিন ও আহমাদ শরীফ সহ সকল মুরতাদ ও বাতিলদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সর্বাগ্রে হক কথা বলতে ভয় ও সংকোচ করতেন না তিনি। ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা, দেশপ্রেম ও গণমানুষের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অধিকাংশ সময় তঁাঁর কেটেছে আন্দোলন-সংগ্রামে। ১৯৬৩ সালে হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর নির্দেশে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রধান মুয়াজ্জিন হিসেবে যোগদান করেন। অন্যায়ভাবে তাকে এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করার কিছু দিন পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে উদ্যোগী হয়ে তাকে উক্ত দায়িত্বে পুনর্বহাল করেন। মরহুম মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফের ইন্তেকালে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। যেসব নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন তারা হচ্ছেন, খেলাফতে ইসলামীর আমীর ও ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি বদরুদদ্দোজা সুজা ও মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের।
ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ, খেলাফতে ইসলামী’র মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, হাজী শরীয়াত উল্লাহ তাহফিজ আল-কুরআনুল কারীম মাদরাসার মুতাওয়াল্লী মো: শামসুল ইসলাম ও মোহতামীম মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতা শেখ গোলাম আসগর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।