Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাগুরায় কর্মসংস্থান প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সাইদুর রহমান মাগুরা থেকে: মাগুরা সদর উপজেলার বগিয়া ইউনিয়নে হতদরিদ্রের কর্মসংস্থান কর্মসূচি ৪০দিনের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিদিন ৫৯ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে ২০ থেকে ২৩ জন শ্রমিক দিয়ে কোন রকম দায়সারা মত কাজ করা হচ্ছে। জানা গেছে, সরকার অতিদরিদ্রের কর্মসস্থান কর্মসূচির আওতায় গ্রামীন উন্নয়ন অবকাঠামোর মাধ্যমে ৪০দিনের কাজ বাস্তবায়ন করে। এতে প্রত্যেক শ্রমিকের একদিনের কাজের মুজরী মাথাপিচু ২শ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়। সপ্তাহে ৬দিনে প্রত্যহ ৫০ থেকে ৬০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও তা না করে প্রত্যেকটি পিআইসি যেমন খুশি তেমন করে ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে একদিকে সরকারের উন্নয়নের কাজ যেমন ব্যহত হচ্ছে। তেমনই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের কোটি কোটি টাকা জলাঞ্জলি যাচ্ছে। এ নিয়ে সরকার গ্রামীন জনপদে উন্নয়ন অবকাঠামো বাস্তবায়ন করতে কয়েক দফা ৪০দিনের কাজ বরাদ্ধ দিলে কতিপয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি গ্রামের হতদরিদ্র শ্রমিকদেরকে দিয়ে ৪০ দিনে নিয়মিত কাজ না করিয়ে তাদের নামে লাখ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, এসব কাজের সাথে ব্যাংক কর্মকর্তারাও জড়িত রয়েছেন। নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক শ্রমিকের উপস্থিতে ব্যাংক থেকে স্বাক্ষর করিয়ে টাকা উত্তোলন করতে হবে। কিন্তু তা না করে পিআইসিরা ব্যাংকের সাথে গোপন সক্ষতা রেখে শ্রমিকের উপস্থিতি ছাড়ায় টাকা উত্তোলন করছেন এমন অভিযোগও রয়েছে। মাগুরা সদর উপজেলার বগিয়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া ৭ও ৮ নং ওয়ার্ডে গিয়ে কাজের তথ্য বোর্ড পাওয়া যায়নি। পরে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ৪০ দিনের কাজের কিছু স্থান পাওয়া যায়। এর মধ্যে জাহাঙ্গীর সরদারের বাড়ীর সামনের রাস্তা, আব্দুর রউফ বিশ্বাসের বাড়ীর সামনের রাস্তা, সত্তার শেখের দোকানের সামনে ও পাশের রাস্তা, বালিকা বিদ্যালয়ের ভিতর মাটি ভরাট, দাখিল মাদ্রাসার রাস্তাসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তায় গ্রামিন উন্নয়ন অবকাঠামোর কাজে প্রত্যহ যে পরিমাণ শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা,তা না করে কিছু শ্রমিক দিয়ে কোন রকম দায়সারামত কাজ করতে দেখা যায়। তবে কোন রাস্তায় গিয়ে কাজের তথ্য বোর্ড পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে পুকুরিয়া গ্রামের নারী শ্রমিক শাহানাসহ আরো অনেকেই জানান, প্রতিদিন কতজন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা তারা জানেনা তবে পুকুরিয়া ৭ও ৮নং ওয়ার্ডের পিআইসি আব্দুর রউফ ও খলিলুর রহমান প্রতিদিন ২৩জন করে শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। কাজের তথ্য বোর্ড কোথায় দেওয়া আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের তথ্য বোর্ড রউফ মেম্বর ও খলিলুর রহমান মেম্বর উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এব্যাপারে পুকুরিয়া ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমঙ্গীর সরদার জানান,৪০ দিনের কাজ শেষ না করেই কাজের পিআইাসিরা তথ্য বোর্ড উঠিয়ে নিয়েছে। এ ব্যাপারে মাগুরা সদর উপজেলার ৪০দিনের কাজের তদারকীর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারি ইঞ্জিনিয়র রেজাউল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তদারকীর দায়িত্ব সে সঠিক ভাবে পালন করছে। ঐ ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার সমাজ সেবা অফিসার জাহিদুল আলমের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ৪০ দিনের কাজে পিআইসিরা যে কয়জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করবে ঠিক সেই কয়জন শ্রমিকের বিল দেওয়া হবে। এব্যাপারে জেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, পিআইসরা যে কয়জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করছেন ঠিক সেই কয়জনের বিল দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে কোন পিআইসি বিল উত্তোলন করতে পারবে না। কাজ শেষ না হতেই পিআইসিরা তথ্য বোর্ড সরিয়ে নিলো কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়তো যে স্থান থেকে তথ্য বোর্ড পিআইসিরা সরিয়েছেন সেখানের কাজ শেষ হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ