পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর বদলে যাওয়া বিএনপিকেই দেখছেন দলের নেতাকর্মীরা। মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে শান্তিপূর্ণ অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নেতারা। ভাঙনের শঙ্কাও উবে গেছে দল থেকে। সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সকলে মিলে। বাস্তবায়নও হচ্ছে সবার অংশগ্রহণেই। শীর্ষ নেতা, বুদ্ধিজীবী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি, পেশাজীবীসহ সকল পর্যায়ের নেতাদের সাথে বৈঠক করে নির্ধারণ হচ্ছে কৌশল ও করণীয়। নির্দেশনা দিচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সরাসরিই খোঁজখবর রাখছেন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাদেরও। দলের বর্তমান এই সংকটময় পরিস্থিতিই ঐক্যবদ্ধ করেছে বিএনপিকে। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দলটিতে এই মুহূর্তে মতবিরোধ কম। পাশাপাশি সমূহ বিপদের আশঙ্কায় নেতায় নেতায় কমে গেছে দ্ব›দ্ব-বিরোধ। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে।
জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার আগে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ ছিল। ছিল পারস্পরিক দ্ব›দ্বও। চাওয়া-পাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময় একে অন্যের বিরুদ্ধে কথাও বলেছেন অনেক নেতা। দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথেও যোগাযোগ কম ছিল সিনিয়র নেতাদের। পাশাপাশি আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যেও ছিল বিরোধ। দলের চেয়ে বিভিন্ন নেতারই প্রাধান্য ছিল বেশি। তবে গত ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদÐ দিয়ে জেলে পাঠানোর পর থেকেই বদলে গেছে বিএনপি। আন্দোলনে এসেছে পরিবর্তন। নেতাকর্মীরা হয়ে ওঠেছেন ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার আগে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের যে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন সেটিই পুঙ্খনুপুঙ্খ অনুসরণ করছেন নেতারা। সার্বিক বিষয়ে সব সময়ই যোগাযোগ রক্ষা করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে। কর্মসূচি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন হচ্ছে তার নির্দেশে। আর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কৌশল নির্ধারণ করছেন দলের সিনিয়র সব নেতা একসাথে বসে। পরামর্শ নিচ্ছেন তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতাদের সম্পৃক্ত করে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দলের মধ্যে একেক জনের একেক রকম মত থাকতেই পারে। তবে দেশ ও দলীয় স্বার্থে সকলেই একমত থাকে। বিএনপিতেও তাই। আর এখন বিএনপিতে অনৈক্যের বিষয়টি আসলে প্রচারণা। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগারে নিয়ে সরকার মনে করেছে আমাদের দুর্বল করবে। কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীরা বুঝতে পেরেছে তারা ঐক্যবদ্ধ না থাকলে বিপদ কাউকে ছাড়বে না। ফলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় বিএনপি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ইস্পাত কঠিন ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে দলের মধ্যে।
বিএনপিকে ভাঙার এবং বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পরিস্থিতিই বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়ে সরকার শুধু বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধই দেখেছে তা নয়, খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়ে তার ভাবমূর্তি পাল্টে দিয়েছে। তাকে দেশনেত্রী থেকে দেশ মাতায় পরিণত করেছে। জাতীয় নেত্রী থেকে আন্তর্জাতিক নেত্রী বানিয়ে দিয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়াকে জেলে নেওয়া হবে এমন সম্ভাবনা তৈরির পর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয় ছিল কোন নেতাকর্মী বেঈমানী করে কিনা। সরকারের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে দল থেকে বেরিয়ে যায় কিনা। বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের অতি প্রচারণার কারণে দলের মধ্যে একে অপরকে সন্দেহও করছিলেন। তবে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে নেতারা ছোটখাট স্বার্থ, মনোমালিন্য ও ক্ষোভের জায়গা থেকে সরে এসে ঐক্যবদ্ধ হতে বাধ্য হয়েছে। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে, একত্র হয়ে না দাঁড়ালে বিএনপির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। ফলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা বা অনৈক্য কমে গেছে। তারেক রহমান এবং সিনিয়র নেতারাও বুঝতে পেরেছেন, আগে দল বাঁচাতে হবে। তাই ভোদাভেদ ভুলে সবাই তৎপর হয়েছেন। তবে এখনো দুঃসময় শেষ হয়ে যায়নি বলে মনে করেন দলের নেতারা। তারা বলেন, সরকার সব সময় ফাঁদ পেতে রাখবে। যে কোনভাবে বিএনপির ঐক্য ভাঙার চেষ্টা করবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যই এখন দলের সবচেয়ে বড় শক্তি বলে মনে করেন তারা।
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার মনে করেছিল খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠালে বিএনপি ভেঙে যাবে। তাদের সে আশায় গুড়েবালি হয়েছে। মাঠে বিএনপির কর্মীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। নেতারা এখন ইস্পাত কঠিন ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর সাথে সাথেই দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তার নেতৃত্বে বিএনপি পরিচালিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিএনপির একটা লাভই হয়েছে। আগামী দিনে বিএনপি কেমন হবে তার একটা পরীক্ষা হয়ে গেল।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্বে বিএনপি আরও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।ভাঙাভাঙির কথা বলে লাভ নেই। বিএনপিকে ১০ বছরে কেউ ভাঙতে পারেনি, এখনো পারবে নাকি? এখন তো যুদ্ধের সময়। বিপদের সময় আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।