মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রোহিঙ্গা সঙ্কট মিয়ানমার বাহিনীর দীর্ঘদিনের বিদ্বেষমূলক প্রচারণার ফল -অ্যামনেস্টি
ইনকিলাব ডেস্ক : রোহিঙ্গা নিপীড়নে দায়ী মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউ। দুই কূটনীতিকের বরাত দিয়ে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, তাদের নামের একটি তালিকা করতে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধানকে অনুরোধ জানানো হবে আগামী সপ্তাহে। এতে আরো বলা হয়েছে, মিয়ানমারের জেনারেলদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি বা তাদের সম্পদ জব্দের পদক্ষেপ নেয়া হলে তা হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোরতম পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা এর আগে রোহিঙ্গা নিপীড়নে জড়িত মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ফেলে যাওয়া ঘরবাড়ি-সবজি ক্ষেত বুলডোজারসহ ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে মিয়ানমার সরকার। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে গতকাল শুক্রবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ তথ্য জানিয়েছে। রোহিঙ্গাদের এসব গ্রাম অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ হিসেবে জাতিসংঘের তদন্ত দল সেখানে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগে জাতিসংঘ ও মিয়ানমারের দাতা গোষ্ঠীদের প্রতি আহŸানও জানিয়েছে সংস্থাটি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমার সরকার পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের কমপক্ষে ৫৫টি গ্রামের বাড়িঘর, ক্ষেত ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ওই বছরের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা নিধনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে ৩৬২ গ্রামে অভিযান চালিয়ে সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করেছিল এই গ্রামগুলো তারই অংশ ছিল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, ধ্বংস করা এসব গ্রামের মধ্যে দুদিন আগেও সম্পূর্ণ অক্ষত ছিল। এগুলো বসবাসেরও উপযুক্ত ছিল। অগ্নিসংযোগ করে ১০টি গ্রামের কিছু বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল বৌদ্ধ চরমপন্থি ও সেনারা। এই গ্রামগুলোর সব বাড়িঘরও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেছেন, ‘এসব গ্রামের অনেকগুলো ছিল রোহিঙ্গা নির্যাতনের দৃশ্যপট এবং এই নিপীড়নের সঠিক মূল্যায়ন ও দোষীদের চিহ্নিত করতে জাতিসংঘের নিয়োগ করা বিশেষজ্ঞ দল সেখানে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এগুলো সংরক্ষণ করা উচিত। এই এলাকাগুলো বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার এবং তাদের সেখানে বাস করার বৈধ দাবিকে নস্যাৎ করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে, মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিনের বিদ্বেষমূলক প্রচারণাই চলমান সঙ্কটের কারণ। গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে ১৫৯টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংস্থাটির ২০১৭-১৮ সালের প্রতিবেদন প্রকাশ করে একথা জানায়। নিজেদের অনুসন্ধানের বরাত অ্যামনেস্টি বলছে, বিশ্বনেতাদের ছড়িয়ে দেওয়া ঘৃণা ও রাজনৈতিক মতাদর্শ সিরিয়া ও মিয়ানমারে সংখ্যালঘু নির্যাতন উস্কে দিয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের পাশাপাশি ইরাক, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেনেও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ না হওয়ায় বিশ্বনেতাদের দায়ী করে অ্যামনেস্টির মহাসচিব সলিল শেঠী বলেন, ঘৃণা ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের বলিরপাঁঠা বানিয়ে জাতিগত নিধন চালানো হয়েছে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দুই কূটনীতিকের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য শিগগিরই মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের তালিকা প্রকাশ করবেন ইইউর বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মোগেরিনি। রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।