Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাতৃভাষা দিবসের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

| প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কক্সবাজার ব্যুরো: বসন্তের শুরুতে পর্যটকের ঢল নেমেছে কক্সবাজার সৈকতে। ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটিতে এখন লাখো পর্যটকের পদভারে মুখরিত পর্যটন শহর কক্সবাজার। সাথে আছে শুক্র-শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণী পেশার দেশী-বিদেশী পর্যটকে ভরপুর এখন কক্সবাজার। পর্যটন এলাকার ছোট-বড় অর্ধসহস্রাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজের কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে যাওয়ায় হোটেল মোটেল ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা দারুণ খুশী। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতায় বরাবরই কক্সবাজারের আইন শৃঙ্খলা স্থিতিশীল থাকায় ভ্রমণকারীরাও কক্সবাজার এসে খুশী।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সোলতানের মতে, শহরের আবাসিক হোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজ ও সরকারী রেস্ট হাউসে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের রাত যাপনের সুবিধা রয়েছে। তার মতে বছরের শুরুতে তারা যেমনটি আশা করেছিলেন এবারের পর্যটন মৌসুম ভাল যাবে। এ অবস্থা বছরের শেষ দিনগুলোতে এবং নতুন বছরের শুরুতে লাখো পর্যটকে মুখর রয়েছে কক্সবাজার।
এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে গতবছরের আগষ্ট মাস থেকে দেশে-বিদেশে নতুনভাবে পরিচিতি পেয়েছে কক্সবাজার। এতে করে শুধু ভ্রমণকারী নয় দেশী-বিদেশী ভি ভিআইপি, ভিআইপি, আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা ও কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়মিত যাতায়াতের স্থান এখন কক্সবাজার। এতে করে একদিকে বেড়েছে কক্সবাজারের গুরুত্ব, চাঙ্গা হয়েছে কক্সবাজারের অর্থনীতি। অপরদিকে স্থানীয়দের বেড়েছে নানা দূর্ভোগ ও ভোগান্তি।
কক্সবাজারের গুরত্ব বাড়ায় ঢাকার পরিবর্তে অনেক আন্তর্জাতিক সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে কক্সবাজারে। বেড়ানোর সুবাদে বড় বড় কোম্পানী গুলোর জিএম, এ জিএমও এখন হয়ে থাকে কক্সবাজারে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র জ্যেষ্ঠ সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, কাজের ভারে ঝিমিয়ে পড়া মানুষ একটু প্র্রশান্তির খোঁজে প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে ভিড় করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। এবছরও এর ব্যতিক্রম নয়। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সুত্রে জানাগেছে, বসন্তকালীন এই ছুটিতেও পর্যটকে টুইটুম্বুর হতে যাচ্ছে কক্সবাজার।
কক্সবাজারের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের পরিচালক সুত্রে জানাগেছে, একটি কোম্পানি বার্ষিক কনফারেন্স’র জন্য গত বছর থেকে হোটেলের ৭০ শতাংশ রুম বুকিং দিয়ে রেখেছিল। সৈকত পারের তারকা হোটেল কক্স টু ডে সুত্রে জানাগেছে, তাদের হোটেলে কোন কক্ষ খালি নেই। প্রায় একই অবস্থা কলাতলীর তারকা হোটেল সী-গাল, সাইমন বীচ রির্সোট, বেস্ট ওয়েস্টার্ন হেরিটেজ, লং বীচসহ তারাকা মানের হোটেলগুলোর অবস্থা একই বলে জানাগেছে। মাঝারি হোটেল গুলোতে রুম পাওয়ার তো কথাই নেই।
মৌসুমের শুরু থেকেই পর্যটক টানতে বিভিন্ন পর্যটন স্পট নিজ উদ্যোগে সাজান ব্যবসায়ীরা। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত, ইনানি, সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, সোনাদিয়া, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, কুদুম গুহাসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতেও নতুন সাজ রয়েছে পর্যটক আকর্ষণে। এবার পর্যটকদের জন্য কক্সবাজারে বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে শহরের ঝাউতলায় প্রতিষ্ঠিত রেডিয়েন্ট ওর্য়ালাড ফিস এর সী এ্যকুরিয়াম। এখানে রাত দিন লেগেই থাকে হাজারো পর্যটক।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্থায়ী বাসিন্দা সাংবাদিক ছিদ্দিকুর রহমান ও হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, ডিসেম্বরের শুরু থেকে প্রবালদ্বীপে পর্যটক আগমন বেড়েছে। মাতৃভাষা দিবসের ছুটিতেও পর্যটক বেড়েছে। প্রতি শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত এখানে পর্যটক সমাগম হয় বেশী।
এদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এইচ এম রায়হান কাজেমী। তিনি বলেন, আবাসিক হোটেলসমূহ সিসিটিভি ক্যমেরার আওতায় নেয়া হয়েছে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হোটেল মোটেল রেষ্টুরেন্ট গুলোতে গলাকাটা বাণিজ্যের কারণে নিয়মিত প্রতারিত হচ্ছেন পর্যটকরা। কক্সবাজারের ব্যবসায়ীদের এই মানসিকতা পরিহার করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন কয়েকজন পর্যটক। ঢাকা-কক্সবাজার পরিবহণ সংস্থা গুলোতে খবর নিয়ে জানাগেছে, বেশ আগে থেকেই ভ্রমণকারীরা অগ্রীম টিকেট বুক করে রেখেছে মাতৃভাষা দিবসের ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের মতে, পর্যটকদের হয়রানি বন্ধে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশনা দেয়া আছে। এসব তদারকিতে মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তার পরেও ব্যবসায়ীরা অনেক সময় এগুলো মানতে চায় না। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ