Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৃষ্টির মতো পড়ছে ক্ষেপণাস্ত্র ও মর্টার গোলা

মানবিক মূলনীতি সমুন্নত রাখার আহবান জানিয়ে সিরিয়ার পূর্ব গৌতা পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ

| প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ার বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত গৌতার পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর কয়েকদিনের টানা বোমাবর্ষণের পর সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ধারণাতীত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দেশটিতে জাতিসংঘের সমন্বয়ক পানোস মৌমজিস। ক্ষেপণাস্ত্র ও মর্টার গোলা পড়ছে বৃষ্টির মতো। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, রাজধানী দামেস্কের কাছের এ এলাকায় আসাদবাহিনীর গোলাবর্ষণ ‘চরম যন্ত্রণাদায়ক’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ দফার হামলায় বিদ্রোহীদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ওই এলাকাটিতে অন্তত আড়াইশ মানুষ নিহতের খবর পাওয়া গেছে। সিরীয় বাহিনীর দাবি, তারা পূর্ব গৌতাকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্ত করতে লড়ছে। অপরদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার বলেছেন, সিরিয়ার পূর্ব গৌতায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় তিনি ‘গভীরভাবে শঙ্কিত’। সেখানে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় দু’ শতাধিক লোক নিহত হওয়ার পর তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করলেন। খবরে বলা হয়, গুতেরেস বেসামরিক নাগরিক রক্ষাসহ মানবিক আইনের মূল নীতি সমুন্নত রাখতে সকল পক্ষের প্রতি আহবান জানান। জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফান দুজারিক বলেন, ‘পূর্ব গৌতায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ায় জাতিসংঘ মহাসচিব গভীরভাবে শঙ্কিত।’ বিবিসি বলছে, রুশ সমর্থিত সিরিয়ার সরকারপন্থি বাহিনী রোববার রাত থেকে বিদ্রোহীদের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি পূর্ব গৌতা পুনরুদ্ধারে তৎপরতা বাড়ায়। দামেস্কের কাছে পূর্ব গৌতাই বিদ্রোহীদের সর্বশেষ বড় ঘাঁটি। এখানকার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইসলামপন্থি দল জঈশ-ই-ইসলাম। আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট সাবেক জিহাদি জোট হায়াত তাহির আল-শামও এলাকাটিতে বেশ সক্রিয়। “নারী ও শিশুদের চিৎকার-কান্নার শব্দ তাদের বাড়ির জানালা দিয়ে শুনতে পাচ্ছি আমরা। ক্ষেপণাস্ত্র ও মর্টার পড়ছে যেন বৃষ্টির মতো। এই দুঃস্বপ্ন থেকে পালানোর জায়গা নেই, এটি শেষও হয় নি,” বলেন পূর্ব গৌতার অধিবাসী ফিরাস আব্দুল্লাহ। আসাদবাহিনীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত রাশিয়া ও ইরানের পাশাপাশি তুরস্কের অ্যাখ্যা দেওয়া এ ‘ডি-এস্কেলেশন জোনে’ ২০১৩-র রাসায়নিক হামলার পর এবারের বোমাবর্ষণকেই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বলছেন এলাকাটিতে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা।তারা জানান, সরকারি বাহিনীর হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৫০-রও বেশি; আহতের সংখ্যা প্রায় ১২০০। মানবাধিকার বিষয়ক সিরীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, মঙ্গলবার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব গৌতায় সিরিয়া ও রাশিয়ার ব্যাপক বিমান হামলায় কমপক্ষে ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৯ শিশু রয়েছে। সেখানে এরআগের দিন সোমবারের বিমান হামলায় সিরিয়ার ১২৭ নাগরিক নিহত হয়। দুজারিক বলেন, ‘পূর্ব গৌতায় বিমান হামলা ও গোলা বর্ষণের কারণে সেখানকার প্রায় চার লাখ লোক আতংকের মধ্যে রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর অবরোধের কারণে পূর্ব গৌতার বাসিন্দারা অপুষ্টিসহ চরম দূরাবস্থার মধ্যে বসবাস করছে।’ গুতেরেস স্মরণ করিয়ে দেন যে পূর্ব গৌতা রাশিয়া, ইরান, তুরস্ক ঘোষিত একটি অস্ত্রবিরতি অঞ্চল হিসেবে আখ্যায়িত। এ ব্যাপারে তিনি সকল পক্ষকে তাদের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি মনে করিয়ে দেন। এদিকে জরুরি মানবিক সাহায্য সরবরাহ ও চিকিৎসার সুযোগ দিতে ৩০ দিনের অস্ত্রবিরতি দাবির খসড়া প্রস্তাবের বিষয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার পূর্ব গৌতার আরও ১০টি শহর ও গ্রামে সরকারি বাহিনী নতুন করে বোমাবর্ষণ করেছে বলেও দাবি তাদের। মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে এবং আহতদের সরিয়ে নিতে এলাকাটিতে যুদ্ধবিরতির আহŸান জানিয়েছে জাতিসংঘ। মানুষের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই; তারা টিকে থাকার চেষ্টা করছে, কিন্তু অবরোধের কারণে সৃষ্ট ক্ষুধা তাদের আরও দুর্বল করে ফেলছে, ইউনিয়ন অব মেডিকেল কেয়ার অ্যান্ড রিলিফ অর্গানাইজেশনকে এমনটাই বলেন স্থানীয় এক চিকিৎসক। বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা, এএফপি।



 

Show all comments
  • রফিক ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৪:৩২ এএম says : 0
    জাতিসংঘের কাজ কী খালি উদ্বেগ প্রকাশ করা ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়া

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ